Home / জাতীয় / রাজনীতি / সোহেল তাজের যে স্টাটাসে লাখো নেতাকর্মীরা হতাশ
সোহেল তাজের যে স্টাটাসে লাখো নেতাকর্মীরা হতাশ

সোহেল তাজের যে স্টাটাসে লাখো নেতাকর্মীরা হতাশ

‘প্রিয় সোহেল তাজ, আপনি পুনরায় বাংলাদেশের রাজনীতিতে ফিরে আসুন। আপনার মত রাজনীতিবিদ আমাদের দেশের রাজনীতিতে ভীষণ প্রয়োজন…… আপনি দেশের জন্য সম্পদ, দেশকে অনেক কিছু দিতে পারবেন, দেশের জন্য অনেক কিছু করতে পারবেন, আপনার মাঝে সেই সম্ভাবনার আলো আমরা দেখেছিলাম…… তাই মান ভুলে ১৬ কোটি মানুষের কথা ভেবে ফিরে আসুন এই প্রিয় মাতৃভূমিতে… কাজ করুন দেশের জন্য, আপামর জনগনের জন্য, নতুন প্রজন্মের কাছে সোহেল তাজ’দের মত তরুন নেতাদের গ্রহণযোগ্যতা আছে, যারা দেশকে নিয়ে ভাবে, দেশের মানুষকে নিয়ে ভাবে… দেশের সার্বিক উন্নয়ন কামনা করে, সকল রাজনৈতিক লোভ, লালসার উপরে থাকে……’

এমনি আবেদন দিয়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে আকুতি আর অনুরোধে ছিলো হাজারো মানুষের । এমনকি, দলীয় বিভিন্ন সুত্র থেকেও বলা হচ্ছিলো রাজনীতিতে ফিরে আসবেন সোহেল তাজ। সেই সুত্রধরে দেশের প্রায় সবকটি গনমাধ্যমেও ছিলো এই নেতার ফিরে আসা সংক্রান্ত সরব সব খবর ।

তবে সবার আশার মুখে রীতিমত ‘ছাই ঢেলে’ জাতীয় চার নেতার অন্যতম তাজউদ্দীন আহমদের পুত্র সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমদ সোহেল এবার নিজেই জানালেন ‘ খবরটা ভিত্তিহীন’ !

রাজনীতিতে ফিরে আসছেন বলে কয়েক দিন ধরে যে গুঞ্জন চলছে, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে দাবী সোহেল তাজ নিজেই আজ সোমবার (চারঘন্টা আগে ) এক ফেসবুক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে জানালেন সত্যিটা।

‘ গণমাধ্যমে প্রকাশিত আমার রাজনীতিতে ফিরে আসার খবরটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ‘ উল্লেখ করে নিজের ফেসবুক আইডি থেকে এক স্ট্যাটাসে সোহেল তাজ জানান, ‘ দুই বোনকে সঙ্গে নিয়ে বাবা তাজউদ্দীন আহমদ ও মা জোহরা তাজউদ্দীনের নামে গঠিত ‘মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন’ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছি আমি। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবগত করতে শনিবার রাতে গণভবনে যাই। পরে কয়েকটি গণমাধ্যম সংবাদ প্রকাশ করে যে, আমি রাজনীতিতে ফিরে আসছি, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।’

ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি আরো লিখেন, ‘ ফাউণ্ডেশনের মহৎ উদ্যোগ সম্পর্কে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অমূল্য নির্দেশনা এবং উপদেশ দিয়েছেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শুধুমাত্র বাংলাদেশের জনগণের অভিভাবক নন, তিনি বঙ্গবন্ধু এবং মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও নীতির রক্ষাকারীও। তাই আমাদের মহৎ উদ্যোগ সম্পর্কে তার সহযোগিতা ও আশীর্বাদ চাইবো এটাই স্বাভাবিক।

এক ঘণ্টা পর অপর এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে সোহেল তাজ লিখেন, ‘ আমার প্রতি সবাই যে ভালোবাসা দেখিয়েছেন, এজন্য আমি সবার প্রতি কৃতজ্ঞ এবং সারাজীবন কৃতজ্ঞ থাকবো। তাজউদ্দীন আহমদ ও সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীন ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে জনগণের জন্য প্রচুর কাজ করতে পারবো সেটি আমি জানি। বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলাম, আছি এবং সব সময় থাকবো, যার জন্য আমার বাবা তার পুরো জীবন উৎসর্গ করেছেন এবং সর্বোচ্চ ত্যাগ শিকার করেছেন। ফাউন্ডেশন, আমাদের পরিবার এবং আমার জন্য ভালোবাসা, অনুগ্রহ এবং সমর্থনের জন্য আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ।’

এর আগে গত শনিবার রাত ৯ টার পরে গণভবনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন সোহেল তাজ । এসময় তাজকে পূত্র স্নেহে বুকে টেনে নেন প্রধানমন্ত্রী। সেসময় সৃষ্টি হয় এক আবেগঘন মুহুর্তের ।

তাজের স্বদেশে ফিরে আসায় এবং শেখ হাসিনা সাথে দেখা করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কর্মী সমর্থকরা আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘ এবার দল ও সরকারে আবারো ফিরছেন তাজ। ‘

প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের জুলাই মাসে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমদ সোহেল তাজ অনেকটা নীরবেই যুক্তরাষ্ট্র থেকে ঢাকায় আসেন। দেশে এসে বড় বোন সিমিন হোসেন রিমি এমপির বনানীর পুরাতন ডিওএইচএসের ৩ নম্বর রোডের ১৮ নম্বর বাড়িতে উঠেন। আবারো কাউকে না জানিয়ে অনেকটা নীরবেই ফিরে যান যুক্তরাষ্ট্রে ।

দেশের রাজনীতি থেকে নিজেকে বিচ্যুত করে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনের মেরিল্যান্ডে থাকতেন সোহেল তাজ। ব্যক্তিগত জীবনে সোহেল তাজের এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। বড় ছেলে তুরাজ তাজ লন্ডনের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যারিস্টারি পড়ছেন। ছোট দুই মেয়ে তারা ও জুলিয়ানা ওয়াশিংটনের একটি বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছেন।

এর আগে সোহেল তাজ ২০০৯ সালে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। এরপর তিনি সংসদ সদস্য (এমপি) পদ থেকেও সরে দাঁড়ান। আওয়ামী লীগ ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচনে বিপুলভাবে বিজয় লাভ করার পর ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি গঠিত মন্ত্রিসভায় সোহেল তাজকে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী করা হয়। এর পাঁচ মাসের মাথায় ২০০৯ সালেই তিনি পদত্যাগ করেন।

২০১২ সালের ৭ জুলাই তিনি স্পিকারের কাছে পদত্যাগপত্র দিয়ে সংসদ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেন। বর্তমানে সোহেল তাজের গাজীপুর-৪ কাপাসিয়া আসনে নির্বাচিত হয়ে এমপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তার বড় বোন সিমিন হোসেন রিমি।

পদত্যাগের পর দেশবাসির উদ্দেশ্যে সেসময় একটি খোলা চিঠিও লিখেছিলেন সোহেল তাজ । সেসময় যুক্তরাষ্ট্রের ম্যারিল্যান্ডে অবস্থানরত সোহেল তাজের সেই চিঠি প্রকাশ করে নিউজ ওয়ার্ল্ড ।

নিউজ ডেস্ক  : আপডেট ৩:৩৫ পিএম, ২৫ জানুয়ারি ২০১৬, সোমবার

ডিএইচ