Home / উপজেলা সংবাদ / সাবেক এমপি হারুন অর রশিদ খানের ১২তম মৃত্যুবার্ষিকী

সাবেক এমপি হারুন অর রশিদ খানের ১২তম মৃত্যুবার্ষিকী

আবদুল গনি :

চাঁদপুর জেলার সাবেক এমপি মরহুম আলহাজ্ব হারুন অর রশিদ খানের ১২তম মৃত্যুবার্ষিকী ৯ রমজান পালিত হয়েছে।

মরহুমের বাসভবন ঢাকাস্থ ইন্দিরা রোডে ও সফরমালী এবং খেরুদিয়া বেশ কয়েকটি মসজিদে মিলাদ ও কোরআনখানি এবং বাদ তারাবী মিলাদ ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।

চাঁদপুর সদরের কৃতী সন্তান মরহুম হারুন অর রশিদ ২০০৩ সালের ৫ নভেম্বর ৯ রমজান ঢাকার ইন্দিরা রোডস্থ নিজ বাসভবনে ইন্তেকাল করেন।

পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে তার পরিবারের পক্ষে তার মৃত্যুবার্ষিকী ৯ রমজান পালিত হয়ে আসছে। চাঁদপুর-৩ আসনের দু’দুবার নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মো. হারুন-অর-রশিদ খান ছিলেন চাঁদপুরের একজন বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী ও সমাজসেবক।

দীর্ঘ প্রায় ৪৩ বছর তিনি চাঁদপুর ও মতলব উপজেলায় বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা, স্কুল-কলেজে শিক্ষা বিস্তারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। মরহুম হারুন অর রশিদ খান সফরমালী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও চেয়ারম্যান পদে জীবনের শেষদিন পর্যন্ত অধিষ্ঠিত থেকে এলাকার শিক্ষা বিস্তারে ও উন্নয়নে কাজ করে গেছেন।

১৯৬০ সালে সফরমালী উচ্চ বিদ্যালয়কে মেঘনার করাল গ্রাসে পতিত হলে তার বাবা মরহুম আলহাজ্ব সেকান্তর খানের নির্দেশে প্রতিষ্ঠানটি পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে দায়িত্ব পালন করেন। সাথে সাথে দীর্ঘ ৪৩ বছর এর সাথে সম্পৃক্ত থেকে শিক্ষাবিস্তারে কাজ করে গেছেন।

এছাড়াও তিনি মুন্সিরহাট দারুল উলুম মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা, মুন্সিরহাট কলেজের আজীবন সদস্য, মতলব বোয়ালিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন।

মরহুম আলহাজ্ব হারুন-অর-রশিদ খান ১৯৩৪ সালের ১ নভেম্বর চাঁদপুর সদর উপজেলার তৎকালীন আশিকাটি ইউনিয়নের সফরমালীর গ্রামে মুসলিম সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।

তার পিতার নাম ছিল মরহুম আলহাজ্ব মোঃ সেকান্তর খান এবং মাতার নাম ছিল জরিনা খাতুন। ছোটবেলা থেকেই তার ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রতি মন ছিল এবং প্রথম নারায়ণগঞ্জ তিনি তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন।

১৯৮৮ সালে তিনি সর্বপ্রথম মতলবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের মেধা বিকাশে জরিনা বৃত্তি প্রদান প্রকল্প চালু করেন। প্রাথমিক শিক্ষা বিস্তারেও তার এই ভূমিকা ছিল প্রশংসনীয়। তিনি ছাত্রজীবনে ছাত্র রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। ১৯৫২ সালে চাঁদপুর জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। ভাষা আন্দোলনেও তার সক্রিয় ভূমিকা ছিল। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ভারতে এলাকার দামাল ছেলেদের মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণগ্রহণে সার্বিক সকল প্রকার সহযোগিতা প্রদান করেন। ১৯৮২-৮৮ পর্যন্ত বাংলাদেশ লঞ্চ মালিক সমিতি সভাপতি ও ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ ঢাকা’র সদস্য, ১৯৭০-৮৬ সাল পর্যন্ত হাজী মহসিন জনকল্যাণ সমিতির সভাপতি, ১৯৭৮-৮৮ সময়ে ঢাকাস্থ চাঁদপুর জেলা সমিতির সহ-সভাপতি ও উপদেষ্টা ছিলেন। তিনি খান পরবর্তীতে নারায়ণগঞ্জে তার ব্যবসা পরিচালনা করে ধীরে ধীরে জাতীয় পার্টির ব্যানারে রাজনীতিতে যোগদান করেন। ১৯৮৬-৮৮ সালে জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচন হন। চাঁদপুরের জাতীয় পার্টির বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পদে অধিষ্ঠিত হয়ে সকল স্তরে নেতাকর্মীদের অত্যন্ত আস্থাভাজন ব্যক্তি হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন। তিনি বেশ ক’বার পবিত্র হজ্বব্রত পালন করেন।

মরহুম হারুন-অর-রশিদ খান ১৯৯৯ সালের জুন মাসে দুর্ভাগ্যবশতঃ ব্রঙ্কাইটিজ ও ডায়াবেটিক রোগে আক্রান্ত হলে তৎক্ষণাৎ তাকে আমেরিকার একটি প্রসিদ্ধ হাসপাতালে সফল অস্ত্রপ্রচার করে দেশে ফিরে এবং ২০০১ সালে পুনরায় চেক-আপ করার জন্য ব্যাংকক যান। বিভিন্ন কারণে তিনি ভারত, সৌদি আরব, ইংল্যাংন্ড, আমেরিকা, ইরান, ইরাক, সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক ও পাকিস্তান ভ্রমণ করেন।

মরহুম হারুন অর রশিদ এলাকার শিক্ষা বিস্তারে ও সমাজ সেবায় আমাদের কাছে স্মরণীয় ও বরণীয় হয়ে আছেন।