চাঁদপুর জেলার ঐতিহ্যবাহী জনপদের নাম হাজীগঞ্জ। এখানকার জনগোষ্ঠীর সিংহভাগ বর্তমানে মুসলমান। নদীমাতৃক পলিমাটির নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য চারপাশ থেকে ঘিরে রেখেছে হাজীগঞ্জ জনপদটিকে। হাজীগঞ্জ উপজেলার অন্যতম প্রধান স্থাপত্য নিদর্শন হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদ।
এটি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন, বাংলাদেশ ওয়াক্ফ প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণাধীন, আহমাদ আলী পাটওয়ারী ওয়াক্ফ এস্টেটের ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান। কালের বিবর্তনে মসজিদটি ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নিয়েছে।
চাঁদপুর জেলাবাসীর প্রাণপ্রিয় এবং প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের এই গৌরবোজ্জ্বল ও অনন্য প্রতিষ্ঠানটি আল্লাহর অলীগণের রুহানী ফয়েজ ও বরকতে শিরক-বিদাত মুক্ত ‘এবাদতের মারকাজ’ হিসেবে খ্যাত। হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদের কারামত, ও ফয়েজ-বরকতে ‘পূণ্যভূমি হাজীগঞ্জ’ আজ ধন্য এবং গৌরবান্বিত।
গৌরবোজ্জ্বল উক্ত প্রতিষ্ঠানে শুভাগমন করেছেন রাজনৈতিকভাবে অতি গুরুত্বপূর্ণ এবং ইতিহাস প্রসিদ্ধ ব্যক্তিবর্গ বিশেষ করে অবিভক্ত বাংলার তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, নবাব মোশারফ হোসেন ও নওয়াব জাদা খাজা নসরুল্লাহ প্রমুখ।
এছাড়াও পরবর্তী সময়ে হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদে শুভাগমন করেছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মজলুম জননেতা মাও. আব্দুল হামিদ খান ভাসানীসহ ইতিহাস প্রসিদ্ধ আরও অনেক ব্যক্তিবর্গ।
তাছাড়াও উক্ত প্রতিষ্ঠানে ধর্মীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ এবং ইতিহাস প্রসিদ্ধ আরও অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ গুভাগমন করেছেন। তাঁদের মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য – শায়খুল ইসলাম আল্লামা হোসাইন আহমাদ মাদানী (রহ.), আল্লামা আবুল ফারাহ জৈনপুরী (রহ.), আল্লামা জাফর আহমদ উসমানী (রহ.), আল্লামা আতহার আলী (রহ.), আল্লামা এহতেশামুল হক থানভী (রহ.)সহ আরও বহু হক্কানী পীর মাশায়েখ এবং শীর্ষস্থানীয় উলামায়ে কেরাম ও বুজুর্গানে দ্বীন।
উক্ত প্রতিষ্ঠানের সমৃদ্ধ ইতিহাসের অংশ হিসেবে উল্লেখ্য যে, বাংলা এগার’শ পঁচাত্তর থেকে বার’শ সালের মধ্যে হযরত মকিমউদ্দিন (রহ.) নামে একজন বুজুর্গ অলীয়ে কামেল ইসলাম ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে পবিত্র আরবভূমি থেকে অত্র এলাকায় আগমন করেছিলেন। তিনি স্বপরিবারে বর্তমান বড় মসজিদের মেহরাব সংলগ্ন স্থান, যেখানে একটু উঁচুভূমি বিদ্যমান ছিল, সেখানে আস্তানা তৈরী করে বসতি স্থাপন করেন। তিনি অত্যান্ত বিনয়ী ছিলেন। তাঁর প্রজ্ঞা, জ্ঞান ও চারিত্রিক মাধুর্যে মুগ্ধ হয়ে বহু লোক তাঁর কাছে দীক্ষা নিয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন।
তিনি দু’ একজন নব্য মুসলমান নিয়ে চৌধূরী ঘাটে নামাজ আদায় করতেন। তিনি হিন্দু-মুসলমান সকলের শ্রদ্ধাভাজন ছিলেন। এ এলাকায় হাজী মকিমউদ্দিন (রহ.) ইসলাম ধর্ম প্রচারের মাধ্যমে ইসলামের আবাদ করেন। সে কারণে তাঁর নামের সাথে মিলিয়ে তাঁর স্মরণে এলাকার নামকরণ হয় ‘মকিমাবাদ’। তাঁর মৃত্যুর পর তাঁকে তাঁর বসত বাড়িতেই সমাহিত করা হয়। তাঁরই বংশের শেষ পুরুষ হযরত মনিরুদ্দিন হাজী ওরফে মনাই হাজী (রহ.) সুন্নাতে রাসূল (সা:) হিসেবে এ এলাকার জনসাধারণের ব্যবহার্য চাল, ডাল, তেল, লবণ ইত্যাদি নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর একটি দোকান বর্তমান মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা আহমাদ আলী পাটওয়ারী (রহ.)’র মাজার সংলগ্ন একটু পূর্বাংশে পূর্ব-পশ্চিমে প্রবাহিত নালা-খালের উত্তরে স্থাপন করেন।
তাঁর সেই দোকানটি হাজী সাহেবের ‘হাজী দোকান’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। হাজী দোকান থেকে পর্যায়ক্রমে হাজীর হাট গড়ে ওঠে এবং উক্ত হাজীর হাটে দূর-দূরান্ত থেকে আগত গুটিকতেক ধর্মপ্রাণ মুসলমান চৌধুরী ঘাটের পরিবর্তে হোগলা হাটে, নামাজ আদায় করতেন। সে সময় বর্তমান বাজার এলাকার মধ্যে হযরত মনিরুদ্দিন (রহ.)’র পূর্ব পুরুষের পৈত্রিক ভূমির আবাসস্থল ব্যতিত আর তেমন কোনো ভূমি স্থায়ীভাবে কোনো মুসলমানের ভোগ-ব্যবহারে ছিলনা। মনাই হাজী (রহ.)’র ওফাতের পর তাঁর পূর্ব পুরুষগণের সাথে তাঁকেও পৈত্রিক বাড়ি তথা বর্তমান মসজিদের কবরস্থানে সমহিত করা হয়। সকলের প্রাণপ্রিয় মনাই হাজী (রহ.)’র হাজী দোকানের সুখ্যাতিতে আরও কিছু দোকান বর্তমান মসজিদ এলাকায় গড়ে উঠে।
সে সময় বতৃমান মসজিদ এলাকাটি বাগান বাড়ী থেকে ভাড়াটিয়া বাড়ী হিসেবে প্রসিদ্ধি লাভ করে। অত্র এলাকায় দোকান-পাঠের বিস্মিৃতিতে কেনা বেচার প্রসার ঘটে। পর্যায়ক্রমে হাজী সাহেবের দোকান থেকে ‘হাজীর হাট’ অত:পর ‘হাজীর বাজার’ এবং কালের পরিক্রমায় আজকের ‘হাজীগঞ্জ বাজার’ প্রসিদ্ধি লাভ করে।
