Home / জাতীয় / রাজনীতি / শেখ হাসিনা আমেরিকা থেকে উড়ে এসেছেন খালি হাতে: কুমিল্লায় মির্জা ফখরুল
শেখ হাসিনা

শেখ হাসিনা আমেরিকা থেকে উড়ে এসেছেন খালি হাতে: কুমিল্লায় মির্জা ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, শেখ হাসিনা আমেরিকা থেকে উড়ে এসেছেন খালি হাতে, বহু চেষ্টা করেছেন ভিসা নীতি বাতিল করে নিজেদের রক্ষা করতে। তারা বিদেশীদের বুঝাতে বহু চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। 

বিদেশীরা তাদের কথা শোনে নাই। সাড়া দেয়নি। বাংলাদেশের মানুষ ভোট চুরি নির্বাচন মেনে নিবে না। এদেশের মানুষ আগের মতো ভোট চুরি নির্বাচন করতে দিবে না। 

এবার নির্বাচন হবে একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। তাদের বিনা ভোটে ক্ষমতা যেতে দেওয়া হবে না। শেখ হাসিনার অধীনে আমরা নির্বাচনে যাব না। আজ সব গণতান্ত্রিক শক্তি একজোট হয়েছে। কথা পরিষ্কার, নির্বাচন হবে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। আজকে তারা ভয় দেখায়। ভয়ে কোনও কাজ হবে না।’

সরকার পতনের এক দফা দাবীতে বৃহস্পতিবার সকালে  ঢাকা – চট্টগ্রাম রোডমার্চ উদ্ধোধন উপলক্ষে কুমিল্লার কালাকচুয়ায় আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে  বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন। 

সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির ও সাবেক মন্ত্রী আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

কুমিল্লা দক্ষিন জেলা বিএনপির আহবায়ক ও  কেন্দ্রীয় বিএনপি’র ত্রান ও পুনঃর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক আমিন উর রশিদ ইয়াছিন এর সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ শাহজাহান, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, আব্দুল্লাহ আল নোমান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেস্টা মনিরুল হক চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া, জাসাস কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সালাহউদ্দিন ভূঁইয়া শিশির, কুমিল্লা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক উৎবাতুল বারী আবু ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব হাজী জসিমের সঞ্চালনায় অংশ নেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির জাকারিয়া তাহের সুমন, মো. আবুল কালাম, ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামল, শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক, শামসুদ্দিন দিদার,বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন ভূঁইয়া শিশির, একরামুল হক বিপ্লব, এডভোকেট জিয়া উদ্দিন, মোঃ শামিম সহ আরও অনেকে।

রোডমার্চে কুমিল্লা উত্তর, দক্ষিণ এবং মহানগরসহ পাশ্ববর্তী চাঁদপুর ও ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা অংশ নেয়।

মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, একটি ফ্যাসিবাদী লুটেরা সরকার অত্যাচার নিযাতন করে আমাদের বুকের উপর চেপে বসে আছে। এ সরকার দেশের জনপ্রিয় নেতা আমাদের গণতন্ত্রের মাতা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা ও সাজা দিয়ে আটকে রেখেছে। তাকে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ দিচ্ছে না। তারা জানে খালেদা জিয়া সুস্থ হয়ে ফিরলেই তারা শেষ। বাংলাদেশের গণতন্ত্র থাকবে কী থাকবে না এবার নির্ধারণ হবে। তারা নাকি উন্নয়ন করছে। তারা আজ রূপপুরে ইউরেনিয়াম নিয়ে আসছে। 

ইউরেনিয়ামের কারণে মাইলের পর মাইল ধ্বংস হয়ে যাবে। কোনও নিরাপত্তা বিধান না করে আজ দুর্নীতির করার জন্যই এমন প্রকল্প নিয়ে আসছে সরকার। তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলা দিয়ে সাজা দিয়ে নির্বাচিত করে রেখেছে। হাজার হাজার নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। 

সরকার পতনের একদফা দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচি হিসেবে ঘোষিত ৫ বিভাগে রোড মার্চের অংশ হিসেবে চট্টগ্রামে রোড মার্চ করেছে বিএনপি। 

কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে বাস, ট্রাক, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল নিয়ে কয়েক হাজার নেতাকর্মী রোড মার্চের বহরে যোগ দেন। রাস্তার দুই ধারে দাড়িয়ে উৎসুক জনতা ও দলীয় নেতাকর্মীরা রোড মার্চের বহরকে স্বাগত জানান।

রোড মার্চে কুমিল্লার দাউদকান্দির গৌরীপুরে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ছেলে ড. খন্দকার মারুফ হোসেনের নেতৃত্বে বিপুল নেতাকর্মী রোড মার্চের বহরে যোগ দেন।

এছাড়া  কালাকচুয়া থেকে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদের অনুসারী বহু নেতাকর্মী মাইক্রাবাস, ট্রাক, মোটরসাইকেল নিয়ে রোড মার্চের বহরে যোগ দেন। 

রোড মার্চ কুমিল্লা সদর দক্ষিণের সোয়াগাজীতে পৌঁছলে দ্বিতীয় পথসভা হয়। সেখানে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরীর নেতৃত্বে বিপুল নেতাকর্মী শোডাউন করেন। 

এদিকে বুধবার রাত থেকেই ঝরছিল ঝিরিঝিরি বৃষ্টি, যা সকালে শুরু হয় মুষলধারে। বৃষ্টির মধ্যেই উদ্বোধনী সমাবেশে জড়ো হন নেতাকর্মীরা। সকাল ১০টার দিকে বৃষ্টি থেমে গেলে উদ্বোধনী সমাবেশ শুরু হয়। মহাসচিবের বক্তব্যের পর প্রায় ১৫৫ কিলোমিটার পথে শুরু হয় রোড মার্চ।

রোড মার্চকে ঘিরে এ মহাসড়কের কুমিল্লা  পর্যন্ত ফেনী অংশে জেলাসহ সবকটি উপজেলা থেকে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মীদের ঢল নামে। এ সময় তারা সরকার পতনের নানা স্লোগানে ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে মহাসড়কের দু’পাশে সমবেত হন।  এতেকরে সকাল ৯টায় থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চান্দিনা থেকে চৌদ্দগ্রাম এলাকা অংশ পর্যন্ত তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। ফলে যাত্রীদের অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

ময়নামতি হাইওয়ের ইনর্চাজ মোহাম্মদ মিজান উদ্দিন বলেন, বিএনপির রোর্ড মার্চকে ঘিরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের উভয়মুখে যানজট সৃষ্টি হয়েছে। 

প্রতিবেদক: জাহাঙ্গীর আলম ইমরুল, ৫ অক্টোবর ২০২৩