হাইমচর করেসপন্ডন্ট :
চাঁদপুরর জেলার হাইমচর উপজেলার চরপোড়ামুখী গ্রামের সিঙ্গাপুর প্রবাসী মো. মুনছুর বেপারী ও তার পরিবাবের যৌতুক দাবি মিটাতে না পারায় স্ত্রী মিসেস রুমা আক্তার ও তার পিতা লোকমান মিজিকে নির্মম নির্যাতন করা হয়েছে।
এদের বাঁচাতে এসে ব্যবসায়ী আবু জাফরও গুরুতর আহত হয়েছে। স্থানীয়রা স্ত্রী রুমা ও তার পিতা লোকমান মিজি এবং ব্যবসায়ী আবু জাফরকে মুমূর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে হাইমচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে।
এনিয়ে ব্যবসায়ী আবু জাফর হাইমচর থানায় মামলা করেছে। রুমা আক্তার স্বামী ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে হাইমচর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। বর্তমানে প্রবাসীর পরিবারের হুমকিতে অসহায় রুমার পরিবার চরম আতংকে দিনাতিপাত করছে।
জানা যায়, হাইমচর উপজেলার চরপোড়ামূখী গ্রামের সিঙ্গাপুর প্রবাসী মোঃ মুনছুর বেপারীর সাথে এক মাস পূর্বে একই গ্রামের লোকমান মিজির মেয়ে শিক্ষিকা রুমা আক্তারের সাথে ৩ বছর পূর্বে বিদেশ যাওয়ার সময় সোনাকাপড়ের বিনিময়ে বিয়ের কথাবার্তা চূড়ান্ত হয়। লোকমান মিজি হবু জামাই মুনছুর বেপারীকে বিদেশ যাওয়ার জন্য টাকা-পয়সা দেন। তখন কথা ছিল বিদেশ থেকে এসে রুমাকে বিয়ে করে ঘরে তুলবে। মুনছুর বেপারী ২ মাস পূর্বে সিঙ্গাপুর থেকে এসে পারিবারিকভাবে বিয়ে সম্পন্ন করে রুমাকে ঘরে তুলে। বিয়ে হলেও চতুর মুনছুর বেপারী বিয়ের রেজিস্ট্রেশন করেনি। সে জানায়, বিয়ের পর আমি অন্যত্র বিয়ে করলে অনেক টাকাপয়সা স্বর্ণালংকার পেতাম। তুমি তোমার বাবার বাড়ি হতে আমাকে টাকা এনে দাও। রুমা বাবার বাড়ি হতে টাকা এনে দিতে অস্বীকার করলে শুরু হয় তার উপর অত্যাচার-নির্যাতন। রুমার শ্বশুর লতিফ বেপারী শ্বাশুড়ী, দেবর জহির, ইউসুফ, তোফায়েল ও ননদ রেহানা আক্তারও রুমাকে বিভিন্ন সময় শারিরিক ও মানসিক নির্যাতন চালায়।
১০ জুন বুধবার রুমার বাবা লোকমান মিজি আম-কাঁঠাল নিয়ে মেয়ের শ্বশুর বাড়িতে এলে শ্বশুরের সাথে জামাতা যৌতুকের টাকা নিয়ে তর্কে লিপ্ত হয় এবং মুনছুর গাজীর বাবা লতিফ গাজী রুমার বাবার গলায় চাপ দিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। বাবাকে বাঁচাতে এলে রুমা ও তার বাবার উপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অর্তকিত হামলা করে স্বামী মুনছুর বেপারী, শ্বশুর লতিফ বেপারী, শ্বাশুড়ী, দেবর ও ননদরা। মেয়ে ও বাবাকে বাচাতে এসে এদের হামলায় ব্যবসায়ী আবু জাফরও গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা মুমুর্ষ অবস্থায় রুমা তার বাবা ও আবু জাফরকে হাইমচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লক্সে এনে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে রুমা জানান, ‘পারিবারিকভাবে আমার সাথে মুনছুর বেপারীর বিয়ে হওয়ার পর আমার সাথে কিছ দিন সাংসারিক জীবন সুখের হলেও পরে আমার শ্বশুড় শ্বাশুড়ী ও তার অসৎ বন্ধুর কুপরামর্শে আমার নিকট যৌতুক দাবি করে। আমি একটি কিন্ডারগার্টেনে চাকরি করি। সে চাকরিও ছেড়ে দিতে বলে। আমি অস্বীকার করলে শুরু করে আমার ওপর নির্যাতন। গত বুধবার আমাকে ও আমার বাবাকে নির্মম নির্যাতনের পর আমরা হাসপাতালে আসলে তড়িঘড়ি বিদেশ চলে যান আমার স্বামী মুনছুর বেপারী। প্রশাসনের নিকট আমি ও আমার বাবার ওপর মুনছুর বেপারী ও তার পরিবারের নির্মম নির্যাতনের বিচার চাই।’
রোববার, ১৪ জুন ২০১৫ ১০:২৭ অপরাহ্ন
চাঁদপুর টাইমস : প্রতিনিধি/ এমআরআর/২০১৫
চাঁদপুর টাইমস’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।