চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার সাচার গ্রামে বিজ্ঞ আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জোরপূর্বক জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। একই উপজেলার হাতিরবন্দ গ্রামের খলিলুর রহমানের স্ত্রী সেলিনা রহমান গংদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠে।
সরেজমিনে ভ‚ক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে,সাচার ডিগ্রি কলেজ সংলগ্ন আ: জলিল ২০নং সাচার মৌজার সাবেক ৬১৩ হালে ১০৩৪ (বাড়ি) এবং ১০৩৫ (পুকুর), সাবেক ৬০২ হালে ১০৩২ দাগের ভূমি ব্রজেন্দ্র সাহার কাছ থেকে বিনিময় দলিলের মাধ্যমে মালিক ও দখলদার হন। আ: জলিল উক্ত ভূমি থেকে তার ছোট ভাই খলিলুর রহমান’কে ১২ শাতংশ ভূমি দানপত্র করে দেন। পরবর্তীতে আ: জলিল দেখতে পায় দানপত্র দলিলে জালিয়াতির মাধ্যমে ১২ শতাংশের পরিবর্তে ৪২ শতাংশ উঠানো হয়েছে। তখন আ: জলিল ১৯৮৮ সনে কচুয়া সাবরেজিষ্ট্রি অফিসে দানপত্র বাতিল দলিল সম্পাদন করেন। যার দলিল নং: ৮৮০০। পরবর্তীতে আ: জলিল বিজ্ঞ আদালতে মামলা করে দানপত্র বাতিলের বৈধতা রায় পান।
মাঠ জরিপ আমলে আ: জলিলকে সরেজমিন পেয়ে উক্ত ভূমি আ: জলিলের নামে ৩৫০ নং খতিয়ানে রেকর্ড ভুক্ত করেন। পরবর্তীকালে খলিলুর রহমান জীবিত অব¯’ায় এই ভূমির উপর কোনোরূপ মালিকানা দাবী করেন নি। এমনকি উক্ত জমিতে খলিলুর রহমানের কোনো দখলদারিত্ব ছিল না।
আ: জলিল ও খলিলুর রহমানের মৃত্যুর পর ২০১৪ সালে খলিলুর রহমানের স্ত্রী সেলিনা রহমান উক্ত ভূমিতে দখলদারিত্ব আছে বলে ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইবুনালে রেকর্ড সংশোধন মামলা দায়ের করেন। মামলা নং: ২৮৬৫/১৪। যা আ: জলিলের ওয়ারিশগন জানতো না। বিবাদীগনের অজান্তে বাদী সেলিনা রহমান আদালত থেকে একতরফা রায় এনে উক্ত ভূমি দখল করতে আসলে আ: জলিলের ওয়ারিশগন জানতে পারে এবং আদালতের স্মরণাপন্ন হয়। উক্ত মামলার কার্যকারিতা ¯’গিতাদেশসহ ছানী মামলার আবেদন করেন। বিজ্ঞ আদালত ছানী মামলা মঞ্জুর করেন। মামলা নং: বিবিধ ছানী ৫১/২০২৩। ল্যান্ড সার্ভে ২৮৬৫/২০১৪ ইং। এবং ১৫.০৫.২০২৩ তারিখ ২৮৬৫/২০১৪ নং মোকাদ্দমার ডিসী ¯’গিতসহ যাবতীয় কার্যক্রম ৬ মাসের জন্য ¯’গিত করেন। বিজ্ঞ আদালতের ¯’গিত আদেশ সত্তে¡ও ১৪ জুন ২০২৩ তারিখে সেলিনা রহমান ঢাকা থেকে লোকবল এনে উক্ত ভূমি দখল করার চেষ্টা করলে আ: জলিলের ওয়ারিশগন বাধা প্রদান করেন। এই খবর পেয়ে সাচার পুলিশ ফাঁড়ি থেকে পুলিশ এসে উভয় পক্ষকে কচুয়া থানার ওসি তদন্তের নিকট কাগজপত্রসহ যেতে বলেন। ওসি তদন্ত কাগজপত্র দেখে সেলিনা রহমানকে আদালতের নির্দেশনা মানার জন্য পরামর্শ দেন। এবং ২২ শে জুন আদালতের পরবর্তী সুনানীর জন্য অপেক্ষা করতে বলেন।
এদিকে আ: জলিল থেকে যারা ভূমি কিনে বাড়ি করেছেন তারা খুবই হতাশার মধ্যে দিনযাপন করছেন। ভূমি ক্রয়কারীদের মধ্যে সাচার ডিগ্রি কলেজের সহাকারি অধ্যাপক মো. মফিজুল ইসলাম জানান, তিনি ২০১৮ সালে আ: জলিলের বড় ছেলে মো. আলমগীর হোসেন থেকে উক্ত বাড়িতে ভূমি কিনে দখল বুঝে নেন। প্রথমে টিনের ঘর তৈরি করেন এবং পরবর্তীতে ৫ তলা ফাউন্ডেশন দিয়ে দোতলা বাড়ির কাজ সম্পন্ন করেন। ভূমি ক্রয় থেকে শুরু করে বাড়ির কাজ সমাপ্ত করা পর্যন্ত সেলিনা রহমানের পক্ষে কেহ কোনো প্রকার বাধা প্রদান করেন নি। বর্তমানে এধরনের মামলা মোকদ্দমার কথা শুনে তিনি হতবাক।
এদিকে প্রতিপক্ষ সেলিনা রহমানের বক্তব্য জানতে বারবার চেষ্টা করে মুঠোফোনে তাকে পাওয়া যায়নি।
কচুয়া প্রতিনিধি, ১৭ জুন ২০২৩