চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট শাহরাস্তি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চলছে পানির জন্য হাহাকার। চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন চিকিৎসা সেবা নিতে আসা বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি রোগী ও স্বজনরা।
শুধু তাই নয় একই অবস্থা সেবা প্রদানকারী ডাক্তার, নার্স, ব্রাদার্স,আয়া বা পরিচ্ছন্ন কর্মীদের আবাসিক বিল্ডিং গুলোয়। পানির অপর নাম জীবন। জীবন বাঁচাতে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে এখন জীবনের ( পানি ) অভাবে জীবন যেন ওষ্ঠাগত। গত ছয় দিন যাবত পানি শূন্য শাহরাস্তি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টয়লেট ও গোসলখানা যেমন নোংরা তেমনি দূর্গন্ধ। সুস্থ মানুষ গুলো ও এখানে অসুস্থ হয়ে পড়ার উপক্রম।
এ ব্যাপারে
ভুক্তভোগীদের সাথে আলাপ কালে পুরুষ ওয়ার্ডের নং ১১ বেডের রোগী উপজেলার টামটা উঃ ইউনিয়নের ইছাপুরা গ্রামের মোঃ সুমন জানান, গত ৩ জুন মাথায় ১৬ টি সেলাই নিয়ে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। ঈদের পর দিন থেকে আজ পর্যন্ত হাসপাতালে পানি নেই । আজ ৬ দিন গোসল করতে পারছিনা। চাপকল থেকে বোতলে ভর্তি করে আনা পানি দিয়েই পান এবং শৌচকর্ম সম্পাদন করতে হচ্ছে। ফলে ঠিক ভাবে পানি ঢালতে না পারায় টয়লেট ও গোসলখানা থেকে ব্যাপক দূরগন্ধ ছড়াচ্ছে।
এ ব্যাপারে কর্তব্যরত নার্স বা ডাক্তারদের জানালে তারা ও একই সমস্যায় ভুগছেন বলে দাবি করেন। একই ওয়ার্ডের ৪ নং বেডের রোগী চিতোষি পূর্ব ইউনিয়নের বড়তুলা গ্রামের আবদুল জব্বার বাঁ পায়ের সমস্যা নিয়ে গত ২৮ মে এ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
তিনি জানান সবই ঠিকঠাক চলছিলো। ঈদের পর দিন হঠাৎ টয়লেট, গোসলখানা ও বেসিংয়ের পানি শেষ হয়ে যায়। পরবর্তীতে নার্সদের জানালে তারা পাম্প নষ্ট হয়ে গেছে বলে জানান। এবং দ্রুত ঠিক হয়ে যাওয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু আজ ৬ দিন হয়ে গেলো পাম্প ঠিক হওয়ার কোন লক্ষ্মণ নেই। গত দু-তিন দিন আমার সাথে কোন লোক ছিল না। আমাকেই কষ্ট করে নিচে গিয়ে বোতল ভরে চাপ কল থেকে পানি আনতে হয়েছে। অনেক রোগী এ সব সহ্য করতে না পেরে ছাড়পত্র নিয়ে চলে গেছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আশরাফ আহমেদ চৌধুরীর সাথে আলাপ কালে তিনি জানান, ঈদের পর দিন থেকে আমাদের পাম্প টি নষ্ট হয়ে গেছে। মেরামতের জন্য পাঠানো হয়েছে।
বিকল্প পাম্প নেই কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, দুটি পাম্প ছিল। কয়েক মাস পূর্বে দুটো পাম্প ই একসাথে বিকল হয়ে পড়ে। তখন একটি পাম্প ঠিক হলেও অপরটি মেরামত করা যায়নি। এখন এটাও বিকল হয়ে গেল। মেরামতের জন্য পাঠানো হয়েছে তবে কবে নাগাদ ঠিক হবে তা বলতে পারছি না। তবে আমারা বার বার তাড়া দিচ্ছি। রোগী ও স্বজনদের খুব কষ্ট হচ্ছে।
এ ব্যাপারে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সহকারী প্রকৌশলী মোঃ দেলোয়ার হোসেনের সাথে মুঠোফোনে আলাপ কালে তিনি চাঁদপুর টাইমসকে জানান, পাম্পটি সাতঘোড়া, অনেক বড় । স্থানীয় ভাবে মেরামত সম্ভব হয়নি। তাই ঢাকায় পাঠিয়েছি। আজকের (১১ জুন ) মধ্যেই ঠিক হয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে। আগামী দিনের মধ্যে চালু হয়ে যাবে। বিকল্প ব্যবস্থার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, অচিরেই এক টি টিউবওয়েল স্থাপন করে তার সাথে একটি এক ঘোড়া মটর বসিয়ে অন্তত ওয়ার্ড গুলোতে পানি সরবরাহ অব্যাহত রাখার চেষ্টা করবো। রোগী ও স্বজনদের সাময়িক ভোগান্তির জন্য আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।
প্রতিবেদক মহিউদ্দীন শারাস্তি উপজেলা
১১ জুন ২০১৯
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur