Home / জাতীয় / অর্থনীতি / স্কুল শিক্ষার্থীর ১০ টাকার ব্যাংক একাউন্টে ১৭শ কোটি টাকা জমা
Bangladesh Bank

স্কুল শিক্ষার্থীর ১০ টাকার ব্যাংক একাউন্টে ১৭শ কোটি টাকা জমা

দেশে স্কুল শিক্ষার্থীদের মধ্যে সঞ্চয় প্রবণতা বাড়ছে। বর্তমানে সারা দেশে স্কুলগুলোতে ২৩ লক্ষাধিক ছেলেমেয়ের ব্যাংক হিসাব রয়েছে। এসব হিসাবে তারা প্রায় ১ হাজার ৭২৫ কোটি টাকা জমা রয়েছে ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা যায় ।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরের মার্চ শেষে স্কুল শিক্ষার্থীদের ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৩ লাখ ২৯ হাজার ১৩১টি। এক বছরের ব্যবধানে স্কুল ব্যাংকিং হিসাব সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ৩ লাখ ৭৪ হাজার ৯০০টি। অর্থাৎ এক বছরে হিসাব সংখ্যার প্রবৃদ্ধি ১৯ দশমিক ১৮ শতাংশ। এ সময়ে স্কুল শিক্ষার্থীদের জমানো আমানত বেড়েছে ৯৯ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, বড়দের পাশাপাশি ছোটরাও এখন ব্যাংকমুখী হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক স্কুল শিক্ষার্থীদের মধ্যে সঞ্চয় প্রবণতা তৈরি করতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছে, যার ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে পুরো ব্যাংক খাতে।

কেন্দ্রিয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী স্কুল শিক্ষার্থীদের হিসাব সংখ্যা ও টাকা জমার স্থিতির দিক থেকে বেসরকারি ব্যাংকের অবদান সবচেয়ে বেশি। বেসরকারি ব্যাংকগুলো ১৬ লাখ ১২ হাজার ১১৩টি ব্যাংক-হিসাব খুলেছে,যা মোট স্কুল ব্যাংকিং হিসাবের ৬৯ দশমিক ২২ শতাংশ।

বেসরকারি ব্যাংকগুলো শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১ হাজার ৪৪৪ কোটি টাকা আমানত সংগ্রহ করেছে, যা স্কুল ব্যাংকিং হিসাবের স্থিতির ৮৩ দশমিক ৭৪ শতাংশ। রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো ২৪ দশমিক ৬২ শতাংশ স্কুল ব্যাংকিং হিসাব খুললেও মোট স্থিতির মাত্র ১২ দশমিক ৬৩ শতাংশ সংগ্রহ করেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, স্কুল ব্যাংকিংয়ের হিসাবের ৩৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ খোলা হয়েছে গ্রামাঞ্চলে। ৬১ দশমিক ৪৩ শতাংশ খোলা হয়েছে শহরাঞ্চলে। গ্রামাঞ্চল ও শহরাঞ্চলে স্থিতির পরিমাণ যথাক্রমে ২৫ দশমিক ২৭ এবং ৭৪ দশমিক ৭৩ শতাংশ।

শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি হিসাব খুলেছে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডে। ব্যাংকটিতে সর্বোচ্চ সংখ্যক অর্থাৎ ৫ লাখ ৯ হাজার ৪৫৫ টি হিসাব খুলেছে শিক্ষার্থীরা যা মোট হিসাবের ২১ দশমিক ৮৭ শতাংশ। অপরদিকে, স্থিতির ভিত্তিতেও শীর্ষে অবস্থান করছে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড। তাদের সংগৃহীত আমানত প্রায় ৪৯৩ কোটি টাকা, যা মোট স্থিতির ২৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, স্কুল ব্যাংকিংয়ের মোট হিসাবে ছাত্র ও ছাত্রীর অনুপাত ৫৭:৪৩। ছাত্রছাত্রীদের জন্য স্কুল ব্যাংকিং সেবাকে জনপ্রিয় করতে কোনো কোনো ব্যাংক আলাদা কাউন্টার বা ডেস্ক খুলেছে।

প্রসঙ্গত , বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড.আতিউর রহমান ২০১০ সালে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সঞ্চয় উদ্বুদ্ধ করতে স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রমের উদ্যোগ নেন। তবে শিক্ষার্থীরা টাকা জমা রাখার সুযোগ পায় ২০১১ সাল থেকে। ২০১১ সালে ১০ টাকা দিয়ে হিসাব খোলা হলেও পরে হিসাব খুলতে ১০০ টাকা জমা রাখতে বলা হয়। এসব হিসাব সাধারণ চলতি হিসাবে রূপান্তরের সুযোগও আছে।

বার্তা কক্ষ, ১৭ জুলাই ২০২০