বিদেশ থেকে গত ১০ বছরে দেশে লাশ হয়ে ফিরেছেন ২৬ হাজার ৭৫২ জন নারী কর্মী। চলতি বছরের গত ৯ মাসেই দেশে ফিরেছে প্রায় ৩ হাজার নারী কর্মীর লাশ। এর কারণ হিসেবে সরকারের বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও অভিবাসী আইন যথাযথভাবে না মানাকেই দায়ী করছেন বক্তারা। খবর দৈনিক কালেরকণ্ঠের।
২৬ নভেম্বর সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ‘নারী শ্রমিক কণ্ঠ’ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন। অভিবাসী নারী শ্রমিকের নিরাপদ বিদেশ গমন ও নিরাপদ কর্মস্থল নিশ্চিত করার দাবিতে এ সংবাদ সম্মেলন করে সংগঠনটি।
লিখিত বক্তব্যে কর্মজীবী নারীর পরিচালক রাহেলা রব্বানী বলেন, উন্নত জীবনের আশায় সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে যাওয়া নারী অভিবাসী শ্রমিকরা প্রতিদিনই মারাত্মকভাবে শারীরিক, মানসিক এবং যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। কিন্তু এ বিষয়ে সরকারের পক্ষে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং সরকারের কোনো পর্যায় থেকে কোনো পদক্ষেপ দৃশ্যমান নয়। ফলে নারী শ্রমিকদের মৃত্যুর মিছিল শুরু হয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই দেশে ফিরছে অভিবাসী শ্রমিক নারীর মৃতদেহ। রাহেলা রব্বানী নারী অভিবাসী শ্রমিকদের মানবিক মর্যাদা ও অধিকার সুরক্ষায় ১৩টি দাবি তুলে ধরেন।
দাবিগুলো হচ্ছে : অভিবাসী শ্রমিক প্রেরণের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক নীতি অনুযায়ী সকল প্রকার সমঝোতা স্মারক ও চুক্তি মেনে অভিবাসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। নারী অভিবাসী শ্রমিকদের শারীরিক, মানসিক ও যৌন নির্যাতন প্রতিরোধে সরকার ও সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি সম্পাদন ও বাস্তবায়নে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।
প্রবাসে কর্মরত নারী শ্রমিকদের নিয়োগকর্তার নাম, কর্মস্থলের ঠিকানাসহ নারী শ্রমিকের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার তথ্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ ও অভিবাসী শ্রমিকের পরিবারকে তথ্য দিতে হেল্প ডেস্ক চালু করতে হবে।
প্রলোভন দেখানো রিক্রুটিং এজেন্টের লাইসেন্স বাতিলসহ তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অভিবাসী শ্রমিকদের মানবিক মর্যাদা ও অধিকার সুরক্ষায় ঘোষিত আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বাস্তবায়ন করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নারী শ্রমিক জোটের সভাপতি উম্মে হাসান ঝলমল, প্রগতিশীল গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কামরুন নাহার প্রমুখ।
বার্তা কক্ষ, ২৬ নভেম্বর ২০১৯