Home / জাতীয় / সাংবাদিক রোজিনাকে নিয়ে ফায়দা লুটতে চায় দেশবিরোধীরা: তথ্যমন্ত্রী
ভুয়া সাংবাদিক
ফাইল ছবি

সাংবাদিক রোজিনাকে নিয়ে ফায়দা লুটতে চায় দেশবিরোধীরা: তথ্যমন্ত্রী

সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের আটকের ঘটনাকে পুঁজি করে দেশবিরোধী চিহ্নিত মহল ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, ‘গত ১৭ মে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা চলছে। ‌কারও কর্মকাণ্ড যেন তাদের (দেশবিরোধীদের) হাতে অস্ত্র তুলে না দেয়।’

শনিবার (২২ মে) মিন্টু রোডে তার সরকারি বাসভবনে টিভি নাট্যপরিচালকদের সংগঠন ডিরেক্টরস গিল্ডের নবনির্বাচিত কমিটির সঙ্গে সাক্ষাত শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন মন্ত্রী। গিল্ডের সভাপতি সালাহউদ্দীন লাভলু, সাধারণ সম্পাদক এস এম কামরুজ্জামান সাগরসহ নির্বাহী সদস্যরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।

রোজিনার ঘটনাকে রাজনীতিকরণ করা হয়েছে মন্তব্য করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘দেশবিরোধী মহল এটি নিয়ে অতি তৎপর হয়ে উঠেছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ফিলিস্তিনে নারী-শিশুসহ শত শত প্রাণহানি ঘটার পর বিবৃতি দিতে অনেকদিন সময় লাগালেও বিচারাধীন রোজিনা ইস্যুতে তারা পরদিনই বক্তব্য দিলো। দেশবিরোধী বিভিন্ন চক্র যারা বিদেশে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে, কুৎসা রটায়, মিথ্যা অপপ্রচার চালায়, তাদেরও সক্রিয় হতে দেখা গেছে। খালেদা জিয়ার সাবেক ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি মুশফিক ফজল জাতিসংঘ মহাসচিবের দফতরের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে গিয়ে একটি প্রশ্ন করে এক কর্মকর্তার কাছে থেকে সার্বজনীন গণমাধ্যম বিষয়ক একটি জবাব আদায় করেছে। সেই বক্তব্যকেই রোজিনার বিষয়ে জাতিসংঘ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বলে চালিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা হয়েছে। জাতিসংঘের একজন কর্মকর্তার বক্তব্য আর জাতিসংঘের উদ্বেগ এক নয়।’

‘মন্ত্রী, সচিব বা রোজিনা ইসলামসহ কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নন’ উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমাদের কোনও কর্মকাণ্ডকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে দেশবিরোধীরা যাতে দেশের ক্ষতি করতে না পারে, সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে।’

এ বিষয়ে বিএনপি মহাসচিবের দেওয়া বক্তব্য নিয়ে প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান বলেন, ‘বিএনপি যখন রোজিনা ইস্যুতে বক্তব্য দিতে থাকে, তখন বুঝতে হবে, এটিকে রাজনৈতিক রূপ দেওয়ার অপচেষ্টা চলছে।’

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে শিক্ষা উপমন্ত্রীকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘মতের অমিল হলেই কাউকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা কখনোই সমীচীন নয়।’

প্রসঙ্গত, রোজিনা ইসলাম পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য সোমবার (১৭ মে) বেলা সাড়ে তিনটার দিকে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যান। পরে জানা যায়, তাকে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা একটি কক্ষে আটকে রেখেছেন। রোজিনা ইসলামকে আটকে রাখার খবর পেয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওই ভবনে যান। কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে তাকে আটকে রাখার কারণ সম্পর্কে গণমাধ্যমকর্মীরা জানতে চাইলেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা কিছুই জানাননি।

একপর্যায়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে কিছু নথি সরানোর অভিযোগ এনে পুলিশ ডাকা হয়েছে। পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে রোজিনাকে শাহবাগ থানায় নিয়ে আসা হয় এবং রাতেই তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।

পরদিন মঙ্গলবার (১৮ মে) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসীমের আদালত রোজিনা ইসলামের রিমান্ড নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

ঢাকা ব্যুরো চীফ