১১ অক্টোবর, রাত ৯ টা ৩০ মিনিট। সিলেটের লামাবাজার পয়েন্টে গাড়ির অপেক্ষা। হঠাত খেয়াল করলাম এক পাগলি মেয়ে। বুকে জড়িয়ে ধরা একটি ছবির ফ্রেম।
বার বার ফ্রেমের দিকে মেয়েটা তাকাচ্ছে আর ফ্রেমের সাথেই যেন ভাব বিনিময় করছে। কখনো হাসি, কখনো আল্লাদি, কখনো রাগ, কখনো অভিমান! কৌতুহলী মন কি আর গাড়িতে ওঠে! না,
এবার কাছেই গেলাম। দেখার চেষ্টা করলাম কি আছে এই ফ্রেমে। কাছে যেতেই মেয়েটি ফ্রেমটিকে জড়িয়ে ধরে কিছুটা সরে গেলো। মনে হলো কিছুটা লজ্জাও পাচ্ছে! দাঁড়ালাম ওখানেই।
দূর থেকে ইশারায় কথা বলার চেষ্টা করলাম। কেমন জানি মেয়েটি এড়িয়ে যাচ্ছে আমার ইশারা। খুব বুদ্ধিমানের মতো। জ্ঞান শক্তি থাকলেও হয়তো কোন মেয়ে এমন এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব না।
অবাক হয়ে গেলাম। আরো সময় নিলাম। প্রায় ১০ টা ১০ বাজে। দাঁড়িয়ে থাকলাম ওখানে। কিছুক্ষণ পর মেয়েটি ছবির দিকে তাকিয়ে কাঁদছে। দূর থেকে কিছুটা দেখতে পাচ্ছি ফ্রেমে একটি ছবি আর হাতে লিখা একটি চিঠি।
বুঝতে বাকি রইলো না আর। ধিরে ধিরে কাছে গেলাম। মায়ার সুরে বললাম কাঁদলে তার কষ্ট হবে। মেয়েটি আমার দিকে তাকালো। চোখ মুছে কেমন জানি কষ্ট লোকানোর বাহানা করে চলে যাচ্ছিলো। বললাম দেখতে কেমন সে? লজ্জার একটি হাসি দিয়ে এবার সরাসরি ফ্রেমটি দেখালো।
দেখলাম সুদর্শন একজন লোকের একটি ছবি আর ছবির পাশে হাতে লেখা একটি চিঠি। চিঠির সব কিছু কলমে লেখা হলেও শেষাংশে লাল রং তুলি দিয়ে লেখা ‘যদি কবু মরেও যাই তবু ভালবেসো আমায়’।
আহ! সাথে সাথে মেয়েটি ফ্রেমটি নিয়ে দ্রুত সরে যেতে চাইলো। জিজ্ঞাস করলাম কি হয়েছে ওর? শুধু হাত ইশারা করে আকাশ দেখালো। সম্ভবত লোকটি মারা গেছে বলতে চাইলো। হ্যাঁ, সে মারা গেছে কিন্তু পাগলিটা আজো ভালবাসে তাকে। বেঁচে থাকুক সকল পবিত্র ভালবাসা। জ্ঞান ফিরে পাক পাগলিটা।
বার্তা কক্ষ
১৩ অক্টোবর,২০১৮