সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো সিগারেট পান না করা ছাড়া নাকি তিনি জ্বিন চালা দিতে পারেন না। সিগারেট ধরানোর সাথে সাথেই তার উপর জ্বিন এসে সওয়ার হয় বলে দাবি করেন। তবে জ্বিন, তাবিজ-কবজ এসব বিষয়ে ধর্মীয় বিজ্ঞান সম্মত ও আইনগত ভাবে এর কোন ভিত্তি নেই। নিরীহ মানুষের সাথে প্রতারণা করাই এদের কাজ।
কখনো বেনসন কখনো গোল্ডলিপ আবার কখনো নেভী সিগারেট পান করে জ্বিনচালা দেন ভন্ড ও প্রতারক কবিরাজ খোরশেদ আলম (৫০)। এভাবে সাধারণ মানুষকে চোখে ধুলো দিয়ে প্রতিমাসে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা।
খোরশেদ আলম রামগঞ্জ পৌরসভার মধ্য আঙ্গার পাড়ার মিয়ারাজা পাটোয়ারী বাড়ির মৃত মফিজ মুন্সীর ছেলে। সোমবার বিকেলে রোগী সেজে প্রতিবেদক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে চাঞ্চল্যকর আরো অনেক অজানা তথ্য বেরিয়ে আসে ওই ভন্ড ও প্রতারক কবিরাজের মুখ থেকে। খোলাখোলিভাবে বীরদর্পে সব খুলেও বলেন এ প্রতিবেদকের কাছে।
ভন্ড কবিরাজ খোরশেদ জানান, ২০ বছর আগে প্রথমে টিউবওয়েলের মেস্তুরী ও পরে চা দোকান দিয়ে কোন লাভের মুখ না দেখায় সাঙ্গপাঙ্গদের পরামর্শে কবিরাজি ও জ্বিনচালা শুরু করেন। ব্যবসা ভালোই চলছে। ৬মাসের মাথায় সব খরচাপাতি বাদ দিয়ে ৮০ হাজার টাকা লাভও হয়েছে।
সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো সিগারেট পান না করা ছাড়া তিনি জ্বিন চালা দিতে পারেন না। সিগারেট ধরানোর সাথে সাথেই তার উপর জ্বিন এসে সওয়ার হয়। এসব কথা বলতে বলতেই এসে উপস্থিত হয় পৌরসভার সোনাপুরের এক রোগী। প্রবাসী এক যুবক অর্ধশতাধিক মেয়ে দেখার পরও বিয়ে করতে পারছেন না । তাড়াতাড়ি বিয়ে করার জন্য তাবিজ ও পানি পড়ার জন্য এসেছে। এই পানি পড়া আর তাবিজের জন্য ৫শত টাকা দিতে হয়েছে খোরশেদ কবিরাজকে। এছাড়া পেট ব্যাথা,হাটু ব্যাথা, মাজা ব্যাথা,জরায়ুতে সমস্যা, বাচ্চা না হওয়া, প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া, ব্রেন ক্যান্সার সহ সকল রোগের ঔষধ দিয়ে থাকেন খোরশেদ। এভাবে গ্রামের নিরীহ মানুষের চোখে ধুলো দিয়ে প্রতারক খোরশেদ কবিরাজ প্রতিমাসে হাতিয়ে নিচ্ছেন লক্ষ লক্ষ টাকা।
দরবেশপুর গ্রামের প্রবাসীর স্ত্রী রাহেলা আক্তার জানান, স্বামী দীর্ঘ কয়েক মাস থেকে বাড়িতে কোন টাকা পয়সা ও পরিবারের কোনো খোঁজখবর নিচ্ছে না। লোকমুখে খোরশেদ কবিরাজের কথা শুনে ৪হাজার টাকার বিনিময়ে জ্বিনচালা দিয়ে তদবির ও তাবিজকবজ নিয়েছে। কিন্তু ৬মাস পেরিয়ে গেলেও তদবিরে কোন কাজ হয়নি।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নাজমুল হাসান বলেন, জ্বিন, তাবিজ-কবজ এসব বিষয়ে ধর্মীয় বিজ্ঞান সম্মত ও আইনগত ভাবে এর কোন ভিত্তি নেই। নিরীহ মানুষের সাথে প্রতারণা করাই এদের কাজ। এদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।