ব্যাটে-বলে দারুণ পারফর্মেন্স দেখিয়ে অতি প্রয়োজনীয় জয় তুলে নিয়েছে মাহমুদ উল্লাহ রিয়াদের খুলনা টাইটান্স। সেকুজে প্রসন্নর ব্যাটিং তাণ্ডবে কিছুটা ভয়ের সৃষ্টি হলেও শেষ পর্যন্ত তা ধোপে টেকেনি।
অধিনায়ক রিয়াদের হাফ সেঞ্চুরি এবং পরবর্তীতে বোলারদের দাপটে ৯ রানে হার মানতে বাধ্য হয় পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে থাকা সাকিব আল হাসানের ঢাকা ডায়নামাইটস।
বিপিএলের চলতি আসরে শুরু থেকেই ম্যাজিক দেখানো খুলনা টাইটান্স আরেকটি ‘ম্যাজিক্যাল বিজয়’ অর্জন করে। খেলায় ম্যান অফ দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হন মোশাররফ হোসেন।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শনিবারের প্রথম খেলায় ঢাকা ডায়নামাইটসের বিপক্ষে টসে জিতে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেয় খুলনা।
অধিনায়ক মাহমুদ উল্লাহর হাফ সেঞ্চুরির সুবাদে ঢাকা ডায়নামাইটসকে ১৫৮ রানের টার্গেট দেয়। তবে শুরুটা এত সহজ হয়নি। দলীয় ১০ রানেই কেভিন কুপারের শিকার হন ওপেনার মেহেদী মারুফ (৬)।
স্কোরবোর্ডে আর ৪ রান যোগ হতেই জুনায়েদ খানের বলে মাহমুদ উল্লাহর হাতে ধরা পড়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন অভিজ্ঞ কুমার সাঙ্গাকারা (২)। দলীয় ২২ রানে আবারও উইকেটের পতন। শিকারী এবারও কেভিন কুপার। তার বলে সফিউলের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান আরেক নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান নাসির হোসেন (৭)।
৮ রানের ব্যবধানে আবারও বিপর্যয়। শফিউল ইসলামের দারুণ একটা বলে সরাসরি বোল্ড হয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন ম্যাট কলিস (৫)। কাঁধে কঠিন দায়িত্ব নিয়ে ক্রিজে আসেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। কিন্তু পারেননি।
ব্যক্তিগত ৮ রানে মোশাররফ হোসেনের ঘূর্ণিতে বোল্ড হয়ে ফিরে যান তিনি। জিততে হলে তখন ঢাকার প্রয়োজন আরও ৯০ রান। একাই ব্যাট চালাতে লাগলেন তরুণ মোসাদ্দেক হোসেন। এর মধ্যেই তাইয়েবুর রহমানের বলে জুনায়েদ খানের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন ডোয়াইন ব্র্যাভো (৪)।
দলীয় ৮৩ রানে ফিরে যান ঢাকা ডায়নামাইটসের সর্বোচ্চ স্কোরার মোসাদ্দেক হোসেন। ব্যক্তিগত ৩৫ রানে মোশাররফ হোসেনের বলে শুভাগত হোমের হাতে ধরা পড়েন তিনি। টিমটিম করে জ্বলতে থাকা ঢাকা ডায়নামাইটসের আশার প্রদীপ তখনই নিভে যেতে পারত। কিন্তু হঠাৎ ব্যাটিং তাণ্ডব শুরু করেন সেকুজে প্রসন্ন।
১৮ বলে বিপিএলের দ্বিতীয় দ্রুততম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। তার আগে ১৬ বলে দ্রুততম হাফ সেঞ্চুরি করেছিলেন আহমেদ শেহজাদ। এরপর মোশাররফ হোসেনের তৃতীয় শিকারে পরিণত হন সানজামুল ইসলাম (১২)।
ঢাকার কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেন কেভিন কুপার। ২২ বলে ৭ ছক্কায় ৫৩ রান করা সেকুজে প্রসন্নকে আরিফুল হকের ক্যাচে পরিণত করলে ১৪৮ রানেই অল আউট হয়ে যায় ঢাকা ডায়নামাইটস।
এর আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় খুলনা। দলীয় ৩ রানেই রানআউটের শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন হাসানুজ্জামান (০)। এরপর অ্যান্ড্রি ফ্লেচার এবং শুভাগত হোম মিলে ইনিংস গড়ার চেষ্টা করলেও বেশিদূর যেতে পারেননি।
প্রথম ধাক্কা সামলে জুটিতে ২০ রান তুলতে না তুলতেই সানজামুল ইসলামের বলে নাসির হোসেনের হাতে ধরা পড়েন ফ্লেচার (২০)। ১৬ বলের ইনিংসটিতে তিনি ১টি চার এবং ১টি ছক্কা হাঁকান।
এরপর ৪৪ রানের জুটি গড়ে বিপর্যয় সামাল দেন শুভাগত হোম এবং অধিনায়ক মাহমুদ উল্লাহ রিয়াদ। জুটি জমে উঠতেই প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন শুভাগত হোম। ২০ বলে ৪টি বাউন্ডারিতে তিনি করেন ২৪ রান।
শুভাগতর বিদায়ের পর অধিনায়ক রিয়াদ এবং নিকোলাস পুরান মিলে জুটি গড়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। ব্যক্তিগত ১৬ রানে ডোয়াইন ব্র্যাভোর বলে সাঙ্গাকারার বিশ্বস্ত হাতে ধরা পড়েন পুরান।
উইকেটের একপ্রান্ত আগলে রাখেন মাহমুদ উল্লাহ। ৩৯ বলে ২চার এবং ৪ ছক্কায় অর্ধশত পুরণ করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ৪৪ বলে ৬২ রান করে মোহাম্মদ শহীদের বলে ডোয়াইন ব্র্যাভোর হাতে ধরা পড়েন রিয়াদ।
ততক্ষণে তার ইনিংসে যোগ হয় আরও দুটি চার। দলীয় রানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তাইয়েবুর রহমান। ২২ বলে ১ চারে ২১ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ২০ ওভার শেষে ৫ উইকেট হারিয়ে খুলনার সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৫৭ রান।
দিনের দ্বিতীয় খেলায় সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় মুখোমুখি হবে গতকালের দুই পরাজিত দল রাজশাহী কিংস এবং কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। খেলা দুটি সরাসরি সম্প্রচার করবে চ্যানেল নাইন এবং সনি সিক্স।
নিউজ ডেস্ক ।। আপডটে, বাংলাদশে সময় ৮ :২৬ পিএম, ১৯ নভেম্বর ২০১৬, শনিবার
এইউ