আন্তর্জাতিক

হামলায় রক্তাক্ত প্যারিস : নিহত ১৬০

ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে সন্ত্রাসী হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৬০ জনে দাঁড়িয়েছে। স্থানীয় সময় শুক্রবার প্যারিসের ছয়টি স্থানে ভয়াবহ এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলার পর ফ্রান্সে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন প্রেসিডেন্ট ফ্রাসোয়া ওলাঁদ। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে সীমান্ত। খবর সিএনএন ও গার্ডিয়ান।

এদিকে আরেক খবরে জানানো হয়েছে সকল হামলাকারী পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে।

সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কনসার্ট দেখতে প্যারিসের বাটাক্লঁ কনসার্ট হলে কয়েক হাজার মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। এ সময় পাঁচ সন্দেহভাজন হামলাকারী হলে ঢুকে একে-৪৭ রাইফেল নিয়ে গুলি চালাতে শুরু করে। কনসার্ট হলে হামলায় অন্তত ১১২ জন নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশের অভিযানে আট হামলাকারী নিহত হয়েছে বলে গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এছাড়া ফ্রান্সের অন্যান্য স্থানে হমলায় ৪০ জন নিহত হয়েছে।

কনসার্টে অংশ নেয়া একজন সাংবাদিক বলেন, ১০ থেকে ১৫ মিনিট ধরে সন্ত্রাসীরা ওই হলে গুলি চালিয়েছে। এটা ছিল অত্যন্ত বেদনাদায়ক পরিস্থিতি। তারা নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে। এ সময় হামলাকারী দুই তরুণকে ফরাসি ভাষায় কথা বলতে শোনা গেছে। এছাড়া তারা ইরাক এবং সিরিয়ায় ফ্রান্সের অভিযানের বিষয়ে কথা বলেন।

আরেক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, হামলাকারীরা বয়সে তরুণ। হামলার সময় তারা আল্লাহু আকবার বলে শ্লোগান দিতে দেখেছেন।

এ ছাড়া দেশটির স্তাদে দে ফ্রান্স এবং কয়েকটি বার ও রেস্তোরাঁয় হামলার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে স্টেডিয়ামের কাছে আত্মঘাতী বোমা হামলা চালানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। স্টেডিয়ামের পাশে অন্তত তিনটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। ওই স্টেডিয়ামে তখন জার্মান ও ফ্রান্সের মধ্যে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হচ্ছিল । ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ওঁলাদ ওই ম্যাচ উপভোগ করছিলেন।

একটি এশীয় রেস্তোরাঁর সামনে আধা স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র দিয়ে গুলি চালায় একজন বন্দুকধারী। সেখানে অন্তত দশজনকে পড়ে থাকতে দেখা গেছে। এছাড়া সংঘর্ষে অন্তত দুইজন হামলাকারী নিহত হয়েছে বলে জানানো হয়।

প্রেসিডেন্ট ফ্রাসোয়া ওলাঁদ এ ঘটনাকে ‘নজিরবিহীন সন্ত্রাসী হামলা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। প্যারিসের বাসিন্দাদের যার যার বাড়িতে অবস্থান করতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। নিরাপত্তা জেরাদার করতে শহরে নামানো হয়েছে সেনাবাহিনী।

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ এই হামলার নিন্দা জানিয়ে হোতাদের বিচারের মুখোমুখি করার আহ্বান জানিয়েছে। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ফ্রান্সের পাশে থাকার কথা বলেছে ন্যাটো। এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, এই হামলা ছিল সংঘবদ্ধ। এ হামলা শুধু ফ্রান্সের উপরে নয়, এটা বিশ্ব মানবতার উপর হামলা।

ইউরোপে ২০০৪ সালের পর এটিই সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা। শুক্রবারের এ হামলায় আহত হয়েছেন অারো অন্তত দুই শতাধিক। এদের মধ্যে ৮০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ফ্রান্সের ব্যাঙ্গাত্মক ম্যাগাজিন শার্লি হেবদোর অফিসে দুই বন্দুকধারী হামলা চালায়। এ সময় অন্তত ১২ জন নিহত ও ১১ জন আহত হয়।

Share