হাজীগঞ্জ রেলষ্টেশনে দালাল ছাড়া মিলছেনা ট্রেনের টিকিট

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ রেলষ্টেশনে মিলছে না দালাল ছাড়া ট্রেনের টিকিট। আর এতে করে সাধারণ যাত্রীরা নির্ধারিত মূল্যে কাউন্টার থেকে ট্রেনের টিকেট না পেয়ে দালাল চক্রদের কাছ থেকে এক প্রকার বাধ্য হয়ে দ্বিগুণ দামে ক্রয় করতে হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।

আর এসব অনিয়ম প্রকাশ্যে ঘটে আসলেও যেন দেখার কেউ নেই।

জানা যায়, বাংলাদেশ রেলওয়ের উল্লেখযোগ্য কোনো সফলতা না থাকলেও যাত্রীসেবায় রেলের উপর নির্ভরশীল দেশের সাধারন মানুষ। হাজারো সমস্যা মোকাবিলা করে দৈনন্দিন প্রয়োজনে ট্রেনে ভ্রমণ করতে হয় তাদের। বাস, লঞ্চসহ বিকল্প যানবাহনের চেয়ে কম খরচে নিরাপদ গন্তব্য যেতে ট্রেনই সাধারন মানুষের প্রথম আগ্রহ।

দেখা যায়, কাজ-কর্ম, লেখা-পড়া, চাকরি-বাকরি, ব্যবসা-বাণিজ্য, ঘোরাঘুরি ইত্যাদি নানা কারণে শত শত মানুষ প্রতিদিন চাঁদপুর তথা হাজীগঞ্জ রেল ষ্টেশন থেকে দেশের বড় বড় শহরে যাওয়া আসা করছেন। তবে এই স্টেশন থেকে যাত্রায় নিত্যদিনের দুর্ভোগের এক নাম দালালচক্র। স্টেশন কর্তৃপক্ষ এই দালালদের কারবারে সহযোগী বলে অভিযোগ উঠেছে।

 গত কয়েক দিনে সরেজমিনে দেখা গেছে, কাউন্টারে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও কাঙ্খিত টিকিট পাচ্ছেন না যাত্রীরা। অন্যদিকে টিকিট বিক্রয়কারী (বুকিং মাস্টার) ট্রেনের টিকিট যাত্রীদের না দিয়ে দালালচক্রেরর মাধ্যমে বিক্রি করছে টিকিট।

হাজীগঞ্জ রেলস্টেশন থেকে দালালদের মাধ্যমে টিকিট কেনার বিষয়টিকে লজ্জাকর বলে মনে করেন সাধারণ যাত্রীরা।

কচুয়া উপজেলা থেকে আগত যাত্রী শরিফ ও রাসেল, ফরিদগঞ্জ উপজেলা থেকে আগত রাকিব ও মনির এবং হাজীগঞ্জের ইসমাইল হোসেন অভিযোগ করে চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, সাগরিকা ট্রেনের টিকিটের জন্য আমরা প্রায় ৩০ জনের মত লাইনে দাড়িয়ে ছিলাম, কিন্তু ১০ জনকে দেওয়ার পর বুকিং মাষ্টার হানিফ বলছে টিকিট নাই। এর পর এখানকার স্থানীয় তুহিন, পলাশ, রাজুসহ কয়েকজন দালালের কাছ থেকে চিটাগাং যাওয়ার জন্য ৭৫ টাকার টিকেট কিনেছি ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায়। এরা আগে থেকেই কাউন্টারের বুকিং মাষ্টারের সাথে যোগসাজশ করে তাদের দখলে টিকিট নিয়ে রাখে। দ্বিগুণ দামে টিকিট বিক্রি করে আর তার ভাগ টিকিট মাষ্টারও পায়।

সরকারি মেঘনা ট্রেনের সহকারী রেল মাষ্টার সুজাউদ্দিন চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, সাগরিকা ট্রেন কোম্পানির নিয়ন্ত্রণে হওয়ায় এস এ টেড্রার্সের আন্ডারে বর্তমানে ১৮ টি ট্রেন চলাচল করছে। তাদের কাউন্টার বাহিরে এবং তাদের বুকিং মাষ্টার আলাদা। আমাদের এখানে যাত্রী তুলনায় টিকিটের সংখ্যা কম। অনেক সময় আগে থেকেই বাহিরের কিছু লোকের মাধ্যমে টিকেট সংগ্রহ করে রাখে যে কারনে বিশেষ কোন দিনের যাত্রীরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে টিকিট না পেয়ে অভিযোগ করছে।

হাজীগঞ্জ রেল ষ্টেশনের টিকিট বুকিং মাষ্টারদের অনিয়ম ও দালাল চক্রের নৈরাজ্যের হাত থেকে রক্ষা পেতে চাঁদপুর রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করেন ভুক্তভোগী যাত্রী সাধারণ।

হাজীগঞ্জ রেল ষ্টেশন মাষ্টার মারুফ হোসেন চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, যাত্রীসাধারণ লিখিত অভিযোগ করলে দালাল চক্রের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

প্রতিবেদকঃ জহিরুল ইসলাম জয়, ১১ ডিসেম্বর ২০২১

Share