Wednesday, May 13, 2015 08:37:48 PM
করেসপন্ডেন্ট, ঢাকা :
‘হামলা-মামলা ও অত্যাচার-উৎপীড়নে পর্যুদস্ত করে বিএনপির মতো একটি দলের স্বাভাবিক কার্যক্রমকে স্থবির করে দিয়ে ক্ষমতাসীনরা উল্লাস প্রকাশ করছে’ বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
তিনি বলেন, ‘গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ধারাকে এভাবে স্তব্ধ করে দিয়ে কেউ কখনো সুফল পায়নি। আমি ইতিহাস থেকে সেই শিক্ষাগ্রহণের জন্য ক্ষমতাসীনদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। আহ্বান জানাচ্ছি রাজনৈতিক সহাবস্থান ও সুস্থ স্বাভাবিক প্রতিযোগিতার পরিবেশ অবিলম্বে ফিরিয়ে আনার।’
গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বুধবার বিকেলে খালেদা জিয়া এ সব কথা বলেন। বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন।
খালেদা জিয়া বলেন, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটি সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সহ-সভাপতি শমসের মবিন চৌধুরী, যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ, আমার উপদেষ্টা অধ্যাপক এম এ মান্নান, শামসুজ্জামান দুদু ও মোসাদ্দেক আলী, বিএনপি নেতা লুৎফুজ্জামান বাবর, আসলাম চৌধুরী, আবদুস সালাম পিন্টু ও আরিফুল হক চৌধুরীসহ বিএনপি ও অন্যান্য বিরোধী দলের বহু নেতাকর্মী দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে রয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘এরা অনেকেই জাতীয় পর্যায়ের বিশিষ্ট রাজনীতিক, সাবেক মন্ত্রী এবং নিজ নিজ অঙ্গনে খ্যাতিমান ব্যক্তি। রাজনৈতিক প্রতিহিংসাবশত বিরোধী দলকে দমনের হীন উদ্দেশ্যে বিভিন্ন মিথ্যা ফৌজদারি মামলা এবং সরকারের আজ্ঞাবহ দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা সাজানো মোকদ্দমায় দীর্ঘদিন ধরে এ সব নেতার অনেককেই বিনা বিচারে বন্দী করে রাখা হয়েছে।’
বিএনপিপ্রধান বলেন, ‘আটকাবস্থায় বেআইনি ও উদ্দেশ্যমূলকভাবে দফায় দফায় পুলিশ রিমান্ডে নিয়ে এ রাজনৈতিক বন্দীদের অনেকের ওপর দৈহিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। তাদের অনেকে বয়সে প্রবীণ এবং নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত। কারাগারে সুচিকিৎসার অভাবে তারা অনেকেই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘উচ্চ আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষা করে বিএনপি নেতা নাসিরউদ্দিন পিন্টুকে রাজশাহী কারাগারে স্থানান্তরের পর সম্প্রতি তিনি কর্তৃপক্ষের নিষ্ঠুর অবহেলায় মৃত্যুবরণ করেন। গুরুতর অসুস্থ মির্জা আলমগীরকে সম্প্রতি তেমন কোনো চিকিৎসা না দিয়েই কারাগারে ফেরত পাঠানো হয়েছে। খন্দকার মোশাররফ অজ্ঞান হয়ে বাথরুমে পড়ে যাওয়ার পরও তার তেমন কোনো চিকিৎসা হচ্ছে না। এ সব ঘটনা তাদের পরিবারের সদস্যবৃন্দ এবং আমাদের জন্য গভীর উদ্বেগের।’
দেশে বর্তমানে আইনের প্রয়োগ, তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়াকে ক্ষমতাসীনদের ইচ্ছার বাহনে পরিণত করা হয়েছে উল্লেখ করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব পালনের কোনো সুযোগ রাখা হয়নি। আইন তার স্বাভাবিক গতিতে চললে, দেশে আইনের শাসন ও সুবিচারের সুযোগ থাকলে এ সব ঘটনা ঘটতে পারত না। কেউ সরকারের প্রতিহিংসার শিকার হলে তার প্রতিকার ও প্রতিবিধানের ব্যবস্থা থাকত। কিন্তু সে সব ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়ে আইনগতভাবে মোকাবেলার পথ খুবই সঙ্কুচিত করে ফেলা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এ পরিস্থিতিতে আমি দাবি করছি, বিএনপিসহ বিরোধী দলমতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক মিথ্যা মামলাসমূহ অবিলম্বে প্রত্যাহার করে তাদের মুক্তি দেওয়া হোক। বিশেষ করে আমি অসুস্থ সিনিয়র নেতাদের মুক্তি ত্বরান্বিত করার দাবি করছি।’
বিএনপি চেয়ারপারসন আরও বলেন, ‘বন্দী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের জামিনলাভের স্বাভাবিক অধিকারও এখন সরকারের তীব্র বিরোধিতার মুখে ক্ষুণ্ন হচ্ছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য যাদের দেশের বাইরে যাওয়ার আশু প্রয়োজন তাদেরও জামিন দেওয়ার বিরোধিতা করা হচ্ছে। আমি এ ধরনের অমানবিক আচরণ পরিহার করার আহ্বান জানাচ্ছি।’
চাঁদপুর টাইমস : এমআরআর/২০১৫
নিয়মিত ফেসবুকে নিউজ পেতে লাইক দিন : www.facebook.com/chandpurtimesonline/likes
চাঁদপুর টাইমস’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur