প্রস্তাবিত বেতন কাঠামোতে বৈষম্যের অভিযোগ তুলে আন্দোলনের নামছেন সরকারি কর্মচারীদের একটি সংগঠন। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন পর্যায়ে বেতন বৈষম্য, টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বাতিলের প্রস্তাবের প্রতিবাদে আন্দোলনে নামতে যাচ্ছেন তারা।
শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী সমন্বয় পরিষদ এ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে।
নতুন কাঠামোয় সর্বনিম্ন মূল বেতন ১৮ হাজার টাকা নির্ধারণের দাবি জানিয়েছে সরকারি কর্মচারী সমন্বয় পরিষদ। নিজেদের দাবি ও ঘোষিত বেতন কাঠামোর প্রতিবাদ জানিয়ে ২৪ মে প্রধানমন্ত্রী ও জেলা প্রশাসকদের কাছে স্মারকলিপি প্রদান এবং দেশব্যাপী বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে সংগঠনটি।
যোগ্য হয়েও সঠিক সময়ে পদোন্নতি না পাওয়াসহ কয়েকটি কারণে একটি নির্ধারিত সময় পরপর আর্থিক সুবিধা হিসেবে সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল দেওয়া হয়। এটি বাতিলেরও প্রস্তাব করেছেন তারা।
তাদের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- ২৪ মে ঢাকায় প্রতিবাদ সমাবেশ ও প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ। একই দিন সারা দেশে সব জেলায় বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্মারকলিপি দেওয়া। ১ জুনের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে সারা দেশে সব সরকারি দপ্তরে ধারাবাহিকভাবে প্রতিবাদ সমাবেশ ও লাগাতার আন্দোলন কর্মসূচি পালন।
সরকারি কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘সরকারের প্রস্তাবিত বেতন কাঠামো বর্তমান বাজার দরের তুলনায় চরম অসঙ্গতিপূর্ণ। যেখানে সর্বোচ্চ স্তরের বেতন স্কেল ৯০ হাজার টাকা এবং সর্বনিম্ন বেতন ৮ হাজার ২’শ ৫০ টাকা। দেশের ১২ লক্ষ সরকারি কর্মচারী ঘোষিত বেতন কাঠামোতে হতাশ।’
এ অবস্থায় ১:৫ হারে বেতন কাঠামো নির্ধারণ, সিলেকশন গ্রেড, টাইম স্কেল বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার ও যোগদানের তারিখে বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট চালুর প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখা ও বার্ষিক বেতন বৃদ্ধির চলমান প্রক্রিয়া চালু রেখে প্রতি বছর জুলাই মাসে তা কার্যকর করার দাবি জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সরকারি কর্মকর্তাদের বেতনের যে প্রস্তাব করা হয়েছে, তা বৈষম্যমূলক। কারণ সর্বোচ্চ বেতন ৯০ হাজার টাকা (মন্ত্রিপরিষদসচিবসহ কয়েকজন), অথচ সর্বনিম্ন পর্যায়ে মূল বেতন ধরা হয়েছে আট হাজার ২৫০ টাকা। বর্তমান বাজারের সঙ্গে এই বেতন কোনোভাবেই সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এ জন্য তারা সর্বনিম্ন বেতন ১৮ হাজার টাকা করার দাবি জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে কর্মসূচি ঘোষণা করেন- সংগঠনটির মহাসচিব নোমানুজ্জামান আল আজাদ। এ সময় সংগঠনের সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেনসহ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- সংগঠনের নেতা এম এ হান্নান, বদরুল আলম সবুজ, সেলিম ভূঁইয়া, আম্বিয়া বেগম পলি, এম এ ওয়াদুদ, মনির হোসেন, শহিদুল্লাহ প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গত বুধবার বেতন কমিশনের প্রতিবেদন পর্যালোচনা কমিটি অর্থমন্ত্রীর কাছে তাদের প্রতিবেদন দিয়েছে। সেখানে কমিশনের সঙ্গে একমত হয়ে পর্যালোচনা কমিটিও টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বাতিলের সুপারিশ করেছে। বিষয়টিতে জানার পর ক্ষুব্ধ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আন্দোলনের ঘোষণা দিলেন।
চাঁদপুর টাইমস : এমআরআর/২০১৫
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur