‘সন্ধ্যায় সবার অগোচরে ওই বাসায় প্রবেশ করে রাতে শিলপাটার শিল দিয়ে ৫জনকে খুন করি’
নারায়ণগঞ্জ শহরের বাবুরাইলে একটি ফ্লাট বাসায় একই পরিবারের ৫জনকে খুনের ঘটনায় নিজের সম্পৃক্ততা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী প্রদান করেছে ওই ঘটনায় নিহত তাসলিমার স্বামী শফিকুল ইসলামের ভাগ্নে মাহফুজ। মাহফুজ হত্যাকাণ্ডের শিকার পাঁচজনকেই শিলপাটার শিল দিয়ে আঘাত করে নিজেই হত্যা করেন বলেও স্বীকার করেন।
আজ বৃহস্পতিবার ১২ টার দিকে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাইদুজ্জামান শরীফের আদালতে ওই জবানবন্দী রেকর্ড করা হয়।
পরে দুপুর ১টার দিকে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মাহফুজ ১৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় সবার অগোচরে ওই বাসায় প্রবেশ করে একটি খাটের নিচে লুকিয়ে থাকে। পরে রাত ২টার দিকে খাটের নিচ থেকে বের হলে মোশাররফ বিষয়টি টের পান। এ সময় ঘুমন্ত অবস্থায় সিল-পুতা দিয়ে মোশারফের মাথায় আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এর ভোরে লামিয়া ঘুম থেকে উঠে ওয়াস যান।
ওয়াস থেকে বের হলে মাহফুজ পুতা দিয়ে মাথায় আঘাত করলে তার মৃত্যু হয়। মৃতদেহটি মোশাররফের রুমে রেখে দরজা ভেতর থেকে বন্ধ করে রাখে মাহফুজ। পরদিন সকালে তাসলিমার ছেলে শান্ত স্কুলে যায়। পরে তাসলিমাকে একই কায়দায় হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ড দেখে ফেলায় তাসলিমার মেয়ে সুমাইয়াকে হত্যা করা হয়। আর স্কুল থেকে বাসায় ফেরার পর শান্তকে হত্যা করে ঘরের দরজা বাইরে থেকে তালা দিয়ে পালিয়ে যায় মাহফুজ।

এর আগে ডিবিতে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে মাহফুজ স্বীকার করেছিল, তার মামী লামিয়ার সঙ্গে মাহফুজের পরকীয়া সম্পর্ক ছিল। তবে বিষয়টি পরিবারের লোকজন মেনে নেয়নি। উল্টো তাসলিমা বিষয়টি তার স্বামী শফিকুল ইসলামকে জানালে পারিবারিক শালিস হয়। এরপর থেকে বাসায় মাহফুজকে না আসার কথা বলে পরিবারের লোকজন। এসব নিয়েই মূলত মাহফুজ ক্ষুব্ধ হয়ে একাই এ নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটায়। ঘরে থাকা ধাতব বস্তু দিয়ে ৫ জনকে আঘাত করে হত্যা করা হয়।
অন্যদিকে ১৯ জানুয়ারি গ্রেপ্তার ১২ লাখ টাকা ঋণদাতা ঢাকার কলাবাগান এলাকার নাজমা আক্তারকে ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে ডিবি।
প্রসঙ্গত, ১৬জানুয়ারী রাতে বাবুরাইল এলাকা থেকে তাসলিমা, তার ছেলে শান্ত ও মেয়ে সুমাইয়া, ভাই মোরশেদুল ওরফে মোশারফ ও জা লামিয়ার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তাদেরকে মাথায় ভোতা অস্ত্রের আঘাতে ও কয়েকজনকে শ্বাসরোধে হত্যা করে ঘাতকরা। রবিবার সকালে নিহত তাসলিমার স্বামী শফিকুল ইসলাম বাদি হয়ে ভাগ্নে মাহফুজ, ঢাকার কলাবাগানের নাজমা ও শাহজাহানের নাম উল্লেখ করে তাদেরকে সন্দেহ করে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওইদিন রাতেই মামলাটি জেলা গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
নিউজ ডেস্ক || আপডেট: ০৬:৫৬ পিএম, ২১ জানুয়ারি ২০১৬, বৃহস্পতিবার
এমআরআর
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur