খেলাধুলা

সব জেনেবুঝেই তামিমাকে বিয়ে করেন নাসির

ক্রিকেটার নাসির হোসেন এখন টক অব দ্য কান্ট্রি। কেবিন ক্রু তামিমা তাম্মিকে বিয়ে করে সব বিতর্কের অবসান ঘটাতে চেয়েছিলেন। সুখের ঘর বাধার স্বপ্ন বুনেছিলেন। বিয়ের পর মানসিক প্রশান্তি তো দূরের কথা উল্টো বিতর্ক এসে নাসিরের ঘাড়ে গরম নি:শ্বাস ফেলা শুরু করল।

নাসিরের বিয়ের আনন্দকে বিষাদে পরিণত করেছে তামিমার সাবেক স্বামী রাকিব হাসানের উদ্যোগ। রাকিব হাসান জানিয়েছেন, প্রথম স্বামীকে তালাক না দিয়েই নাসিরের গলায় ঝুলে পড়েছেন তামিমা, এ কারণে তিনি থানায় জিডিও করেছেন। নাসির বিষয়টি অস্বীকার করলেও তামিমা যে বিবাহিত এবং আগের ঘরে যে তার একটা সন্তান রয়েছে সেটি জানতেন। সব জেনেবুঝেই তামিমাকে বিয়ে করেন এই ক্রিকেটার।

সম্প্রতি তামিমার প্রথম স্বামীকে ফোন করেন নাসির হোসেন। এ সময় দুজনের মধ্যে তামিমাকে নিয়ে দীর্ঘক্ষণ কথা হয়। রাকিবের প্রশ্নের জবাবে নাসির বলেন, তামিমার আগে বিয়ে হয়েছে, সন্তান আছে জেনেও তাকে বিয়ে করেছেন।

নাসির-রাকিবের ওই ফোনের অডিও ক্লিপ ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
দুজনের কথোপকথন হুবহু তুলে ধরা হলো –

নাসির : হ্যালো আসসালামু আলাইকুম। ভাইয়া আমি নাসির হোসেন বলছিলাম।

রাকিব : কোথা থেকে?

নাসির : ক্রিকেট খেলোয়াড় নাসির হোসেন।

রাকিব : কাকে চান?

নাসির : এটা রাকিবের নম্বর না? আপনি সেই রাকিব?

রাকিব : সেই রাকিব মানে?

নাসির : আমি আপনাকেই চাচ্ছিলাম। ভালো আছেন আপনি?

রাকিব : জি, আলহামদুলিল্লাহ।

নাসির : আপনাকে কিছু কথা বলার জন্য ফোন দিয়েছি। আপনি যা করলেন!

রাকিব : কী করলাম?

নাসির : আপনি নাকি জিডি করছেন? এগুলো করে কী পাচ্ছেন আপনি, আমাকে আজকে বলবেন?

রাকিব : কিছু পাচ্ছি না। আপনি তামিমার সম্পর্কে কিছু জানেন?

নাসির : সব কিছু জানি।

রাকিব : কী কী জানেন?

নাসির : সব কিছু। ওর বাচ্চা আছে, বিয়ে হয়েছিল, বয়ফ্রেন্ড ছিল। জেনেশুনেই বিয়ে করছি। আপনি চান না তামিমা সুখে থাক?

রাকিব : আমি? তামিমা তো সুখেই আছে। আমি তো আর কোনো বিরক্ত করছি না।

নাসির : আপনি জিডি করছেন।

রাকিব : জিডি করব না? তামিমা তো আমাকে কোনো কাগজ দেয়নি। বুঝতে পারছেন না? তামিমার সঙ্গে আপনার যখন কথা হয়, তখন তামিমাকে বললাম নাসির কে? সে বলল, ‘আমার বন্ধু। আমার বাসায় এসেছিল জন্মদিনে। বাসায় আসে-যায়, শুধু বন্ধু।’ আপনি কথা শুনুন। আপনি জেনেশুনে আরেকজনের বউকে বিয়ে করে ফেলেছেন। তামিমা তো আমার সঙ্গে বসতে পারত– ‘রাকিব, তোমাকে ভালো লাগে না, চলে যাব।’ তা হলে সমস্যা ছিল না। ‘তুমি বসো, সব পেপার ক্লিয়ার করো। কাটছাঁট করো, সমস্যা নেই।’ আমারও তো একটা পেপার দরকার আছে, না? ভবিষ্যতে আমিও তো বিয়ে করব, তাই না? সেগুলো কিছু না করেই আপনাকে সঙ্গে বিয়ে করল?

নাসির : আপনি মনে করবেন না (যে) আমি লেটার না দেখে বিয়ে করেছি।

রাকিব : আপনি কী দেখেছেন জানি না। আমি ২০১১-তে বিয়ে করেছি। আমার মেয়ের বয়স আট বছর। তামিমার জন্য কী করেছি, কোনো ইতিহাস আপনি জানেন না। এখন আপনি যদি বলেন– আমি চাই না তামিমা সুখী হোক। আপনি চাননি আমি আর তামিমা সুখী থাকি? জানেন, একজনের মেয়ে আছে, সংসার আছে, তো আপনি এটি কীভাবে করলেন?

নাসির : আপনার সঙ্গে তো সংসার নেই, বুঝতে পারছেন না? ভাই, আমি এত ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে কথা বলতে পারি না। শুধু এতটুকু জানতে চাই– আপনি কি চান না তামিমা সুখী থাক? যদি চান, তা হলে এটা নিয়ে আর কোনো কিছুই করবেন না।

রাকিব : তামিমা সুখে থাকবে কীভাবে?

নাসির : যদি তামিমা সুখে থাকত, তা হলে সে আপনার সঙ্গেই থাকত।

রাকিব : আপনি আমাকে ফোন দিয়েছেন কেন? আমি তো আপনাকে চিনি না। ফোন দেবে তামিমা আমাকে।

নাসির : তামিমা ফোন দেবে কেন?

রাকিব : অবশ্যই তামিমা ফোন দেবে। সমস্যা তো তামিমারই। নাকি আপনার এখন? আপনি যে বাসায় থাকছেন, সেই বাসার ফার্নিচারগুলোও আমার।

নাসির : তাই? আমি জানি, সব কিছুই জানি। আচ্ছা ভাই, আমার কথাগুলো শুনুন।

রাকিব : ভাই, আমি এখন নামাজে যাব। আপনার সঙ্গে কথা বলতে পারছি না, এ জন্য সরি!

প্রসঙ্গত ভ্যালেন্টাইনস ডেতে কেবিন ক্রু তামিমা তাম্মিকে বিয়ে করেন নাসির। তাদের জমকালো বিয়ের অনুষ্ঠানে ছবি উষ্ণতা ছড়িয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ফেসবুক ব্যবহারকারীরা দুজনকে নিয়ে মেতে ছিলেন কয়েক দিন। কিন্তু এক সপ্তাহ পূর্ণ না হতেই জানা গেল নাসিরপত্নীর আগে আরেকটি বিয়ে হয়েছিল। তামিমার সাবেক স্বামী রাকিব হাসান। তার দাবি, তামিমা তাকে ডিভোর্স না দিয়েই নাসিরকে বিয়ে করেছেন।

শনিবার তামিমার প্রথম স্বামী রাকিব হাসান দাবি করেন, তামিমার সঙ্গে তার বিয়েবিচ্ছেদ হয়নি। ছাড়াছাড়ি না করেই গাঁটছড়া বেঁধেছেন তামিমা। এ বিষয়ে তামিমাকে ফোন করে কোনো সাড়া না পেয়ে উত্তরা পশ্চিম থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন রাকিব। উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি শাহ মো. আক্তারুজ্জামান ইলিয়াস জিডির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গণমাধ্যমের কাছে তাদের কাবিননামা ও জিডির কপি পাঠিয়েছেন তামিমার প্রথম স্বামী।

তার দাবি, তামিমার সঙ্গে ১১ বছরের দাম্পত্য জীবন কাটিয়েছেন তিনি। তাদের ঘরে আট বছর বয়সী মেয়েসন্তান রয়েছে।

রাকিব হাসান আরও বলেন, ২০১১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি তিন লাখ টাকা দেনমোহরে তামিমার সঙ্গে আমার বিয়ে হয়। বিয়ের পর অনেক বছর তামিমার পক্ষের কোনো আত্মীয়স্বজনের দেখা পাইনি।

বছর চারেক আগে আমার ভাইয়ের কাছ থেকে কয়েক লাখ টাকা ঋণ নিয়ে তামিমাকে সৌদি এয়ারলাইনসে চাকরি পাইয়ে দিই। এই চাকরি পাওয়ার পর থেকেই সে (তামিমা) বদলে যেতে থাকে।

আপ্লুতকণ্ঠে রাকিব হাসান আরও বলেন, নাসিরের ফেসবুকে পোস্ট করা সেই বিয়ের ভিডিও আমার মেয়ে দেখে অঝোরে কাঁদছে। আমাকে কোনো নোটিশ না দিয়ে, কোনো কাগজপত্র না পাঠিয়ে কেন এভাবে অন্যের স্ত্রী হতে চলে গেল তামিমা? আমি বুঝতে পারছি না। এখনও আমাদের ডিভোর্স হয়নি। আমার অবুঝ মেয়ে কী দোষ করেছে? যে এখন মায়ের দ্বিতীয় বিয়ের ভিডিও দেখে কাঁদছে?- এমন প্রশ্নও রাখেন তামিমার প্রথম স্বামী।

নাসির হোসেনের সঙ্গে কবে কীভাবে তামিমার যোগাযোগ হলো, সে বিষয়ে কিছু জানতেন কিনা- এ প্রশ্নের জবাবে রাকিব বলেন, বছরখানেক আগে আমি তামিমার ইনস্টাগ্রামে নাসির হোসেনের সঙ্গে তার ছবি দেখেছিলাম। এমন একটি ছবি নাসিরও ফেসবুকে দিয়েছিল। তখন তামিমা বলেছিল– নাসির হোসেন তার বন্ধু।

এ বিষয়ে জানতে ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও তার স্ত্রী তামিমা তাম্মির সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে তাদের পাওয়া যায়নি।

ক্রীড়া ডেস্ক,২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১

Share