চাঁদপুর হাজীগঞ্জে পরকীয়া প্রেমের টানে দু’সন্তানের জননী সৌদিতে পাড়ি দিয়েছেন। সৌদিতে পাড়ি দেওয়া জননী উপজেলার ১১নং হাটিলা পশ্চিম ইউনিয়নের কাঠালী গ্রামের হায়দার আলীর মেয়ে একই ইউনিয়নের নোয়াপাড়া গ্রামের মুন্সী বাড়ির মজিব মুন্সীর ছেলে সৌদি প্রবাসী দিদার হোসেনের কাছে পাড়ি দিয়েছেন।
গৃহবধু পাখি আক্তার একই ইউনিয়নের ধড্ডা গ্রামের আনোয়ার হোসেনের পুত্রবধূ। তার স্বামীর নাম মো.হাবিবুর রহমান।
এ ঘটনায় প্রবাস ফেরত স্বামী হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে স্ত্রী পাখি আক্তার ও দিদার হোসেনসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে ২৩ ফেব্রুয়ারি হাজীগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগের অন্যান্য আসামীরা হলেন,পাখি আক্তারের পিতা হায়দার আলী, চাচা কাঞ্চন মিয়া, ভাই সোহাগ ও নাছিমা বেগম।
থানার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ১৪ বছর পূর্বে হাবিবুর রহমানের সাথে পাখি আক্তারের ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক বিয়ে হয়। তাদের দাম্পত্য জীবনে ১ ছেলে ও ১ কন্যা সন্তান রয়েছে। স্বামী হাবিবুর রহমান ২০১৭ সালে বাহরাইন আরব পাড়ি জমান।
এরপর থেকে স্ত্রী পাখি আক্তার তাঁর সাথে ফোনে যোগাযোগ না রেখে হাবিবুর রহমানের পরিবারের সদস্যদের সাথে বিভিন্ন সময়ে উশৃঙ্খল আচরন করে থাকেন। স্ত্রী’র এমন ঘটনা নিয়ে স্বামী হাবিব তাকে জিজ্ঞাসা করলে উল্টো তাকে হুমকি প্রদর্শন করেন।
পরে গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর শ্যালক সোহাগ স্ত্রী পাখি আক্তারকে ডাক্তার দেখানোর কথা বলে অবুঝ দু’সন্তানকে রেখে তাঁর নিজ বাড়ি থেকে নিয়ে যায়। স্বামী হাবিব এর বাড়ি থেকে চলে যাওয়ার সময় তাঁর প্রবাস থেকে পাঠানো অর্জিত নগদ ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও ৫ ভরি স্বর্ন নিয়ে যায় বলে অভিযোগ করেন।
প্রবাসে থাকাকালীন হাবিবুর রহমান তার স্ত্রী’র সন্ধান জানতে চাইলে তার শশুর বাড়ির লোকজন বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দিয়ে থাকেন।পরে স্ত্রী’র খোঁজ নিতে হাবিব ৩ ফেব্রুয়ারি বাহরাইন থেকে দেশে ফিরে আসেন। দেশে এসে তিনি জানতে পারেন তাঁর স্ত্রী পাখি আক্তার সৌদি প্রবাসী দিদার হোসেনের সাথে পরকীয়া লিপ্ত থেকে তাঁর কাছেই পাড়ি দিয়েছেন।
পাখি আক্তার ভূয়া কাবিননামা তৈরি করে পাসপোর্টে দিদার হোসেনের স্ত্রী হিসেবে নাম অন্তভর্ক্ত করেন। পরে ভিসা প্রসেসিং করে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে দিদার হোসেন পাখি আক্তারকে সৌদি আরব নিয়ে গেছেন।
জানা গেছে, গৃহবধূ পাখি আক্তারের ছেলে পঞ্চম শ্রেণিতে ও মেয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। দিদারের বড় ছেলে মাদ্রাসায় পড়ুয়া শিক্ষার্থী ও ছোট ছেলে শিশু শ্রেনিতে পড়েছে।
প্রবাস ফেরত হাবিবুর রহমানের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে হাজীগঞ্জ থানার এস আই জাফর আহমেদ পাখি আক্তারের পিতা হায়দার আলী ও চাচা কাঞ্চন মিয়াকে থানা নিয়ে এসে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তাঁরা পাখি আক্তার দিদার হোসেনের কাছে সৌদি আরব পাড়ি দিয়েছেন বলে স্বীকারোক্তি দেন।
পরে ১ সপ্তাহের মধ্যে পাখি আক্তারকে থানা হাজির করাবেন মর্মে স্থানীয় ইউপি সদস্য কাউছার হোসেনের নিকট জিম্মা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্ত তাঁরা ধার্য্য তারিখে (৬ মার্চ) বুধবার পাখি আক্তারকে থানায় হাজির না করে বিভিন্ন ধরনের টালবাহানা করে আসছেন।
এ প্রসঙ্গে তদন্তকারী কর্মকর্তা মো.জাফর আহমেদ বলেন,‘আমি তাঁর বাবা এবং চাচাকে থানা নিয়ে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তাঁরা আমাকে বলেছে পাখি এখন সৌদি আরব দিদারের কাছে রয়েছে। তাঁরা ১ সপ্তাহের মধ্যে পাখি আক্তারকে থানা হাজির করাবে মর্মে ইউপি সদস্যের জিম্মায় তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তাকে হাজির না করলে তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা হবে।’
করেসপন্ডেট
৮ মার্চ,২০১৯