চাঁদপুরসহ সারা দেশের মাধ্যমিক স্তরের ৬ষ্ঠ হতে ১০ শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ৫০ % ছাত্র-ছাত্রী চলতি শিক্ষাবর্ষে বিকাশে উপবৃত্তি পাবে।
এর মধ্যে প্রতিবছর নতুনভাবে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তিকৃত অপেক্ষাকৃত দরিদ্র ৩০% ছাত্রী ও ২০% ছাত্র এ উপবৃত্তির অন্তর্ভুক্ত হবে। যা আগে ছিলো ৪০% ও ডাচ্ বাংলা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমিক শিক্ষা উপবৃত্তি, ২য় পর্যায় প্রকল্প এ প্রকল্পটি সারাদেশে বাস্তবাযন করে যাচ্ছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের শিক্ষা উপবৃত্তির নির্দিষ্ট ফরমে উল্লেখিত তথ্য মতে, দরিদ্র পিতামাতার বার্ষিক আয় ৫০,০০০ হাজার টাকা ও ৭৫ শতাংশের কম জমি হলে, উপার্জনে পঙ্গু অন্ধ,বোবা,নদীভাঙ্গনগ্রস্থ, নি¤œ আয়ের শ্রমজীবী হলে, শিক্ষার্থী এতিম,অনাথ,অস্বচ্ছলমুক্তিযোদ্ধার সন্তান,পঙ্গু, অন্ধ, বোবা, বিকালাঙ্গ ও শারীরিক প্রতিবন্ধী হলে তারা এ উপবৃত্তি প্রাপ্ত হবে।
শিক্ষা অধিদপ্তরের শিক্ষা উপবৃত্তি প্রাপ্তদেরকে অবশ্যই শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যতীত প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ৭৫% উপস্থিতি,৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণির ৩৩ % নম্বর, ৮ম শ্রেণির ৪০% নম্বর ও ১০ শ্রেণির নির্বাচনি পরীক্ষায় সকল বিষয়ে উত্তীর্ণ ও এসএসসি পরীক্ষা পর্যন্ত অবিবাহিত থাকতে হবে। শিক্ষা উপবৃত্তি প্রাপ্তদেরকে প্রাতিষ্ঠানিক টিউশান ফি প্রদান করতে হবে না।
বছরে দু’ কিস্তিতে মাসে ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণির একজন শিক্ষার্থী ১শ টাকা, ৮ম শ্রেণির একজন শিক্ষার্থী ১শ ২০ টাকা এবং ৯ ম ও ১০ম শ্রেণির একজন শিক্ষার্থী ১শ ৫০ টাকা হারে উপবৃত্তি পাবে। বর্তমানে ডাচ্ বাংলার পরিবর্তে বিকাশ-এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পিতা-মাতা কিংবা বৈধ অভিভাবকের মোবাইলে প্রদান করা হবে।
এদিকে সমাজের সুবিধাবঞ্চিত, অতি দরিদ্র, বিদ্যালয়বিমুখ ও প্রতিবন্ধী ছেলে-মেয়েদের মাঝে প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থাকে আরও আকর্ষণীয় করতে এবং সবার জন্য সমতাভিত্তিক হিসেবে এটি গড়ে তোলার লক্ষ্যে ‘সমন্বিত উপবৃত্তি নীতিমালা’ প্রণয়ন করতে যাচ্ছে সরকার।
এ নীতিমালার আওতায় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে ‘দারিদ্র্যের’ ভিত্তিতে ৫০ % শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তি প্রদান করা হবে। এ প্রকল্পে সরকারের বছরে খরচ হবে ২ হাজার ২৬৭ কোটি টাকা। ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত একটি খসড়া নিতীমালা চূড়ান্ত করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এটি অনুমোদনের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
এ উপবৃত্তির ইতিহাস সম্পর্কে জানা যায়, ১৯৮৭ সালে চাঁদপুরের কৃতি সন্তান মরহুম ডা. আবদুস সাত্তার সচিব থাকাবস্থায় তাঁর নিজ উপজেলা শাহরাস্তির সকল বিদ্যালয়ে মেয়েদের শিক্ষার প্রসারে পরীক্ষামূলকভাবে উপবৃত্তি পদ্ধতি প্রচলন করেন।
পরবর্তীতে নরওয়ের আর্থিক সহায়তায় হাইমচরের মালের হাট যুব সংঘ নামক একটি বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে ১৯৯০ সালে চাঁদপুর সদর, হাইমচর ও শাহরাস্তিসহ দেশের ৬ উপজেলায় এ কার্যক্রম সম্প্রসারণ করা হয়। এর সফলতা দেখে চূড়ান্তভাবে ১৯৯৪ সালে তৎকালিন বিএনপি সরকার জাতীয়ভাবে সারাদেশে উপবৃত্তি কার্যক্রম চালু করেন।
দাতা সংস্থার অডিট আপত্তির কারণে সম্ভবত ১৯৯৭ সালে এ কার্যক্রম প্রায় দু’বছর স্থগিত থাকে। পরে ১৯৯৮ সালের ভয়াবহ বন্যার পর আওয়ামী লীগ সরকার পুনরায় রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে উপবৃত্তি চালু করেন।
প্রতিবেদক : আবদুল গনি
৭ এপ্রিল ২০১৯