Home / কৃষি ও গবাদি / স্থায়ী কমিটির বৈঠকে যুবদল নিয়ে তুমুল বিতর্ক
jubodol-1

স্থায়ী কমিটির বৈঠকে যুবদল নিয়ে তুমুল বিতর্ক

বিএনপি স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নেতাদের আলোচনায় প্রাধান্য পেয়েছে ইউপি নির্বাচনে মনোনয়ন ও দলের কমিটি গঠনে পদ বাণিজ্যের অভিযোগের বিষয়টি। মনোনয়ন ও পদ বাণিজ্য নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের সূত্র ধরে বৈঠকের শুরুতেই এ নিয়ে আলোচনা তুলেন কয়েকজন নেতা।

বিএনপির ইমেজ সঙ্কটের প্রশ্ন তুলে তারা এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের প্রস্তাব দেন। সেই সঙ্গে সুষ্ঠু তদন্তের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ারও পরামর্শ দেন।

এ সময় স্থায়ী কমিটির দুইজন নেতা এসব অভিযোগকে সরকারের অপপ্রচারের অংশ বলে মন্তব্য করেন। তারা বলেন, দল এখন একটি সঙ্কটকাল পার করছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝি তৈরি করে সে সঙ্কটকে আরও জটিল করে তুলতে চাইছে সরকার।

এ নিয়ে নেতারা পক্ষে-বিপক্ষে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে নেতাদের বিতর্ক থামিয়ে দিয়ে চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া পরিস্থিতি শান্ত করেন। তিনি বলেন, বিএনপির সাংগঠনিক শক্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে সরকার নানা অপচেষ্টা চালাচ্ছে। বিষয়টি বিবেচনায় রেখেই আমাদের কাজ করতে হবে।

এ সব অভিযোগের ব্যাপারে প্রয়োজনে যথাযথ পদক্ষেপ নেবেন বলেও নেতাদের আশ্বস্ত বৈঠকের এ পর্যায়ে নেতারা দলের কেন্দ্রীয় কমিটি পুনর্গঠনের ব্যাপারে চেয়ারপারসনকে তাগিদ দেন। তারা বলেন, গণমাধ্যমে প্রতিদিনই এ নিয়ে নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে। কমিটি পুনর্গঠন যত বিলম্ব হবে এ নিয়ে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠবে। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে দলের সকল কমিটি গঠন করা উচিত।

নেতাদের তাগাদার জবাবে চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেন, কমিটি পুনর্গঠন নিয়ে কাজ চলছে। দ্রুতই তা ঘোষণা করা হবে। বৈঠক সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছেন।

বৈঠকের এক পর্যায়ে খালেদা জিয়া ঢাকা মহানগর বিএনপিকে দুইভাগে বিভক্ত করার ব্যাপারে নেতাদের মতামত জানতে চান। তিনি এ ব্যাপারে বিশেষ করে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের মতামত জানতে চান।

এ সময় খালেদা জিয়া নিজেই মহানগর বিএনপির নেতৃত্বে কয়েকজন সম্ভাব্য নেতার নাম উল্লেখ করে তাদের ব্যাপারে নেতাদের মতামত জানতে চান। ঢাকা মহানগর বিএনপিকে দুইভাগে বিভক্ত করার ব্যাপারে স্থায়ী কমিটির সদস্যরাও নিজেদের নানা যুক্তি তুলে ধরেন। তাদের কেউ কেউ কয়েকজন নেতার নামও উপস্থাপন করেন। তবে খালেদা জিয়া বৈঠকে এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত জানাননি।

সূত্র জানায়, বৈঠকে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী নিয়েও গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা হয়। এ আলোচনায় সংবিধান সংশোধনীর বিষয়ে দলের পক্ষ থেকে জনমত গঠন এবং এর নেতিবাচক দিকগুলো প্রচারণার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। স্থায়ী কমিটির এক সদস্য জানান, বৈঠকে দলের অন্যতম অঙ্গ সংগঠন জাতীয়তাবাদী যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল পুনর্গঠনের ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা হয়। নেতারা সর্বসম্মতভাবে পর্যায়ক্রমে এ দুইটি কমিটি পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত নেন।

দলীয় সূত্র জানায়, এ দুইটি কমিটি চূড়ান্ত হয়েছে। আজকালের মধ্যেই যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নতুন কমিটির ঘোষণা আসতে পারে। এর আগে রাত সাড়ে ৯টায় শুরু হয়ে বৈঠকটি চলে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে দীর্ঘ দুই ঘণ্টাব্যাপী এ বৈঠকে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান ও নজরুল ইসলাম খান অংশ নেন। উল্লেখ্য, ১৯শে মার্চ দলের ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলের পর এটিই ছিল বিএনপি স্থায়ী কমিটির প্রথম স্থায়ী কমিটির বৈঠক।