হাজীগঞ্জের হাজী মনাই হাজী (রহ.)’র দৌহিত্র আহমাদ আলী পাটওয়ারী (রহ.) বাংলা তেরশ পঁচিশ থেকে ত্রিশ সালের দিকে বড় মসজিদের মেহরাব বা তৎসংলগ্ন স্থান জুড়ে প্রথমে একচালা খড়ের ইবাদতখানা অতঃপর খড় এবং গোলপাতা দিয়ে তৈরী দো’চালা মসজিদ নির্মাণ করেন। যা পরবর্তীতে টিনের দো’চালা মসজিদ থেকে পাকা মসজিদ স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। পরম করুনাময় আল্লাহ্পাকের অশেষ মেহেরবানীতে শরীর, মনোবল এবং প্রচ-মেধাশক্তির অধিকারী আহমাদ আলী পাটওয়ারী আল্লাহ্র উপর ভরসা করে পূর্বপুরুষের রেখে যাওয়া তথা ধনাঢ্য পিতার সম্পদ-সম্পত্তি এবং পরম শ্রদ্ধেয় নানা মনাই হাজী (রহ.)’র উত্তরাধিকারী হিসেবে প্রাপ্ত সকল সম্পদ-সম্পত্তি দেখা-শুনার পাশাপাশি নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা হিসেবে মসজিদের কাজে গুরুত্ব প্রদান করেন। ১৩৩৭ বঙ্গাব্দের ১৭ আশি^ন আহমাদ আলী পাটওয়ারী (রহ.)’র পরম ইচ্ছায় হযরত মাও. আবুল ফারাহ জৈনপুরী (রহ.)’র পবিত্র হাতে পাকা মসজিদের ভিত্তি স্থাপন করা হয়।
ঐতিহ্যবাহী এই মসজিদখানা তিন অংশে নির্মিত হয়েছে। প্রথম অংশ ৪৭৮৪ বর্গফুট, মাঝের অংশ ১৩০০৬ বর্গ ফুট এবং তৃতীয় অংশে ১৬১৫ বর্গ ফুট। সর্বমোট ২৮৪০৫ বর্গফুট আয়তনের উক্ত মসজিদে প্রথম অংশে হযরত মাও: আবুল ফারাহ জৈনপুরী (রহ.) ভারী শরীর নিয়ে, মাচার উপর বসে, তার পবিত্র হাতে চুন-সুরকির মসলা কেটে কেটে অনেক কষ্ট করে মেহরাব সংলগ্ন দেয়াল ঘুরিয়ে মসজিদের প্রথম অংশের উপরের দিকে ‘সুরা ইয়াছিন’ ও ‘সুরা জুময়া’ লিপিবব্ধ করেন। বর্তমান সময়ে সংস্কারকালে তা উঠিয়ে মসজিদের কবরস্থানে দাফন করা হয়। উক্ত মসজিদের অনন্য সুন্দর মেহরাবটি কাচের ঝাড়ের টুকরো নিখুতভাবে কেটে কেটে মনোরম ফুলের ঝাড়ের ন্যায় আকর্ষণীয় নক্শায় সাজিয়ে তোলা হয়েছে। মাঝের অংশটি ৭৭ টি আকর্ষণীয় পিলার ও ঝিনুকের মুজাইক দিয়ে নির্মিত হয়েছিল।
তৃতীয় অংশটিতে রয়েছে তিনটি বিশাল গম্বুজসহ আকর্ষণীয় বিশাল সুউচ্চ মিনার। ১৯৫৩ সনে ১২২ ফুট উঁচু এই মিনারটি তৈরি হয়েছিল। মিনারের উঁচু প্লাটফর্মে বহু মুসল্লি ও পর্যটক উঠে হাজীগঞ্জের প্রাকৃতিক দৃশ্য অবলোকন করেন। প্রতিদিন মিনারের উচু থেকে একযোগে মাইক দিয়ে আজান প্রচার করা হয়। বহুদূর দূরান্ত থেকে এ আজানের ধ্বনি শোনা যায়।
কারুকার্যখচিত মসজিদের সর্বশেষ পূর্ব প্রাচীরে পবিত্র কালেমা শরীফ খচিত চিনা বাসনের টুকরো দিয়ে তৈরি মনোরম ফুলের ঝাড়ের ন্যায় আকর্ষণীয় করে সাজানো বিশাল ফটক। মসজিদে প্রবেশের সুবিশাল ফটকের আকর্ষণীয় সাজ দর্শনার্থীদের মন কেড়ে নেয়। পাথরের সাজে সজ্জিত অসংখ্য তারকাখচিত তিনটি বড় বড় গম্বুজ পর্যটকদের আকর্ষণ করে।
