শীতের শেষে ফাল্গুনী হাওয়ায় থোকায় থোকায় দুলছে আমের মুকুল। শীতের শেষে আম গাছের কচি ডগা ভেদ করে সবুজ পাতার ফাঁকে হলদেটে মুকুল গুচ্ছ যেনো হাসছে। বাগানের সুনসান নীরবতা চিরে একটানা গান শোনাচ্ছে মৌমাছি। বাতাসে আমের মুকুলের মৌ মৌ গন্ধ ছড়াচ্ছে।
সোনালী-হলুদ রঙের মুকুলে ঢেকে গেছে আম গাছগুলো। মৌমাছিরা এখন আম গাছ থেকে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত। মধু মাসের আগমনী বার্তা শোনাচ্ছে আমের মুকুল। মুকুলের ভারে নুয়ে পড়েছে গাছের ডাল-পালা। ঢাকা পড়েছে গাছের পাতা।
কয়েক দিনের মধ্যে আমের মুকুল পরিনত হবে এক পরিপূর্ণ দানায়। আমের মুকুলে কৃষকের আগামীর স্বপ্ন। সেই সোনালি স্বপ্নকে বুকে ধারণ করেই বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত মতলবের আম চাষিরা।
এবারে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ও পৌরসভার বাড়িগুলোর আমগাছে মুকুলের বিপুল সমারোহ ঘটেছে। মুকুলে মুকুলে ভরে গেছে বাগানের প্রায় শতভাগ গাছগুলো। আম গাছের মুকুলের সমারোহে প্রকৃতি যেমন সেজেছে বর্নিল সাজে।
আমগাছগুলোতে মুকুলের ব্যাপক সমারোহ দেখে উপজেলার উদ্ভিদরা বলছেন এবারে মতলব উত্তরে আমের ব্যাপক ফলনের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। ফলে আম বাগানীদের মাঝে আশার আলো ফুঁটে উঠেছে। সে জন্যে তারা গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত হয়ে পরেছেন। কেউ বাগানে সেচ দিয়ে গাছ গুলোকে সতেজ করছেন। আবার কেউ বালাই নাশক ঔষধ প্রয়োগের মাধ্যমে বালাই নিধন করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।
বাগানীরা জানায়, যদি প্রাকৃৃতিক কোন দূর্যোগ না আসে, আর যে পরিমান মুকুল এসেছে তা যদি শেষ পর্যন্ত ধরে রাখা যায়, তা হলে এবারে নিজ এলাকায় আমের চাহিদা মিটিয়ে পার্শ্ববর্তি জেলা-উপজেলা গুলোতে যেমন রপ্তানি করা যাবে তেমনি বিগত বছরের লোকসান পুষিয়ে নিয়ে বার্তি আয় করা সম্ভব হবে।
মতলব উত্তর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মনজুর আহমদ মঞ্জু তার গ্রামের বাড়িতে নিজের এবং আত্মীয় স্বজনদের জন্য আ¤্রপালী, মোহনা, রাজভোগ, রুপালী, গোপালভোগ, ন্যাংড়া, ফজলি, হিমসাগর ও আশ্বিনিজাতসহ দেশী-বিদেশী উন্নত জাতের আমের বাগান গড়ে তুলেছেন। তার বাগানের প্রায় সবগুলো গাছেই আমের মুকুল এসেছে। মুকুল দেখে তিনি খুবই খুশি। বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হলে এবং আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে এবার আমের বাম্পার ফলনের আশা করছেন তিনি।
উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ সালাউদ্দিন চাঁদপুর টাইমসকে জানান, এ উপজেলার বিরাজমান আবহাওয়া ও মাটি আম চাষের জন্য উপযোগি। বৈরী প্রকৃৃতির বিরুপ প্রভাব থেকে আমের মৌলগুলো মুক্ত করতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার সরকারি, বেসরকারী, ব্যক্তি মালিকানা ও যৌথ মালিকানাধীন আমবাগানী এবং গাছের মালিকদেরকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করে আসছেন। বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হলে এবং আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে গত বছরের তুলনায় এ বছর অনেক বেশি আমের উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে তিনি আশা করেন।
প্রতিবেদক : খান মোহম্মদ কামাল
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১০ : ০০ পি.এম ১মার্চ ২০১৮ বৃহস্পতিবার
এইউ
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur