তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকাররে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বর্তামানে চাঁদপুর-হাইমচর নির্বাচনী -৩ আসনের সংসদ সদস্য, পররাষ্ট্র বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির যুগ্ম সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। আমার কাছে তার সবচেয়ে বড় পরিচয় তিনি একজন ভাষাবীরের সন্তান।
বলছিলাম ডা: দীপু মনি এমপির কথা। যিনি নারী সাংবাদিকতার অগ্রদূত বেগম পত্রিকার সম্পাদক বেগম নুরজাহানের জন্মভূমি চাঁদপুরের আরেকজন আলোকিত মুখ।
যিনি একাধারে একজন নারী নেত্রী, অত্যান্ত মেধাসম্পন্ন ও বিচক্ষণ রাজনীতিবীদ এবং একজন সু-বক্তা। সর্বপরি তিনি একজন সাহিত্যপ্রেমী মানুষ। আজ একটি স্কুলের অনুষ্ঠানে তার হাতে তুলে দিয়েছিলাম কবিতার কাগজ তরী’র ৫ম সংখা।
তিনি লিটলম্যাগটি হাতে নিয়ে অনেকটা সময় ধরে ৩য় পৃষ্ঠায় চোখ রাখলেন। কিছুক্ষণ পর একটার পর একটা পৃষ্ঠা উল্টে মনোযোগ সহকারে বেশ কিছু কবিতা পড়লেন। এরপর আমাকে কাছে ডেকে মাথায় হাত বুলিয়ে, আমার একটা হাত শক্ত করে ধরে যা বললেন- তা অনেকটা এরকম….
‘আমার জেলা থেকে এতো চমৎকার, পরিচ্ছন্ন আর মানসম্মত একটি লিটলম্যাগ প্রকাশিত হয়!। তোমার মেধা আর কাজ দেখে সত্যিই আমি অবাক আর আনন্দিত হলাম। সাহিত্য পত্রটির সম্পাদকীয়’র প্রতিটা শব্দ আমি মনোযোগ দিয়ে পড়েছি। কিছু কবিতায় চেখে বুলিয়েছি। আমার কাছে অনেক ভালো লাগছে যে আমার চাঁদপুরের তরুণরা সাহিত্য অঙ্গনেও আলো ছড়াচ্ছে। তোমাকে অনেক অনেক অভিনন্দন আর শুভকামনা।’
এর আগেও তরী’র ৪র্থ সংখা হাতে পেয়ে তিনি শিল্পকলা একাডেমির মাইকে দীর্ঘক্ষণ তরী’র প্রশংসার করেছেন।
পাঠক বলতেই পারেন যে, সুযোগ বুঝে আমিও একটু আত্মপ্রচার করছি। হ্যাঁ বিষয়টা অনেকটা এরকমই। কথায় আছে ‘নিজের ঢোল নিজেই পেটাও, অন্যে পেটাইলে ফাটিয়ে ফেলিবে’।
তাই কখনো কখনো নিজের ঢোল নিজেকেই পেটাতে হয়~ যাকে আমরা আত্মপ্রচার বলে থাকি।
শিল্প-সাহিত্যের এই কাজগুলো অনেকটা নিজের খেয়ে বনের মহিশ তাড়ানোর মতোন। যারা লিটলম্যাগ বা ছোট কাগজ প্রকাশের সাথে জড়িত একমাত্র তারাই বলতে পারেন, একেকটি ছোট কাগজ প্রকাশের প্রসববেদনা কতোটা কষ্টের- যন্ত্রণার। একটি কাগজ প্রকাশ করতে গিয়ে লেখকদের কাছ থেকে লেখা সংগ্রহ করা, প্রুফ দেখা, প্রচ্ছদ সংগ্রহ করা, কম্পিউটারের দোকানে ঘন্টার পর ঘন্টা সিরিয়াল পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করা, এর পর অর্থের যোগান দিতে একটি বিজ্ঞাপনের জন্য ধণাঢ্য ব্যক্তিতের দ্বারে দ্বারে ঘোরা, মিনতি করা, (এটি কষ্টকর হলেও সত্য যে সাহিত্য প্রকাশনার এই কাজে বিজ্ঞাপন ছাড়া কেউ সহযোগিতা করতে চায় না)।
সবশেষে নিজের পকেট থেকে টাকা ভর্তুকি দিয়ে ছোট কাগজটি প্রকাশ করা। এতকিছুর পরেও কেউ একজন যদি তার এ কাজের জন্য সামান্য প্রশংসা করেন, একটু অভিনন্দন জানান আরেকটু বেশী হলে এই কাজের জন্য উল্লেখিত ব্যক্তিটি গর্ববোধ করেন; তখন তিনি কাগজটির প্রকাশনার প্রসববেদনা সহ সকল কষ্ট ভুলে যান আর সামনে হাঁটার প্রেরণা খুঁজে পান। আসুন আমরা সবাই সত্য ও সুন্দরের প্রশংসা করি। ভালোকে ভালো বলা আর মন্দকে ঘৃণা করার চর্চা করি।
তরী’র এই পথ চলায় যার লিখেছেন, যারা বুদ্ধি, পরামর্শ আর শ্রম দিয়ে আমাদের পথ চলা সহজ করে দিয়ছেনে এবং যারা বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে অর্থ সহযোগিতা দিয়ে সাহিত্যকর্মীদের পাশে থাকছে আরো আরো পথ পাড়ি দেয়ার প্রেরণা দিচ্ছেন তাদের সবার প্রতি তরী পরিবার আমৃত্যু চিরঋণী-কৃতজ্ঞতা।
আশিক বিন রহিম
সম্পাদক: কবিতার কাগজ তরী