২০১৪ সালের ৮ অক্টোবর মৃত্যুবরণ করেন ভাষাসংগ্রামী আবদুল মতিন। তার জন্ম সিরাজগঞ্জের চৌহালীতে ৩ ডিসেম্বর ১৯২৬ সালে। তার বাবার নাম আবদুল জলিল ও মা আমেনা খাতুন। ১৯৩০ সালে তাদের ঘর যমুনা নদীর ভাঙনে পতিত হলে তার বাবা জীবিকার সন্ধানে ভারতের দার্জিলিংয়ে চলে যান।
সেখানে জালাপাহাড়ের ক্যান্টনমেন্টে সুপারভাইস স্টাফ হিসেবে চাকরি পান। ১৯৩২ সালে মতিন দার্জিলিংয়ের মহারানী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। ১৯৩৬ সালে দার্জিলিং গভর্নমেন্ট হাইস্কুলে তিনি পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি হন। ১৯৪৩ সালে এন্ট্রান্স পাস করেন। ১৯৪৫ সালে তিনি রাজশাহী সরকারি কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষের দিকে তিনি ব্রিটিশ আর্মির কমিশন র্যাংকে ভর্তি পরীক্ষা দেন এবং ফোর্ট উইলিয়াম থেকে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে কমিশন পান। তিনি কলকাতা থেকে বেঙ্গালুরুতে গিয়ে পৌঁছান। কিন্তু তত দিনে যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটলে তিনি দেশে ফিরে আসেন।
১৯৪৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাস কোর্সে ভর্তি হন এবং পরে মাস্টার্স করেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ থেকে। ১৯৫২ সালে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার আন্দোলনে তার নেতৃস্থানীয় ভূমিকা রয়েছে। তিনি ছিলেন শিক্ষার্থীদের সংগঠনের আহ্বায়ক। তার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সিদ্ধান্ত হয় ১৪৪ ধারা ভঙ্গের।
ভাষা আন্দোলনের পর তিনি ছাত্র ইউনিয়ন গঠনে ভূমিকা রাখেন এবং সংগঠনটির সভাপতি হন। পরে কমিউনিস্ট আন্দোলনে সক্রিয় হন। ১৯৯২ সালে তিনি বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি গঠনে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। পরে তিনি ওয়ার্কার্স পার্টি থেকে তিনি পদত্যাগ করেন।
২০০৯ সালে ওয়ার্কার্স পার্টি (পুনর্গঠিত) গঠিত হলে আবদুল মতিন আবার তাতে যোগ দেন। ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস ও তাৎপর্য নিয়ে তার একাধিক বই রয়েছে। রাষ্ট্রীয় একুশে পদকসহ নানা পুরস্কারে তিনি ভূষিত হয়েছেন। (দেশান্তর)
বার্তা কক্ষ, ৮ অক্টোবর ২০১৯
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur