Home / উপজেলা সংবাদ / ফরিদগঞ্জ / স্বামী প্রবাসে থেমে থাকেননি ফরিদগঞ্জের কুলছুমা
স্বামী প্রবাসে

স্বামী প্রবাসে থেমে থাকেননি ফরিদগঞ্জের কুলছুমা

সখের তোলা লাখ টাকা! এমন রসালো কথার বাস্তব রূপ দিলেন গৃহবধূ উম্মে কুলছুম। স্বামী প্রবাসে থাকেন। এতে তার পারিবারিক স্বচ্ছলতাও রয়েছে। তারপরও নারী হয়ে বেকারত্বকে এই গৃহবধূ ঘৃণার চোখে দেখতেন। তাই সেই লজ্জা থেকেই তার ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা। অবশেষে সফলও হলেন।

একটি দুটি থেকে এখন কয়েক হাজার মুরগী তার খামারে। বলছিলাম, চাঁদপুরে ফরিদগঞ্জের গৃহবধূ উম্মে কুলছুমের কথা। উপজেলার বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নের সকদীরামপুর গ্রামে অদ্যম এই নারীর বাড়ি।

খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, একদশক আগে প্রবাসী নাজির আহমেদের সঙ্গে বিয়ে হয় জেলার হাজীগঞ্জের মেয়ে উম্মে কুলছুমের সঙ্গে। মাত্র এসএসসি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন তিনি। বিয়ের পর প্রবাসী স্বামীর সংসার ভালোই কাটছিল তার। কিন্তু শ্বশুরবাড়িতে গৃহবধূ হিসেবে নিজকে বেকার ভাবতেই তার ঘৃণা জন্মে। ফলে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা শুরু করেন উম্মে কুলছুম।

প্রথমে দুই চারটি দেশি জাতের মুরগী লালন পালন শুরু করেন তিনি। এতে ডিম বিক্রি করে আয়ের পথ দেখলেন উম্মে কুলছুম। হঠাৎ তার মাথায় চাপলো মুরগীর খামার গড়ে তোলবেন। যেই কথা সেই কাজ। নিজের জমানো আর স্বামীর সামান্য কিছু অর্থ দিয়ে ছোট আকারের খামার গড়ে তুললেন তিনি। এতে নতুন করে শুরু হলো জীবন গড়ার আরেক যুদ্ধ। তবে এই যুদ্ধে মাত্র তিনবছরে জ্যামিতিক হারে ঘুরে দাঁড়ালেন গৃহবধূ উম্মে কুলছুম।

এখন তার খামারে কোয়েল পাখি, ব্রয়লার-লেয়ার মিলে প্রায় পাঁচ হাজার মোরগ মুরগী। উম্মে কুলছুম জানালেন, প্রতিদিন প্রায় দেড়হাজার কোয়েল পাখির ডিম এবং লেয়ার মুরগীর প্রায় একহাজার ডিম বিক্রি করেন। তার খামারে বেশ কয়েকজন কাজ করছেন। এতে মাসে তার আয় হচ্ছে ৫০-৬০ হাজার টাকা। শুধু তাই নয়, কোয়েল পাখি আর মুরগীর খামারের পাশাপাশি ছাগলের খামারও গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন। সেখানে এখন ১০টি ছাগল লালন পালন করা হচ্ছে।

উম্মে কুলছুম আরো জানান, বেকার জীবন শুধু ছেলেদেরকেই নয়, মেয়েদেরকেও বিব্রত এবং লজ্জায় ফেলে দেয়। আমার জীবনেও এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়। তাই ঘরের বসে থাকার চিন্তা বাদ দিয়ে, তিনবছর আগে- নিজেই আয়ের পথ তৈরিতে উদ্যেগী হয়েছি। এখন সেখানে অনেক টাকার পুঁজি। তাই পুঁজি আরো বাড়াতে সমিতি থেকে ঋণ নিয়েছি। চারবছরের শিশু মেয়েকে নিয়ে আগামীতে সুখের স্বপ্ন বুননের কথা জানান, উম্মে কুলছুম।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সফিকুর রহমান পাটোয়ারী জানান, উম্মে কুলছুমের গড়ে উঠা খামার থেকে প্রতিদিন জেলার বিভিন্নস্থান থেকে পাইকাররা এসে ডিম ক্রয় করছেন। তিনি আরো জানান, এলাকায় বেকারদের ঘুরে দাঁড়ানোর পথপ্রদর্শক হচ্ছেন, গৃহবধূ উম্মে কুলছুম।

করেসপন্ডেট