Home / আন্তর্জাতিক / সৌদি কূটনীতিকের বিকৃত যৌনাচার : দু’তরুণীর লোমহর্ষক বক্তব্য
সৌদি কূটনীতিকের বিকৃত যৌনাচার : দু’তরুণীর লোমহর্ষক বক্তব্য

সৌদি কূটনীতিকের বিকৃত যৌনাচার : দু’তরুণীর লোমহর্ষক বক্তব্য

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :

নেপালী দুই তরুণীর জবানবন্দীতে কিছুসময়ের জন্য স্তব্ধ হল মানবতা ! তাদের ভাষ্যমতে, নিজের স্ত্রী সন্তানদের জোর করে বাইরে পাঠিয়ে কোন কোন রাতে ৮/১০ জন বন্ধুদের নিয়ে দুই তরুণীকে শুধু ধর্ষণই নয়, বিকৃত লালসার শিকারও করতেন অভিযুক্ত ঐ সৌদি কূটনীতিক !

চলতি বছর এপ্রিলের নেপালে প্রলয়ঙ্করী ভূমিকম্পে পরিবার হারিয়েছেন ওই দুই নারী। এরপর পাচারকারীদের খপ্পরে পড়ে ঐ সৌদি কূটনীতিকের কাছে আশ্রয় পেয়েছিলেন তারা । তরুনীদয়ের ভাষ্যমতে, আশ্রয় দেবার ভয়ানক নোংরা সুযোগটাই কাজে লাগিয়েছেন ঐ কূটনীতিক ! বুধবার ‘মেইল টুডে’র কাছে ভয়াবহ নির্যাতনের বর্ণনা দিতে গিয়ে বারেবার আঁতকে উঠছিলেন ঐ দুই তরুনী ।

ভারতের দিল্লির গুরগাঁওয়ে সৌদি দূতের বাসায় লোমহর্ষক নির্যাতন করা হতো বলে অভিযোগ করেছেন নেপালি দুই গৃহকর্মী। তাঁদের দেয়া তথ্যমতে , একসাথে ১০ জনের বেশি মানুষকে নিয়ে ধর্ষণ করতো আর বিকৃত উল্লাস করতো ঐ সৌদি কুটনিতিক ।

‘মেইল টুডে’র কাছে ভয়াবহ নির্যাতনের বর্ণনা দিতে গিয়ে বারেবার আঁতকে উঠছিলেন ঐ দুই তরুনী । বর্ণনায় তারা বলেন, ‘তাদের কাছে আমরা কুকুরের চেয়েও অধম ছিলাম। ২৪ ঘণ্টায় আমাদের কেবল বিস্কুট ও চা দেওয়া হতো। কূটনীতিক তাঁর বন্ধুদের কাছে আমাদের তুলে দিত, যারা যৌন নির্যাতন চালাত। আর তাঁর (কূটনীতিক) স্ত্রী আমাদের মারধর করত। বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় আমাদের একটি কক্ষে তালাবদ্ধ করে রাখা হতো।’

তাদের দেয়া তথ্যমতে, নিপীড়নের শিকার ঐ নারী তিনি পাচার হয়েছিলেন নেপালের মোরং জেলা থেকে। তাঁর সঙ্গী অপর গৃহকর্মী বয়স ৩০ বছর বয়সী পাচার হয়েছিলেন বাগলুং জেলা থেকে।

চলতি বছর এপ্রিলের নেপালে প্রলয়ঙ্করী ভূমিকম্পে পরিবার হারিয়েছেন ওই দুই নারী। তাঁদের সৌদি আরবের জেদ্দায় নিয়ে যাওয়ার সময় মাসিক এক হাজার রিয়াল বেতন দেওয়ার কথা বলেছিল পাচারকারীরা। তবে দুজন ঘুণাক্ষরেও তারা বুঝতে পারেননি, সৌদিতে গিয়ে নিয়োগকর্তা ও বন্ধুদের যৌন বাসনা মেটাতে হবে তাঁদের।

চলতি বছরের জুলাইয়ে সৌদি আরব যাওয়ার আগে ওই দুজনকে বাসে করে কাঠমান্ডু থেকে নয়াদিল্লিতে আনা হয়। সেখানে আনোয়ার নামের এক ব্যক্তি তাঁদের গ্রহণ করেন। এর পর আনোয়ার তাঁদের কূটনীতিকের পরিবারের কাছে তুলে দেন। এর পর তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় মুম্বাইয়ে।

ওই ঘটনা প্রসঙ্গে মীনা নামের তরুণীটি বলেন, ‘এক সপ্তাহ মুম্বাই থাকার পর আমাদের শ্রীলঙ্কায় নেওয়া হয়। সেখানে তিন-চার দিন থাকার পর সৌদি আরব যাই।’ ‘পুরো সময়টায় আমাদের অকথ্য নির্যাতন থাপড় ও মারধর করা হয়’ ।

ভিনিতা নামের অপর নারীটি জানান, ভারতে আনার পর সৌদি দূতাবাসের কর্মকর্তা তাঁদের কাছ থেকে অন্যায্য যৌন সুবিধা চাইতেন। ‘তিনি (কূটনীতিক) গা টিপে দিতে বলতেন। এরপর ধর্ষণ করতেন। বিকৃত যৌনাচার করতেন। তিনি সৌদি বন্ধুদেরও দাওয়াত করতেন, যাঁরা কয়েকবার আমাদের গণধর্ষণ করতেন। মাঝেমধ্যে রাতে ১০ জনের বেশি পুরুষও আমাদের ধর্ষণ করতেন। দিনে যখন-তখন তারা আমাদের ধর্ষণ করতেন। সে সময় দূত তাঁর স্ত্রী ও মেয়েকে বাইরে পাঠিয়ে দিতেন।’

ওই দুই গৃহকর্মীর পাচার বিষয়ে গুরগাঁও পুলিশ জানায়, আনোয়ার বৃহৎ একটি পাচারচক্রের সদস্য হতে পারেন, যাঁরা কূটনীতিকসহ বিভিন্ন উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের কাছে নারীদের পাচার করেন। আনোয়ারসহ ওই চক্রের সদস্যদের ধরতে অভিযান চলছে।

এর আগে গতকাল গুরগাঁওয়ের সহকারী পুলিশ কমিশনার রাজেশ কুমার টাইমস অব ইন্ডিয়াকে জানিয়েছিলেন, আদালতে নির্যাতিত দুই গৃহকর্মীর জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে পুলিশ তদন্ত অব্যাহত রেখেছে।

ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩২৩, ৩৪২, ৩৭৬-এর ২, ৩৭৬-এর ডি, ৩৭৭, ৫০৬ এবং ১০২-এর বি ধারা অনুযায়ী অন্যায়ভাবে বন্দি করে রাখা, হেফাজতে থাকা নারীকে জোর করে ধর্ষণ, গণধর্ষণ, হত্যার হুমকি এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ আনা হয়েছে।

পুলিশ কমিশনার নবদ্বীপ সিং জানিয়েছিলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সৌদি দূতাবাসকে বিষয়টি লিখিতভাবে জানিয়েছে পুলিশ। ওই ব্যক্তি কূটনৈতিক দায়মুক্তি পাবেন কি না, তা খতিয়ে দেখতে সৌদি সরকারের কাছে অনুরোধ করা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অনুযায়ী এ ঘটনার তদন্ত চলবে বলেও জানান তিনি। (টাইমস অব ইন্ডিয়া)

চাঁদপুর টাইমস- ডিএইচ/২০১৫