Home / জাতীয় / হজ ব্যবস্থাপনায় দুর্নীতির অভিযুক্তরাই তদারক কমিটিতে
হজ ব্যবস্থাপনায় দুর্নীতির অভিযুক্তরাই তদারক কমিটিতে

হজ ব্যবস্থাপনায় দুর্নীতির অভিযুক্তরাই তদারক কমিটিতে

বিগত সময়ের আর্থিক দুর্নীতির ধারাবাহিকতায় এবারো সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণেই থাকছে হজ ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব। এছাড়া প্রভাবশালী চক্রের কারণে মন্ত্রণালয়ের তদারকি কমিটিতেও রয়েছেন অভিযুক্তরাই।

তবে ধর্ম সচিব জানিয়েছেন, আর্থিক দুর্নীতিসহ অন্যান্য অনিয়ম রোধে সর্বোচ্চ চেষ্টা রয়েছে তাদের। মন্ত্রণালয়ের কেউ অনিয়মে জড়ালে ছাড় দেওয়া হবে না বলেও জানিয়েছেন তিনি।

চলতি বছর হজে যাওয়ার অনুমতি রয়েছে ১ লাখ ১ হাজার ৭৫৮ জনের। এর মধ্যে সরকারি কোটা ১০ হাজার। নির্ধারিত সরকারি এ কোটার মধ্যে নিবন্ধন হয়েছে ৫ হাজার ২০০ জনের। বাকি রয়েছেন ৪ হাজার ৮০০ জন।

এদিকে, সরকারি ব্যবস্থাপনার অপূর্ণ থাকা কোটা বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় প্যাকেজ আকারে নিতে ইতোমধ্যেই দৌঁড়-ঝাপ শুরু করেছে সিন্ডিকেট।

এ বিষয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব আব্দুল জলিল বলেন, সরকারি কোটা বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় নেওয়ার বিষয়ে সৌদি কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তারা সম্মত হলে বেসরকারি ব্যবস্থাপনা থেকে হাজীদের নেওয়া হবে। তবে তা প্যাকেজ আকারে নয়, হবে নিবন্ধন ক্রমিক অনুযায়ী।

অপরদিকে, গত বছর অতিরিক্ত ৫ হাজার হজযাত্রীর কাছ থেকে বাড়তি অর্থ আদায়সহ সরকারি অর্থ লোপাটের অভিযোগ ওঠে। অতিরিক্ত অর্থ আদায়সহ নানান অনিয়মের কারণে হজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) নেতাসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন পদক্ষেপও নেয় সরকার।

তবে সিন্ডিকেটের কারণে গত বছর হাবের মাধ্যমে প্যাকেজ সিস্টেমে অতিরিক্ত হজযাত্রী পাঠানোর ফাইল গায়েব হয়ে যায়। পরে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সচিব ওই ফাইলটি উদ্ধার করেন। কিন্তু সিন্ডিকেটের কারণে ওই ঘটনায় কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি মন্ত্রণালয়।

পাশাপাশি অতিরিক্ত হজযাত্রী পাঠানোর ঘটনায় সরকারের কাছে ঋণ নেওয়া টাকা আদায়ে গত ৯ জুন হাব বরাবর চিঠি দেয় ধর্ম মন্ত্রণালয়। কিন্তু হাবের চাপের মুখে পরদিনই ওই চিঠি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। এমনকি ঋণের টাকার সাড়ে ১১ কোটি টাকা এখনও ফেরত দেয়নি সংগঠনটি।

অন্যদিকে, ট্রলিব্যাগ নিয়ে অনিয়ম ঠেকাতে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে হাবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি। অনিয়মের সুযোগ রেখেই হাব ট্রলিব্যাগ সংগ্রহ ও সরবরাহে গত ২০ এপ্রিল পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এ প্রেক্ষিতে গত ২৮ এপ্রিল উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ট্রলিব্যাগ সংগ্রহ ও সরবরাহে সংশোধিত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের জন্য চিঠি ইস্যু করে মন্ত্রণালয়। কিন্তু হাব তা’ও মানেনি।

অপরদিকে, ওমরা হজের নামে মানবপাচারের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর ৬৯টি এজেন্সির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল। পরে আপিল আবেদনের মাধ্যমে ১৯টি এজেন্সির বিরুদ্ধে শাস্তি কমিয়ে দেওয়া হয়। বাকি ৫০টি এজেন্সির শাস্তির বিষয়টি ঝুলে যায় সিন্ডিকেটের তদবিরে। শুধু তাই নয়, হজে মানবপাচারের অভিযোগ নিষ্পত্তিও আটকে আছে সেভাবেই।

এসব ঘটনার পর গত ১৪ জুলাই সার্বিক হজ ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম রোধ এবং সরকারি কোটা পূরণে একটি তদারকি কমিটি গঠন করে মন্ত্রণালয়।

সংসদ সদস্য বজলুল হারুনকে আহ্বায়ক করে ৯ সদস্যের এই কমিটি গঠন করা হয়। তবে অভিযোগ রয়েছে মন্ত্রণালয়ের মাত্র দুইজন প্রতিনিধি রেখে হাবের অভিযুক্ত তিন নেতাকে ওই কমিটির সদস্য করা হয়েছে। এতে সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণেই থাকছে কমিটি। এ চক্রের তদবিরেই কমিটিতে রাখা হয়েছে মন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) ও এপিএসকে।

অভিযুক্ত ও বিতর্কিতদের কমিটিতে রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে ধর্ম সচিব আব্দুল জলিল বলেন, কমিটি করেছেন মন্ত্রী। তিনি চেষ্টা করছেন হজ ব্যবস্থাপনা সুষ্ঠু ও সুন্দর করতে।

এ বিষয়ে কমিটির সদস্য অতিরিক্ত সচিব শহীদুজ্জামান বলেন, কমিটিতে সদস্য সচিবসহ দুই জন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি রয়েছে। আমরা অনিয়ম করতে দেব না। (উৎস-বাংলানিউজ)

নিউজ ডেস্ক : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৮:০০ এএম, ১৮ জুলাই ২০১৬, সোমবার
ডিএইচ

Leave a Reply