হাজীগঞ্জ

সাবেক স্ত্রীর মামলায় প্রতিবন্ধী মোকলেছের মানবেতর জীবন

প্রায় ২০ বছর পূর্বে ভালোবেসে পারিবারিক ভাবে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হন মোকলেছুর রহমান ও রেনু বেগম দম্পত্তি। তাদের ঘরে এক মেয়ে ও ছেলে সন্তান নিয়ে ভালোই যাচ্ছিল দিনকাল। মোকলেছুর রহমান ততকালীন সময়ে মংলা সমুদ্র বন্দরে আমদানি রপ্তানি কাজে নিয়োজিত ছিল।

স্ত্রী’র মেধাকে কাজে লাগানোর ইচ্ছায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি করার সুযোগ করে দেন। সব মিলিয়ে স্বাভাবিক মধ্যবিক্ত পরিবারের মতই যাচ্ছিল তাদের জীবনযাপন। বিয়ের প্রায় ১৫ বছরের মাথায় এসে স্ত্রী রেনু বেগমের মনে আরো বেশী সুখের আসায় স্বামীর নগদ টাকা থেকে শুরু করে নানা সম্পত্তি নিজ কবলায় নিয়ে নেয়।

পরে স্ত্রী তার সন্তানদের নিয়ে অন্যত্রে ঘর বাধে। আর এতে করে গত প্রায় ৩ বছর ধরে ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৫নং গুপ্টি পূর্ব ইউনিয়নের মানুরী দিদার বাড়ির মোকলেছুর রহমান প্রতিবন্ধী অবস্থায় মানবতর জীবন যাপনের করে আসছে।

সরেজমিনে জানা যায়, হাজীগঞ্জের পাচৈই বেপারী বাড়ির সামাদ মিয়ার মেয়ে রেনু বেগম স্বামী মোকলেছুর রহমানকে রেখে তার জেঠাতো বোনের জামাই হাজীগঞ্জ জেনারেট এন্ড ওয়ার্কসপের মালিক মো. সোহরাব হোসেনের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়।

স্ত্রী ও সন্তানদের ফিরে পেতে চাঁদপুর আদালতে মামলা করলে বরং রেনু বেগম নারী নির্যাতন ও তার বর্তমান স্বামী সোহরাব হোসেন তার বিরুদ্ধে অপহরনের মামলা দায়ের করে। স্ত্রী সন্তান ও তার অর্থ হারিয়ে এসব মামলার চিন্তায় স্ট্রোক করে মানবতর জীবন যাপন করছে মোকলেছুর রহমান।

বর্তমানে মোকলেছুর রহমান তার ছোট ভাই মানিক হোসেন ও তার স্ত্রীর সেবায় বেচেঁ আছে। ভাইয়ের প্রতি বিন্দু মাত্র অবহেলা না করে এক ঘরে থাকা প্রতিবন্ধী মোকলেছের দেখাশোনা করে আসছে। কিন্তু রেনুু বেগম ও তার স্বামীর মামলার প্রধান আসামী মোকলেছুর রহমানের পাশাপাশি ছোট ভাই মানিক হোসেনকে আসামী করায় আদালতে হাজিরা দিতে গিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে।

মোকলেছুর রহমানের ছোট ভাই মানিক হোসেন বলেন, ভাইয়ের টাকা পয়সা নিয়ে ভাবি রেনু বেগম নতুন করে ঘর বেধেছে। পরে ভাই ও আমাকে আসামী করে চাঁদপুর আদালতে তারা দুইটি মিথ্যা মামলা দায়ের করে। ভাইয়ের অসুস্থ্যতার কারনে হাজিরা দিতে না পারলেও আমরা বিনা অপরাধে তাদের এসব মিথ্যা মামলা হাজিরা দিতে গিয়ে সর্বশান্ত হয়ে পড়েছি। আমার ভাই এসব নেটশনে গত তিন বছর ধরে ঘরে প্রতিবন্ধীর মত পড়ে আছে। আমার নিজের স্ত্রী সন্তানের বরণপোষন করতে হিমসীম খেতে হচ্ছে। তাদের কাছে আকুল আবেদন যেন আমাদেরকে এ মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে স্বাভাবিক জীবনযাপনের সুযোগ করে দেয়।

প্রতিবেশী মোতালেব ও আনোয়া হোসেন বলেন, মোকলেছ মিয়ার স্ত্রী খুব সুন্দরী ছিল। তার দুই সন্তানকে নিয়ে হাজীগঞ্জের এক বিশিষ্ট ব্যবসায়ীকে বিয়ে করেছে। তাদের মিথ্যা মামলায় গত তিন বছর ধরে মোকলেছ মিয়া মাথা চন্নতা হয়ে পড়ে।

এ বিষয়ে রেনু বেগমের বর্তমান স্বামী সোহরাব হোসেন বলেন, মোকলেছুর রহমানের স্ত্রী আমাকে বিয়ে করে তার সন্তানদের ভাল জীবনযাপন উপহার দিয়েছে। তারা মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছে যে কারনে মামলা করতে বাধ্য হয়েছি। বর্তমানে মামলা প্রায় শেষ পর্যায় রয়েছে, রায় ঘোষণার মাধ্যমে এর সমাধান হবে।

প্রতিবেদক:জহিরুল ইসলাম জয়,৯ নভেম্বর ২০২০

Share