ঢাকা প্রতিবেদক :
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) লোক প্রশাসন বিভাগের এক শিক্ষিকাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছে ছাত্রলীগ নেতা আরজ মিয়া। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে।
ঘটনার প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাৎক্ষণিকভাবে বিক্ষোভ করে। পরে প্রক্টরিয়াল বডি আরজুকে পুলিশে সোপর্দ করলে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল নেতাকর্মী তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
লাঞ্ছনাকারী আরজ মিয়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক। আরজ মিয়াকে বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর নূর মোহাম্মদ।
তিনি বলেন, লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষিকাকে লাঞ্ছিত করায় তাৎক্ষণিকভাবে আরজ মিয়াকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ঘটনায় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও এ্যাকাউন্টিং এ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আলী নূরকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে দুই সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। রিপোর্টের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রবিবার দুপুর দেড়টার দিকে আরজ মিয়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে ওই শিক্ষিকাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। এ ঘটনায় আরজ মিয়ার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে রবিবার বিকালে মামলা দায়ের করেছেন ওই শিক্ষিকা। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, আরজ মিয়া তাকে ধাক্কা দেয়, জামা ধরে টান দেয় ও চড় মারে।
এ খবর ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে দুপুর দুইটার দিকে ছাত্রলীগ নেতা আরজ মিয়ার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করে উপাচার্য ভবন ঘেরাও করে শিক্ষার্থীরা। একই দাবিতে লোক প্রশাসন বিভাগের সামনে মানববন্ধন করে তারা।
‘যৌন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শীর্ষক’ ব্যানারে প্রতিবাদরত শিক্ষার্থীরা জানান, শিক্ষিকা লাঞ্ছিতকারীর বিচার না হওয়া পর্যন্ত কোনো শিক্ষার্থী ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নেবে না।
উপাচার্য ভবন ঘেরাওয়ের সময় শিক্ষার্থীদের ব্যানার কেড়ে নেয় জগন্নাথ বিশববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়ে বলে অভিযোগ করেছে প্রতিবাদরত শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সভাপতি শরিফুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম দলবল নিয়ে তাদের চলে যেতে বলে। শিক্ষার্থীরা চলে যেতে না চাইলে তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে এবং ব্যানার কেড়ে নেয়।
এদিকে আরজ মিয়াকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি পুলিশে সোপর্দ করে। পুলিশ তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়ার সময় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল নেতাকর্মী তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
কোতয়ালী থানার অপারেশন কর্মকর্তা মো. রফিক জানান, এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি ছাত্রলীগ নেতা আরজ মিয়াকে আটক করে কোতয়ালী থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। পরে পুলিশের কাছ থেকে জগন্নাথ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলামের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের একটি দল আরজ মিয়াকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
এমআরআর/2015
নিয়মিত আপনার ফেসবুকে নিউজ পেতে লাইক দিন : https://www.facebook.com/chandpurtimesonline/likes
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur