চাঁদপুর

সত্যের বিপক্ষে যাননি চাঁদপুরের কৃতি সন্তান মিজান মালিক

কবিতা সমাজ কিংবা রাষ্ট্রের কি দরকারে লাগে? একথা কবিতাবিরোধী মানুষের ভাবনায় উঁকি দেয়। এর জবাব কবি নিজেই তৈরি করেন- কবিতা রাষ্ট্রের নয় মানুষের দরকার। যেদিন কবিতার জন্ম হয়েছিল- সেদিন থেকেই একদল লোক চিৎকার ছুড়ে দিয়েছে কবিতা থাকবে না। কিন্তু হা হতোষ্মি আজ প্রায় পাঁচ হাজার বছরের ইতিহাসে কবিতাই টিকে আছে সদর্পে।

কত গোত্রপ্রধান, মহাজন, রাষ্ট্রপ্রধান, সেনাপতি, রাজা-বাদশা, মহারাজা, সামন্ত আর বণিকদের বিরুদ্ধে এ সহজ সরল মানুষগুলো সাহসের সঙ্গে সত্য উচ্চারণ করেছে। সেই থেকে আজকের মিজান মালিক পর্যন্ত কেউ সত্যের বিপক্ষে যাননি। প্রেম আর বিপ্লব সমর্থক। বাংলা কবিতায় রোমান্টিক দ্রোহবাদের ধারাটি প্রবল। এ ধারায় নজরুলই সর্বোত্তম উদাহরণ। মোর এক হাতে বাঁকা বাঁশের বাঁশরী আর হাতে রণতূর্য। কবির হাতে ও হৃদয়ে রণতূর্য থাকে।

সেই তূর্যবাদকের একজন মিজান মালিক। সুকান্ত ভট্টাচার্য, দিনেশ দাস, সুভাষ মুখোপাধ্যায় প্রমুখ কবিতাকে নিতে চেয়েছিলেন মানুষের মুখের কাছে, বুকের কাছে। কবি মিজান মালিক ও মানুষের হৃদয়ের কথাটি বলতে চান। তিনিও কবি ও সত্য উচ্চারণে পারঙ্গম। সম্প্রতি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র আবরার হত্যাকাণ্ডের বর্বরতা কবিকে স্পৃষ্ট করেছে। ‘আমি ভর্তি হলাম বুয়েটে, মা’ কবিতাটি হৃদয়ভাঙ্গা কান্নার পথ করে দেয়। পাঠক পড়ুন কবিতাটির একটি অংশ- ‘আমি ওদের বলেছিলাম- বুয়েট ছেড়ে চলে যাব।
ওরা আমাকে যেতে দিলো না।
বলেছিলাম আমাকে আর মেরো না।
ওরা শুনতেই চাইলো না।’
এ আকুতি আমাদের ভাবায়। প্রতিশোধের সহগামী করে। এ কবির রোমান্টিকতা, আবেগের অমিত ব্যবহার পাঠককে স্বতঃস্ফূর্ত করে। একই সঙ্গে মিজান জগদ্দল পাথরের মতো সমাজের বুকে চেপে থাকা সাহেবের চেয়ার সরাতে নিরবচ্ছিন্নভাবে কবিতা লিখুক প্রত্যাশা করি। তার কাব্যগ্রন্থের পাঠকরা একাত্ম হোক অতিমিশ্র অনুভবের সঙ্গে।
গল্প ছাড়া মলাট, মিজান মালিক, প্রচ্ছদ ধ্রুব এষ প্রকাশক ঐতিহ্য, মূল্য ১৭০ টাকা। আরো পড়ুন- করোনা থেকে রক্ষায় চাঁদপুরের কৃতি সন্তান সাংবাদিক মিজান মালিকের ‘প্রার্থনা’
লিখেছেন :রেজাউদ্দিন স্টালিন, ১০ জুলাই ২০২০

Share