ডায়াবেটিস ইনসুলিনের সমস্যা জনিত রোগ। কারো রক্তে গøুকোজ সুনির্দিষ্ট মাত্রা অতিক্রম করলেই তাকে ডায়বেটিস রোগী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এই মাত্রাগুলো হলো অভুক্ত অবস্থায় রক্তের প্লাজমায় প্রতিলিটার ৭.০ মিলি মোল বা তার বেশি অথবা অভুক্ত ব্যক্তিকে (পূর্ণবয়স্ক) ৭৫ গ্রাম গøুকোজ খাওয়ানোর ২ ঘন্টা পর প্রতি লিটারে ১১.১ মিলি মোল বা তার বেশি হলে। গধষহঁঃৎরঃরড়হ জবষধঃবফ উরধনবঃবং গবষষরঃঁং (গজউগ).
ডায়াবেটিস হলে খাদ্যের একটি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতে হবে। যেহেতু রমজান মাস। সেহেতু একটি বাড়তি যতœ শরীরের প্রতি নিতে হবে। বিশেষ কোনো জটিলতা না থাকলে বেশির ভাগ রোগী রোজা পালন করতে পারবেন। ইনসুলিন নির্ভরশীল ডায়াবেটিস চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতিত রোজা রাখা উচিত হবে না।
তাই কি পরিমাপে ইনসুলিন নিতে হবে বা ট্যাবলেট খেতে হবে সেটা ভালোভাবে চিকিৎসকের নিকট থেকে জেনে নিন। রোজার দিনে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখার জন্য অতিরিক্ত ব্যায়াম করার প্রয়োজন নেই। বিকেলে দৈহিক পরিশ্রমের কাজ না করে বিশ্রাম নেয়া ভাল। রোজা রেখে রক্ত ইনসুলিন নেয়া যাবে। রোজার সময়ের জন্য বিশেষ খাবারের নিয়ম জেনে রাখা ভালো।
ইফতারে যা খাবেন
বুট ভুনা কাপ ( ১২০ গ্রাম), পিয়াজু ৪ টা মাঝারী মাপের। বেগুনী ২টা মাঝারী, মুড়ি ২-৩ কাপ, এছাড়া শশা, ডাবের পানি, লেবুর পানি (চিনি ছাড়া) ইচ্ছেমতো খেতে পারবেন। তবে মৌসুমী ফল গুলোর মধ্যে আম ৩০ গ্রাম ( ছোট আমের অর্ধেক), লিচু ৫টা বড়, কাঁঠাল ৪০ গ্রাম মাঝারী ৩ কোয়া। এছাড়া আপেল ৩০ গ্রাম ( মাঝারী ১টা) কমলা ছোট ১টা, মালটা মাঝারী ১ টা, পাকা কলা ছোট ১ টা এবং খেজুর ২-৩, উক্ত ফলগুলোর যেকোন একটি দৈনিক খেতে পারবেন। তবে সবগুলো একত্রে খাওয়া বারন।
সন্ধ্যা রাতে
আটার রুটি ৪টা ছোট পাতলা বা ভাত ১ কাপ, মাছ বা মাংস ২-১ টুকরা, ডাল আধা কাপ ঘন [ তবে যাদের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে তাদের জন্য নয়]
সবজি – সব রকম শাক ইচ্ছেমতো খেতে পারবেন। এবং কাঁচা টমেটো, কাঁচা মরিচ, সজনা, লাউ, ডাটা, করলা, পটল, কাঁচা পেঁপে, শসা, ফুলকপি মূলা, ক্যাপসিকাম, ওলকপি ইচ্ছেমতো খেতে পারবেন। এছাড়াও [ আলু ছোট ১ টা, পাঁকা টমেটো ১টা, কাঠালের বিচি ৬-৭ টা, বেগুন ছোট ২টা, কাঁকরোল ২৫ গ্রাম, মিষ্টি কুমড়া ৮০ গ্রাম] যেকোন একটি খাদ্য খাওয়া যাবে।
সেহরিতেঃ
ভাত ২ কাপ
মাছ বা মাংস ২-১ টুকরা
দুধ ১ কাপ
সবজি সব রকম শাক খেতে পারবেন। এবং উপরে নির্দেশিত সন্ধ্যা রাতের সবজির তালিকা অনুসরন করবেন। মনে রাখবেন কাল জাম, লেবু, আমড়া, জাম্বুরা, কামরাঙ্গা, জামরুল, আমলকি, কচি ডাবের পানি আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ভীষন উপকারী। তাই প্রতিদিনই কিছু টক জাতীয় ফল খাওয়া উচিত।
যেসব খাবারের খাদ্যগুন একই রকম সেগুলোর পরিবর্তে অন্য খাদ্য খাওয়া যাবে তবে কোন বিনিময় খাদ্য তালিকা থেকে কতটুকু খাবার খেতে পারবেন সে বিষয়ে চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদ এর পরামর্শ নেবেন। কিন্তু মনে রাখবেন আপনাকে দৈনিক যা খেতে বলা হয়েছে তার প্রতিটি খাদ্যই সময় মত ও পরিমানমতো খাবেন। কোনটি বাদ দেয়াও যাবে না বা বেশি খাওয়াও যাবে না।
সটিক খাদ্য গ্রহনের মাধ্যমে এবং শৃঙ্খলা মেনে চলা মাধ্যমে ডায়াবেটিস রোগ নিয়ন্ত্রনে থাকবে।
লেখক পরিচিতি: আহ্লুল জান্নাত, পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur