জহিরুল ইসলাম জয় | আপডেট: ০৯:০২ অপরাহ্ণ, ১৯ আগস্ট ২০১৫, বুধবার
কোনোপ্রকার রক্ষণাবেক্ষণ অফিস ছাড়াই জোরপূর্বক মূল সড়কের উপর চালিয়ে যাচ্ছে বছরের পর বছর ট্রান্সপোর্ট ব্যবসা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোড-আনলোডের মধ্য দিয়ে সৃষ্টি হয় যানজট, দুর্ভোগে পতিত যাত্রী সাধারণ ও পার্শ্ববর্তী ব্যবসায়ীদের।
দৈনিক মাত্র ৬০ টাকার জন্য পৌর কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসন দুর্ভোগ দেখেও না দেখারমত সময় পার করে বলে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অভিযোগ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চাঁদপুর-কুমিল্লা হাইওয়ে সড়কের হাজীগঞ্জ পশ্চিম বাজার বিশ্বরোডের দু’পাশে ৩টি ট্রান্সপোর্টের দৈনিক প্রায় ১০/১২ টি গাড়ি লোড-আনলোড হচ্ছে।
এসব ট্রান্সপোর্টের নিজস্ব জায়গা বা অফিস না থাকায় এক একটি গাড়ি লোড-আনলোডে সময় প্রায় ৩/৪ ঘণ্টা অতিবাহিত হতে দেখা যায়। ওই সময় দেখা দেয় দু’দিকের একাধিক ছোট বড় গাড়ির দীর্ঘ যানজট।
ট্রাফিক পুলিশকে পরিস্থতি সামাল দিতে অনেক সময় হিমসিম খেতে দেখা যায়। এখানকার ট্রান্সপোর্ট পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে রাজনীতিক দলের কিছু নেতা। যার কারণে সব কিছু স্বাভাবিকভাবেই মেনে নিতে হচ্ছে প্রশাসন ও পার্শ্ববর্তী ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীদের।
হাজীগঞ্জে বর্তমানে খাজা ট্রান্সর্পোট, সেভেন স্টার ট্রান্সপোর্ট ও হাজীগঞ্জ ট্রান্সপোর্টের ব্যবসা রয়েছে। এর মধ্যে এদের না আছে অফিস, না আছে নিজস্ব গাড়ি রাখার স্থান। সব যেনো নিজ গতিতে রাজনৈতিক নেতাদের নাম ভাঙ্গিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে কিছু চক্র ট্রান্সপোর্ট ব্যবসা।
খাজা ট্রান্সপোর্ট পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন জাহাঙ্গির আলম ও আলমগীর হোসেন। সেভেন স্টার ট্রান্সপোর্ট পরিচালনায় ৪ জন রয়েছেন, তবে লেবাররা তাদের নাম জানে না বলে সাংবাদিকদের জানান। ইতোমধ্যে হাজীগঞ্জ ট্রান্সপোর্টে ডাকাতির ঘটনায় বর্তমানে ওই ট্রান্সপোর্টের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
ভুক্তভোগী মালেক এন্টারপ্রাইজ ও চিটাগাং স্টোরের মালিক ইউসুফ আলী অভিযোগ করে বলেন, আমার প্রতিষ্ঠানের সামনে ট্রান্সপোর্টের গাড়ি একটার পর একটা লোড-আনলোড করছে। আমাদের ব্যবসার চরম ক্ষতি হচ্ছে। তারমতো এখানকার অনেক ব্যবসায়ী তাদের ব্যবসার ক্ষতি হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন।
একাধিক অভিযোগ রয়েছে, এসব ট্রান্সপোর্ট পরিচালনার দায়িত্বরত লোকদের বিরুদ্ধে। হাজীগঞ্জ বাজারের ছোট-বড় প্রায় সকল ব্যবসায়ীর মালামালই ঢাকা থেকে আসে। অনেক সময় মালামাল বৃষ্টিতে কিংবা লোড আনলোডে তাড়াতাড়ি করতে গিয়ে ট্রান্সপোর্ট লেবাররা অনেক মাল নষ্ট করে ব্যবসায়ীদের গছিয়ে দেয়। সড়কের পাশে মালামাল পড়ে থাকায় অনেক সময় চুরি হওয়ার অভিযোগ রয়েছে ট্রান্সপোর্ট মালিকদেরও।
বাজার ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন নিজস্ব অফিস না থাকায় চুরি, মালামাল নষ্টসহ নানা অভিযোগ ব্যবসায়ী সমিতিতে আসে।
খাজা ট্র্যান্সর্পোটের পরিচালক আলমগীর হোসেন বলেন, আমরা দৈনিক প্রতি গাড়ি লোড-আনলোড করতে পৌরসভাকে ৬০ টাকা করে দেই। তারাই আমাদের স্থান নির্ধারণ করে দিয়েছে।
এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আহসান হাবীব অরুণ বলেন, আমরা ইতোপূর্বে পৌর মেয়রকে ট্রান্সপোর্ট স্থান নির্ধারণে এবং তাদের নিজস্ব আয়ে পরিচালনার তাগিদ দিয়েছি। মেয়র কীভাবে তাদের কাছ থেকে কর আদায় করে অনুমতি দিয়েছে তা আমাদের জানা নেই।
তবে হাজীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আব্দুল মান্নান খান এসব অভিযোগ মিথ্যা বলে জানান।
চাঁদপুর টাইমস : প্রতিনিধি/এমআরআর/২০১৫