বাংলাদেশে বঙ্গোপসাগরের জলসীমা থেকে ২০১৭-১৮ অথর্বছরে ১ লাখ ২০ হাজার ৮৮ মেট্রিক টন মাছ আহরণ করেছে ২শ ৫০ টি বাণিজ্যিক ট্রলার। এর মধ্যে চিংড়ি ৩ হাজার ৬শ’৮২ টন। বাকি ১ লাখ ১৬ হাজার ৪শ’৬ টন ইলিশ, রুপচাঁদা, সুরমাসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ।
২০১৬-১৭ অথর্বছরে বাণিজ্যিক ট্রলারগুলো মাছ আহরণ করেছিল ১ লাখ ৮ হাজার ৪শ’৭৯ টন। এর মধ্যে চিংড়ি ৩ হাজার ২ম’১৯ টন। অন্যান্য সামুদ্রিক মাছ ১ লাখ ৫ হাজার ২শ’৬০ টন। ২০১৭-১৮ অথর্বছরে বাণিজ্যিক জাহাজগুলো ১১ হাজার ৬শ ৯ টন মাছ বেশি আহরণ করে।
সামুদ্রিক মৎস্য অফিসের ফিশারিজ কোয়ারেন্টাইন অফিসের একজন কর্মকর্তা এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, বাংলাদেশ চিংড়ি আহরণে নিয়োজিত স্টিল বডির ৩৭টি, মৎস্য আহরণে কাঠ বডির ৯৭টি ও স্টিল বডির ১১৯টি মিড ওয়াটার ক্যাটাগরির বাণিজ্যিক ট্রলার রয়েছে। বেশিরভাগ বাণিজ্যিক ট্রলারই চট্টগ্রাম থেকে মাছ ধরতে যায়। মোংলা থেকে যায় ৪-৫টি। এর মধ্যে নৌ-বাণিজ্য দপ্তর অনুমোদিত ২শ’ বাণিজ্যিক ট্রলার নিয়মিত সাগরে মাছ ধরে। স্টিল বডির ট্রলারগুলোকে সামুদ্রিক মৎস্য দফতর একনাগাড়ে ৩০ দিন সাগরে মাছ ধরার ছাড়পত্র দিয়ে থাকে। কাঠবডির বাণিজ্যিক ট্রলার ছাড়পত্র পায় ১৫ দিনের।
সামুদ্রিক মৎস্য দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বাণিজ্যিক চিংড়ি ট্রলারগুলো টাইগার, হোয়াইট, ব্রাউন ও বিবিধ ক্যাটাগরির চিংড়ি আহরণ করে। মিড ওয়াটারের বাণিজ্যিক ট্রলারগুলো ১৮ ধরনের মাছ আহরণ করে। এগুলো হচ্ছে- ইলিশ, রুপচাঁদা, সাডির্ন, পোয়া, ছুরি, দাতিনা, কালো চঁান্দা, সুরমা, সোল ফ্ল্যাট, ক্যাটফিশ, ইন্ডিয়ান মেকারেল , কামিলা , হাঙর, মায়া ও লইট্টা। একেকটি মাছের আবার অনেক ধরনের প্রজাতি রয়েছে।
বঙ্গোসাগরের ৪০ মিটার গভীরতা পযর্ন্ত ৩২ হাজার ৪শ’৪০ বর্গ কি.মি. এলাকায় প্রায় ৬৮ হাজার যান্ত্রিক ও অযান্ত্রিক ছোট ট্রলার এবং জেলে নৌকা মাছ ধরে। এ এলাকায় বাণিজ্যিক ট্রলার মাছ ধরতে পারে না। সেগুলো ৪০ মিটারের পর থেকে মাছ ধরা শুরু করে। আন্তজাির্তক আদালতে প্রতিবেশি দেশ মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমার বিরোধ নিষ্পত্তি হওয়ায় বতর্মানে ১ লাখ ১৮ হাজার ৮ শ’১৩ বর্গ কি.মি. টেরিটোরিয়াল সমুদ্র ও ২শ’ নটিক্যাল মাইল একচ্ছত্র অথৈর্নতিক অঞ্চল রয়েছে বাংলাদেশের।
এ এলাকায় মাছের অবস্থান ও সম্ভাবনা নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের মৎস্য গবেষণা জাহাজ ‘আরভি মীন সন্ধানী’ নিয়মিত জরিপের পাশাপাশি সম্প্রতি নরওয়ের বিশ্বখ্যাত জরিপ জাহাজ ‘আরভি ড.ফ্রিডজফ ননসেন’বঙ্গোপসাগরে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে।
প্রতিবছর বঙ্গোপসাগরে মাছের প্রজনন ও সংরক্ষণের স্বার্থে আশ্বিনী পূণির্মাকে সামনে রেখে ৬৫ দিন মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। এ সময় বাণিজ্যিক ট্রলারগুলোকে মাছ ধরার ছাড়পত্র দেয় না সামুদ্রিক মৎস্য দপ্তর।
বাণিজ্যিক ট্রলারের একজন ক্যাপটেন বলেন, ‘একটি বাণিজ্যিক ট্রলারে কতজন জনবল থাকবে তা নিধার্রণ করা থাকে। আমার ট্রলারে ৪৩ জনের অনুমোদন আছে। ট্রলারের আকার, ক্রুদের আবাসন ব্যবস্থা, নিরাপত্তা ইত্যাদি বিবেচনা করে জনবলের অনুমোদন দেয়া হয়। ৩০ দিনের ছাড়পত্র নিয়ে সাগরে যাই। ২শ টন মাছ ধরা পযর্ন্ত সাগরেই থাকি। সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বরে ৮০-১শ মিটার গভীরতায় মাছ ধরা যায়। শীতকালে পানির লবণাক্ততা বেড়ে গেলে ৫০-৬০ মিটারে মাছ পাওয়া যায়।’
বার্তা কক্ষ
আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৬:১০ পিএম,৩১ আগস্ট ২০১৮,শুক্রবার
এজি
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur