রাজধানীর চকবাজারের ব্যবসায়ী মো. নাসিরুদ্দিন। তিন মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে তার সুখের সংসার। তবে সংসারে প্রথম কষ্ট এসেছিল ২০১১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আগে বড় মেয়ে আজরীন (২২) ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার পর। তারপরেও দুই মেয়ে আনহা (২৬), সারজা (১৫) ও একমাত্র ছেলে মাহিদকে নিয়ে কেটে যাচ্ছিল সন্তানহারা নাসিরুদ্দিনের দিন।
কিন্তু বুধবার রাতে একমাত্র ছেলে ওয়াসি উদ্দিন মাহিদ চুড়িহাট্টার আগুনে পুড়ে মারা যাওয়ার পর বাড়িতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। মেয়ের পর অগ্নিকাণ্ডে ছেলেকে হারিয়ে এখন পাগলপ্রায় এ ব্যবসায়ী।
নবকুমার ইনস্টিটিউটের এইচএসসিতে লেখাপড়া করতো ওয়াসি উদ্দিন মাহিদ। সম্প্রতি বাবার সঙ্গে ব্যবসায় মনোনিবেশ করেছিল মাহিদ।তাকে হারিয়ে বাড়িজুড়ে চলছে শোকের মাতম। একমাত্র ছেলে আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা যাওয়ার পর ক্ষণে ক্ষণে মুর্ছা যাচ্ছিলেন পরিবারের সদস্যরা।
মাহিদের বাবা মো. নাসিরুদ্দিন বলেন, আমার ছেলে তার মায়ের জন্য মিনারেল ওয়াটার কিনতে বাসা থেকে বের হয়, বোধ হয় চুড়িহাট্টার মোড় পর্যন্তও আসতে পারেনি, গাড়ি বিস্ফোরণের সময়ই হয়তো ও মারা যায়, আমরা মাহিদের মরদেহ মোটামুটিভাবে ভাল পেয়েছি। এখন এটাই আমার সান্তনা।
তিনি আরও বলেন, অগ্নিকাণ্ডের মিনিট পাঁচেক আগেও আমি চুড়িহাট্টার মোড়ে ছিলাম। আমি পাশের এলাকা রহমতগঞ্জে গেলাম আর বিস্ফোরণের শব্দ পেলাম। আমি বুড়া হয়ে গেছি। মারা গেলেও হইতো, কিন্তু আল্লাহ কেন আমার তরুণ ছেলেটাকে নিয়া গেলো? আমি আর কতো সহ্য করবো, ২০১১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ব্লাড ক্যান্সারে বড় মেয়েকে হারাই।
বুধবার রাতে চকবাজারের নন্দকুমার দত্ত রোডের শেষ মাথায় চুড়িহাট্টা শাহী মসজিদ এলাকায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৬৭ জন পুড়ে মারা যায় ও অগ্নিদগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন আছে ৪১ জন। (বিডি-প্রতিদিন)
২৩ ফেব্রুয়ারি,২০১৯