আহমাদ আলী পাটওয়ারী (রহ:) পাকিস্তান গঠিত হওয়ার পরপরই কোরআনী শাসনের দাবীতে হাজীগঞ্জ বড় মসজিদ প্রাঙ্গনে এক বিরাট ইসলামী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সম্মেলনের এন্তেজামিয়া কমিটির সভাপতি ছিলেন রূপসার জমিদার সৈয়দ আবদার রশিদ সাহেব। বিভিন্ন শাখার সভাপতি থাকেন মাওলানা জাফর আহমাদ ওসমানী থানভী (রহঃ), মাওলানা আব্দুল হাই কোরাইশী (রহঃ) শর্ষিনা, মাওলানা আবু জাফর ছিদ্দিকী (রহঃ) আল-কোরাইশী ফুরফুরা শরীফ, যোগাযোগ সচিব থাকেন মাওলানা হাতেম (রহঃ) সাহেব নোয়াখালী। পাক ভারতের খ্যাতনামা ওলামায়ে কেরাম এই সম্মেলনে হাজীগঞ্জ বড় মসজিদে তাশরিফ আনেন।
সম্মেলন সাত দিন পর্যন্ত স্থায়ী হয়। মূল সম্মেলনের সভাপতি আল্লামা মাওলানা হাকিম মোঃ আব্দুর রউফ দানাপুরী (রহঃ) পাকিস্তানে ইসলামী আদর্শভিত্তিক শাসন পদ্ধতি প্রবর্তনের লক্ষ্যে কোরআন ও সুন্নাহর পুরোপুরি বাস্তবায়নের উপর সুদীর্ঘ ভাষণ দান করেন। তার ভাষণের অনুলীপি কায়েদে আজম মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ্র নিকট প্রেরণ করা হয়েছিল। আল্লাহ পাকের অশেষ মেহেরবানীতে প্রত্যন্ত এ অঞ্চলে পাক-ভারত উপমহাদেশের মধ্যে শীর্ষ স্থানীয় সম্মেলন উক্ত মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজসহ প্রতি জুময়ার নামাজ এবং পবিত্র রমজান মাসের জুমাতুল বিদার নামাজে প্রায় লক্ষাধিক মুসল্লির সমাগম ঘটে। তখন আশে-পাশের রাস্তাঘাট, ভবন এবং ভবনের ছাদসহ পুরো বাজার এলাকা মসজিদে পরিণত হয়ে যায়। বিশাল এই মসজিদে রয়েছে মহিলাদের জন্য আলাদা নামাজ পড়ার সুব্যবস্থা।
পবিত্র মাহে রমজান মাসে ইফতার এবং সেহেরীর সময় সম্পর্কে মুসলমানগণকে সচেতন করার লক্ষ্যে সুদূর সৌদি আরব থেকে সাইরেন আনা হয়; সেই ধারাবাহিকতায় আজও সে ব্যবস্থাপনা অব্যাহত রয়েছে।
হাজীগঞ্জ বাজারে বহুমাত্রিক ব্যবসায়ী সৃষ্টির লক্ষ্যে আহমাদ আলী পাটওয়ারী (রহ.)’র অবদান অনস্বীকার্য। তিনি বিভিন্ন ধরণের ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ী গড়ে তোলার পাশাপাশি এলোপ্যাথিক ডাক্তার, হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার, আয়ুর্বেদী-শাস্ত্রীয় ঔষধের দোকান বসানো এবং সেবা প্রদানের ব্যবস্থা করেন। এমনকি তিনি কোনো কোনো ব্যবসায়ীকে ব্যবসায়ের জন্য চালান বা নগদ টাকা প্রদান করেছেন। সে সময় হাজীগঞ্জ বাজারে বিদ্যুৎ ছিল না। তিনি জেনারেটর বসিয়ে নিজ বাড়িসহ মসজিদে বৈদ্যুতিক পাখা এবং আলোর পাশাপাশি বাজারে বৈদ্যুতিক আলো-বাতির ব্যবস্থা করেন।
হাজীগঞ্জ বাজারের সমৃদ্ধি পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। এতে দূর দুরান্তের লোকজন হাজীগঞ্জ বাজারমুখী হতে উৎসাহিত হন। এভাবে আহমাদ আলী পাটওয়ারী (রহ.) মসজিদ নির্মাণের পাশাপাশি হাজীগঞ্জ বাজারের সমৃদ্ধিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখেন।
হাজী আহমাদ আলী পাটওয়ারী (রহ.) মেহরাব থেকে মিনার পর্যন্ত ২৮৪০৫ বর্গফুট আয়তনের এই বিশাল মসজিদটি প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি মুসল্লিগণের ইবাদতের সুবিধার্থে আর্থিক সমস্যা কিছুটা হলেও ঘুচানোর লক্ষ্যে স্থায়ী আয়ের উৎস হিসেবে সম্পদ-সম্পত্তি এবং দোকানঘরের জন্য জায়গার ব্যবস্থা করেন। মসজিদ সংলগ্ন জায়গায় ধর্মশিক্ষা প্রসারের লক্ষ্যে স্থাপন করা হয়েছে মাদ্রাসা ও এতিমখানা তথা ধর্মীয় এবং মানবকল্যাণমূলক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। মাদ্রাসাগুলোতে আবাসিক ও অনাবাসিক উভয় প্রকার শিক্ষার্থীদের শিক্ষা অর্জনের সুযোগ রয়েছে। দরিদ্র, এতিম, দুস্থ ও অসহায় শিক্ষার্থীরা দ্বীনি শিক্ষায় শিক্ষিত হচ্ছে।
প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে রয়েছে আহমাদিয়া কামিল মাদ্রাসা, মুনিরিয়া নূরানী মাদ্রাসা, ফোরকানিয়া মাদ্রাসা, এতিমখানা, লিল্লাহ বোর্ডিং, দুস্থ অসহায়দের সহযোগিতা প্রদান, বয়স্কদের জন্য পবিত্র কোনআন মাজিদ শিক্ষা কার্যক্রম, মহিলাদের জন্য প্রতি মাসে ধর্মীয় দিক সম্পর্কে আলোচনামূলক অনুষ্ঠান, স্কুল পড়–য়া শিক্ষার্থীদের জন্য নূরানী পদ্ধতিতে কোরআন শিক্ষার কার্যক্রম এবং ধর্মীয় দিবসে ওয়াজ ও দোয়া মাহফিলের ব্যবস্থা।
ধর্ম-কর্ম, শিক্ষা-দিক্ষা, বিনিয়োগ-কর্মসংস্থান এবং গণমানুষের সেবার এক অনন্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে হাজীগঞ্জ বড় মসজিদটি কালের বিবর্তনে হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদ হিসেবে মানুষের মনে দেশের ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানগুলোর অন্যতম হিসেবে স্থান করে নিয়েছে। জেলাবাসী ধন্য হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদের জন্য।
হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদটি সরকার কিংবা কোনো রাজা বাদশাহ,জমিদার কর্তৃক নয় বরং সততার অনন্য প্রতীক, বিরল ব্যক্তিত্ব ও নিরলস কর্মবীর, নিবেদিতপ্রাণ, প্রচ- মেধাশক্তি সম্পন্ন, অলীয়ে কামেল হাজী আহমাদ আলী পাটওয়ারী (রহ.)’র কর্মকুশলতায় নির্মিত হয়েছে। আখেরাতের উদ্দেশ্যে তিনি নিজের সম্পদ-সম্পত্তি ও দান-অনুদানসহ উন্নয়ন কার্যক্রমে আত্ম নিয়োগ করেন।
তাঁর অবদানের পাশাপাশি ধর্মপ্রাণ মুসুল্লিগণের নিয়ত-মানত ও দানের অর্থে বিশাল কমপ্লেক্সের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। বর্তমানে আহমাদ আলী (রহ.)’র সুযোগ্য নাতি অধ্যক্ষ ড.মো.আলমগীর কবির পাটওয়ারী সততা ও নিষ্ঠার সাথে তার উপর অর্পিত পবিত্র দায়িত্ব পালন করে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। আলহামদুলিল্লাহ।
সম্পাদনায় : আবদুল গনি
৪ জুন ২০১৯