চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে মাদ্রাসা ছাত্রীর অনৈতিক ভিডিও ধারণ করে দু’বছর ধরে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি স্থানীয় ভাবে জানাজানির পর পুলিশ মেয়েটিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
এ বিষেয় সোমবার (৩১ জুলাই) উপজেলার কালচোঁ উত্তর ইউনিয়নের খিলপাড়া মজুমদার বাড়িতে শালিস বৈঠক চলা অবস্থায় হাজীগঞ্জ থানার পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওই মাদ্রাসা ছাত্রীকে প্রাথমিক আলামত সংগ্রহে থানায় নিয়ে আসে এবং খবর পেয়ে ধর্ষক এলাকা থেকে পালিয়ে যায়।
সম্প্রতি এ উপজেলার গন্ধর্ব্যপুর উত্তর ইউনিয়নের তারালিয়া গ্রামের নদী বাড়ির আবদুর রশিদের ছেলে নুরুল আমিনকে এলাকার একাধিক নারীর সাথে অশ্লীল কর্মের ভিডিওসহ গ্রেফতারের পর এ ঘটনায় উপজেলাজুড়ে বেশ চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে।
জানা যায়,মজুমদার বাড়ির মৃত সৈয়দ আহম্মেদের ছেলে নাছির হোসেন (৩৫) একই বাড়ির এক দিনমজুর মেয়ে ফিরোজপুর মাদ্রাসার ৯ম শ্রেণির ছাত্রীকে ৩ বছর পূর্ব থেকে ইভটিজিংয়ের করে আসতো।
এ ব্যাপারে খিলপাড়া গ্রামের মহিলা মেম্বার ফেরদৌশি চাঁদপুর টাইমসকে জানান, ‘বিষয়টি স্থানীয়ভাবে ছড়িয়ে পড়লে ভুক্তভোগী মেয়েটি আমাকে জানায়, দু’ বছর ধরে নাছির মেয়েটির ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে আসছে।
ক’বছর আগে নাছির মেয়েটিকে রাতের বেলা একা পেয়ে বাড়িতে টিউবওয়েলে কলের গোড়ায় পানির জন্য গেলে সেখানে মেয়েটি জোরপূর্বক জড়িয়ে ধরে ক’টি ছবি ও ভিডিও ধারণ করে। তা’থেকে মেয়েটিকে হুমকি দেয় যদি তার কু-প্রস্তাবে রাজি না থাকে তাহলে এসব ছবি ও ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেবো।
মেয়েটি লজ্জা ও ভয়ে মূখ খুলতে সাহস পায়নি। আর এ সুযোগে লম্পট নাছির প্রায় রাতে মেয়েটির ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে আসছে এবং তার একাধিক ধর্ষণের ভিডিও মোবাইলে ধারণ করে।’
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়,নাছির এ পর্যন্ত ৩টি বিয়ে করেছে। দু’ স্ত্রী শারীরিকভাবে অত্যাচারের শিকার হয়ে পালিয়ে যায়। বর্তমানে কচুয়া উপজেলার এক নারী নাছিরের ৩য় স্ত্রী হিসেবে সংসার করছে। নাছিরের বর্তমানে পূর্বের এক ছেলে ও বর্তমান সংসারের এক ছেলে রয়েছে ।
এদিকে বাড়ির একাদিক নারী পুরুষ লম্পট নাছিরের চরিত্র সম্পর্কে বলেন, সে এ পর্যন্ত তিনটি বিয়ে করেছে। এমনকি আমাদের বাড়ির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ১০/১২ টি মেয়ের ইজ্জতের ওপর আঘাত করেছে। এগুলোর অনেক ভিডিও তার মোবাইল ফোনে রয়েছে। এছাড়া গ্রামের বাহিরেও অনেক যায়গা থেকে তার পরিবারের কাছে মানুষ এসব অভিযোগ নিয়ে আসতো।
মাদ্রাসার ছাত্রীর মা বলেন,‘আমি নাছিরকে রোববার (৩০ জুলাই) রাতে আমার ঘরে হাতেনাতে ধরলে সে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। তার পর বিষয়টি আমাদের বাড়ির মহিলা মেম্বার ফেরদৌসি বেগমসহ তার পরিবারকে জানানো হয়।’
অভিযুক্ত নাছিরের মা ও চাচা দেলোয়ার হোসেন বলেন,‘নাছির বাড়িতে নেই, বিষয়টি সত্যতার জন্য মেয়েটিকে পুলিশ পরীক্ষার জন্য নিয়ে গেছে। আমরা পারিবারিকভাবে বিষয়টি সমাধান করতে পারতাম।’
এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শামসুজ্জামান জানান, ‘মেয়েটির বাবা বাদি হয়ে ধর্ষক নাছিরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে যার মামলা নং ০১,তাং-০১/০৮/১৭। মেয়েটির ধর্ষণের আলামতের জন্য পরীক্ষা শেষে পরিবারের হেফাজতে রাখা হয়েছে। ধর্ষক নাছিরকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’
প্রতিবেদক-জহিরুল ইসলাম জয়
: আপডেট, বাংলাদেশ ৮: ৫০০ পিএম,২ আগস্ট ২০১৭,বুধবার
ডিএইচ