Friday, 17 April, 2015 10:04:34 PM
চাঁদপুর টাইমস ডট কম
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেছেন, ‘আমাদের দেশের সুপ্রিমকোর্টের নিয়ম হলো ব্রিটিশদের করা নিয়ম। আমরা সে নিয়মই অনুসরণ করছি। সুপ্রিমকোর্টের একজন বিচারপতি বছরে ছয় মাসের বেশি ছুটি ভোগ করেন। এটা তো ব্রিটিশদের নিয়ম। বিভিন্ন দেশে বিচারপতিরা বছরে মাত্র ২০ দিন ছুটি ভোগ করেন।’
শুক্রবার বিকেলে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলানায়তনে আয়োজিত বৈশাখী উৎসব অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। রুলার এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
প্রধান বিচারপতি আরো বলেন, ‘আমি হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি থাকাকালে এই ছুটি কমানোর কথা বলেছিলাম। কিন্তু এ কথার গুরুত্ব তখন কেউ বুঝতে চায়নি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা যদি স্বাধীনতা না পেতাম তাহলে আমাদের পরিচয় অন্য রকম হতো। পৃথিবীর ইতিহাসে এতো কম সময়ের মধ্যে সংবিধান তৈরি হয়নি। আমরা অতি অল্প সময়ে সংবিধান পেযেছি। সকল আইনের উৎস এই সংবিধান।’
ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এ দিবস পালন করা হয়। এ দিবসকে ঘিরে আইন শিক্ষার আয়োজন হয়। সুপ্রিম কোর্টে আমরা এরকম একটি দিবস উদযাপন করতে পারি।’
প্রধান বিচারপতি আরো বলেন, ‘আমি বিচার বিভাগের অভিভাবক তাই আমার কাছে আপনারা চাইবেন। আমি চেষ্টা করবো আপনাদের দাবি অনুয়ায়ী কিছু করা যায় কি না। আগে সুপ্রিম কোর্টে কোনো রাজনীতি ছিল না। আইনজীবীদের দাবি সকলে এক সঙ্গে মিলে আদায় করতেন। আজ আপনাদের মাঝে কোনো রকম ঐক্য নাই। সুপ্রিমকোর্টে প্রায় তিন লাখ মামলা ঝুলে আছে। এ মামলাগুলো শেষ করার জন্য আপনাদেরও চিন্তা করতে হবে। সুপ্রিমকোর্টকে রক্ষা করতে হবে। আপনাদের একই প্লাটফর্মে আসতে হবে।’
সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেন, ‘আপনারা বলেন কী করতে হবে, আমি আপনাদের সঙ্গে আছি। আমার কাজের ওপর আমার মূল্যায়ন হবে। অন্য কোনো মাধ্যমে নয়। আমরা বিচারপতিরা যদি একটু সচেতন হন তাহলে রায় দ্রুত বের হবে। এরজন্য আইনজীবীদের আন্তরিক সহযোগিতা খুবই দরকার। রুল অব ল মেইটেইন করতে চাই। এটা বিচারক-আইনজীবী উভয়ের দায়িত্ব। আইনজীবী যদি কোনো কারণে বিলম্ব করেন তাহলে আদালতের সময় নষ্ট হয়, ভিকটিম সময় মতো প্রতিকার পান না। তখন আর রুল অব ল মানা হয় না।’
আগাম জামিন প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আগাম জামিন একটা অধিকার। কিন্তু বছরের পর বছর যারা পৈত্রিক ভিটা হতে বিতাড়িত, তাকে প্রাধান্য আগে দেবেন, না যাকে পুলিশ তাড়াচ্ছে তাকে দেবেন। তাহলে রুল অব ল কোনটি? আগাম জামিনের কারণে উচ্চ আদালতে নিম্ন আদালতের মত ভিড় লেগে যায়। তাই এটা বন্ধ করা হয়েছে। ভারতে আগাম জামিনের বিধান আছে কিন্তু তাতে সব মামলার শুনানি হয় না। কেবলমাত্র গুরুত্বপূর্ণ মামলাগুলোর ক্ষেত্রে আগাম জামিন পেতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘আপনাদের যৌক্তিক সকল দাবি আমি মেনে নেবো। আইনজীবী বিচারপতি সবাই একই পরিবারের সদস্য। তাই আমি একা কোর্ট চালাতে পারবো না। আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন।’
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি কামরুজ্জামান কচির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বিচারপতি একে এম আসাদুজ্জামান, বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দোস্তগীর, অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মাহবুবে আলম প্রমুখ।
চাঁদপুর টাইমস- ডিএইচ/২০১৫