রোহিঙ্গা পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখতে শনিবার (৩০ জুন) দিবাগত রাতে বাংলাদেশে এসেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। প্রায় ৭ বছর পর জাতিসংঘের কোনো মহাসচিব বাংলাদেশ সফরে এলেন। থাকবেন ২ জুলাই পর্যন্ত।
৪৮ ঘণ্টার সফরে শনিবার দিবাগত রাত দুইটায় তিনি ঢাকায় এসে পৌঁছালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান।
রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীসহ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে তার বৈঠক হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ঢাকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সূত্র বলছে, গুতেরেস মহাসচিব হওয়ার পর এটাই হতে যাচ্ছে তার প্রথম ঢাকা সফর। এ সফরে অভ্যন্তরীণ, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক রাজনীতি, শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং বিশ্বব্যাপী শান্তি প্রতিষ্ঠা ও শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ কীভাবে আরো জোরালো ভূমিকা রাখতে পারে তা নিয়ে আলোচনা থাকবে হাই প্রোফাইল বৈঠকগুলোতে। বিশেষ করে বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনে সবল দলের অংশগ্রহণে অবাধ, সুষ্ঠু এবং গ্রহণযোগ্যতার বিষয়ে জাতিসংঘের পর্যবেক্ষণ এবং সুপারিশ ও সহায়তার নিয়েও বিস্তর আলোচনা হবে।
জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস এর আগে সংস্থাটির শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসি আরের প্রধান ছিলেন। ওই পদে থাকাকালে ২০০৮ সালে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে এসেছিলেন। এবার জাতিসংঘ মহাসচিব হিসেবে বাংলাদেশ সফর করছেন।
ঢাকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, বৈশ্বিক ফোরাম ও সহযোগী সংস্থা প্রধানদের এ সময়ে বাংলাদেশ সফর বর্তমান সময়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিলেও দীর্ঘমেয়াদে তাদের ভরণপোষণ ও সুস্থ জীবন নিশ্চিত করা বাংলাদেশের একার পক্ষে কষ্টকর।
এ পরিপ্রেক্ষিতে রোহিঙ্গাদের সহায়তায় তাদের পাশে বিভিন্ন দেশ ও দাতা সংস্থার এগিয়ে আসাটা সংকট থেকে উত্তরণের জন্য বেশ সহায়ক। রোহিঙ্গা সঙ্কট মোকাবেলায় বাংলাদেশের নেয়া পদক্ষেপগুলো তাদের কাছে তুলো ধরা হবে।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, রোহিঙ্গা সংকট শুরুর পর থেকেই অ্যান্তোনিও গুতেরেস এ সংকট সমাধানে বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছেন। রাখাইনে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর অভিযানকে ‘ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়’ হিসেবে অভিহিত করে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন বন্ধের আহ্বানও জানিয়েছেন গুতেরেস। রোহিঙ্গা সংকটের একটি সম্মানজনক এবং টেকসই সমাধানে বরাবরই তিনি সোচ্চার ছিলেন।