চাঁদপুর দেশের অন্যতম নদীবিধৌত কৃষি প্রধান অঞ্চল। মেঘনা, পদ্মা, মেঘনা ধনাগোদা ও ডাকাতিয়া নদী এ জেলা ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়ায় কৃষি উৎপাদনে নদী অববাহিকায় ব্যাপক ফসল উৎপাদন হয়ে থাকে।
এ বছর চাঁদপুরে ৫৫ হাজার ৬ শ ৪৪ মে. টন ভূট্টা উৎপাদন লক্ষ্যমাত্র্য নির্ধারণ করা হয়েছিল। চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৬ হাজার ১ শ’৮ হেক্টর অথচ চাষাবাদ হয়েছে ৬ হাজার ৬ শ ৬৫ হেক্টর । ফলে গড়ে হেক্টর প্রতি ৭ হাজার মে.টন হলে উৎপাদন দাঁড়ায় ৭০ হাজার মে.টন।
চাঁদপুরে সাধাণতঃ আলু ও গম ফসল ঘরে তোলার সাথে সাথেই ওই জমিতে চাষিরা ভূট্টা চাষ করে থাকে। এবার আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় চাঁদপুরে ভূট্টার বাম্পার উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ।
এ দিকে আবহাওয়ার অনুকূল পরিবেশ, পরিবহনে সুবিধা, কৃষি বিভাগের উৎপাদনের প্রযুক্তি প্রদান, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নত, কৃষিউপকরণ পেতে সহজলভ্যতা, বীজ, সার ও কীটনাশক ব্যবহারে কৃষিবিদদের পরামর্শ, ব্যাংক থেকে কৃষিঋণ প্রদান ইত্যাদি কারণে চাঁদপুরের চাষীরা ব্যাপক হারে ভূট্টা চাষ করছে। বিশেষ করে চাঁদপুরের মতলবে ব্যাপক ভূট্টা উৎপাদন করে থাকে চাষীরা।
চাষিদের ঋণ সহায়তা দিলে চরাঞ্চলগুলোতে ভূট্টা চাষ সম্ভব। মতলবের চরইলিয়ট, চর কাসিম, ষষ্ট খন্ড বোরোচর, বোরোচর, চাঁদপুর সদরের রাজরাজেস্বর, জাহাজমারা, লগ্মীমারা, বাঁশগাড়ি, চিড়ারচর, ফতেজংগপুর, হাইমচরের ঈশানবালা, চরগাজীপুর, মনিপুর, মধ্যচর, মাঝিরবাজার, সাহেববাজার ও বাবুরচর ইত্যাদি এলাকা গুলোতে ভূট্টা চাষ করা সম্ভব ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামার বাড়ি চাঁদপুরের সূত্র মতে, এর মধ্যে চাঁদপুর সদরে চাষাবাদ হয়েছে ১৯৮ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ৮ শ’৪ মে.টন।
মতলব উত্তরে চাষাবাদ হয়েছে ১ হাজার ৯ শ’ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৭ হাজার ৩ শ’ ৯ মে.টন। মতলব দক্ষিণে চাষাবাদ ২ হাজার ৫শ’ ২০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২২ হাজার ৯ শ’ ৫৭ মে.টন। হাজীগঞ্জে চাষাবাদ ১৪৫ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ৩শ’ ২১ মে.টন।
শাহরাস্তিতে চাষাবাদ ৫ হেক্টর এবং উৎপাদন ৪৫ মে.টন। কচুয়ায় চাষাবাদ ১ হাজার ২শ’ ৫ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ হাজার ৯ শ’৯৮ মে.টন। ফরিদগঞ্জে চাষাবাদ ১৩৫ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ২ ম ৩০ মে.টন। হাইমচরে এবার চাষাবাদ নেই ।
মাঠ পর্যায়ের একজন কৃষিবিদ বলেন, ‘ ঘূর্ণিঝড় ফণীর সময় চাঁদপুরের মাঠে ধান ,সয়াবীন ও ভুটা রয়েছ্।ে এর প্রভাবে চাঁদপুরের হাইমচরের ৫০ % সয়াবীন ক্ষেতে পানি জমে আংশিক ক্ষতি হয়েছে।’
চাঁদপুরের কৃষি সম্প্রারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মো.আবদুর রশিদ চাঁদপুর টাইমসকে জানান , চাঁদপুরে এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ৫শ’ হেক্টর জমিতে বেশি চাষাবাদ হয়েছে। কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন ,আলু ঘরে তোলার সাথে সাথেই চাষিরা ভূট্টা চাষ করে থাকে। এতে উৎপাদন খরচ কম ,দামও ভালো পায় এবং স্বল্প সময়ে ফসল ঘরে তুলতে পারে, বাজারে এর চাহিদাও বেশি।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ সাধারণত বেকারীতে যে সব ফুড আইটেম প্রস্তুত হচ্ছে এর অধিকাংশই ভূট্টা ব্যবহ্রত হচ্ছে ্ এছাড়াও গবাদি পশুর খাদ্য ও মৎস্য চাষিদের ‘ ফিসমিল’ হিসেবে এর অনেক চাহিদা রয়েছে। ’
প্রতিবেদক-আবদুল গনি
৭ মে ২০১৯
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur