শীতে অভিনেত্রীরা যেভাবে শরীরের পরিচর্যা করে

শীতকাল চলে আসছে! শীতকাল মানেই প্রকৃতির শুষ্ক হয়ে ওঠা। প্রকৃতির এই শুষ্কতার পাশাপাশি এসময়ে চেহারাও হয়ে ওঠে শুষ্ক ও অনুজ্জ্বল। আর এই শুষ্ক ও অনুজ্জ্বল চেহারার জন্য এসময়ে দরকার বাড়তি যত্ন। শীতকালে বিশেষ করে ত্বক ও চুল রুক্ষ হয়ে যায়, তাই ত্বক ও চুলের বিশেষ যত্ন নেয়া প্রয়োজন। সঠিক যত্নের মাধ্যমে আমরা শীতকালেও ত্বক ও চুলের সৌন্দর্য বজায় রাখতে পারব।

ত্বকের যত্নে –

শীতকালে ক্রিম, সাবান যাই ব্যবহার করবেন লক্ষ রাখবেন তা যেন ময়েশ্চারাইজারযুক্ত হয়। দিনে অন্তত দু’বার ক্রিম ব্যবহার করবেন। ভিটামিন-ই যুক্ত ক্রিম ব্যবহার করা ভালো।

সাধারণত আমরা মনে করি, শীতকালে সানস্ক্রিন প্রয়োজন হয় না। এটি ভুল ধারণা। একথা ঠিক যে, সূর্যরশ্মি সুস্থ ও সুন্দর ত্বকের জন্য প্রয়োজন। এতে যে ভিটামিন পাওয়া যায় তা প্রয়োজনীয়। কিন্তু বেশি সূর্যরশ্মি ত্বকে অপূরণীয় ক্ষতি ও অকালবার্ধক্যের কারণ। সানস্ক্রিন এই রশ্মি দাহ্যতা কমিয়ে দেয়। শীতকালেও নিয়মিত সানস্ক্রিন ব্যবহার করা জরুরি।

শীতে বাতাসের আর্দ্রতা কম থাকে বিধায় ত্বকের আর্দ্র ভাব কমে যায়। এর ফলে ত্বকে বলিরেখা দেখা দিতে পারে। এ ক্ষেত্রে ময়শ্চারাইজারযুক্ত ক্রিম ব্যবহার করতে হবে। তা ছাড়া গোলাপজল ও গ্লিসারিন ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। এছাড়া ব্যবহার করতে পারেন অলিভ ওয়েল। অলিভ ওয়েল বা ময়েশ্চারাইজার পুরো মুখে ভালো করে ম্যাসাজ করে ঘুমিয়ে পড়ুন। এতে ত্বক পরিষ্কারও হবে এবং সকালে ত্বক হয়ে উঠবে প্রানবন্ত।

শীতের আরেক সমস্যা হচ্ছে ঠোঁট ফাটা ও কালো হয়ে যাওয়া। এর সমাধানও গ্লিসারিন। বারবার জিভ দিয়ে ঠোঁট ভেজাবেন না। আর ঘুমাতে যাওয়ার আগে গ্লিসারিন অথবা লিপ জেল লাগাবেন। ঠোঁটে বা হাত পায়ের চামড়া ফেটে গেলে ভিটামিন-ই যুক্ত

ভেসলিন লাগাবেন।
অন্য সময়ের থেকে শীতের ফেসপ্যাক হবে একটু আলাদা। যেমন-
-পাকা কলা, পাকা পেপে ও ময়দা এক সঙ্গে পেস্ট তৈরি করে নিন। এরপর এই পেস্টটি ১০/১৫ মিনিট মুখে লাগিয়ে রাখুন। এরপর হালকা গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহারে ত্বক হয়ে উঠবে উজ্জ্বল ও মসৃন।

চুলের যত্নে –

বাতাসে আর্দ্রতা কম থাকার কারণে শীতে চুল হয়ে উঠে রুক্ষ এবং খুশকির উপদ্রব হয়। খুশকির জন্য ভালো শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন।
চুল সাধারণত দু’রকম, তৈলাক্ত ও শুষ্ক। তৈলাক্ত চুলের ক্ষেত্রে স্ক্যাল্প পরিষ্কার রাখা জরুরি। একদিন অন্তর অন্তর চুলের উপযোগী শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুলে ভালো। আর শুষ্ক চুলের ক্ষেত্রে হটওয়েল থেরাপি ভালো কাজ করে। সামান্য গরম অলিভ অয়েল চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করে তারপর গরম পানিতে তোয়ালে ভিজিয়ে মাথায় জড়িয়ে রাখতে হবে। এরপর চুলের উপযোগী শ্যাম্পু ব্যবহার করে চুল ধুয়ে ফেলবেন।

রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে পারলে বজ্রাসনে বসে চুল আঁচড়াবেন। এতে চুল পড়া বন্ধ হবে এবং আপনি মানসিক চাপমুক্ত হয়ে ঘুমাতেও পারবেন।
শীত কালে অনেকেরই চুল রুক্ষ হয়ে যায় এং আগা ফেটে যায়। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে শীতের রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে চুলে নারিকেল তেল বা অলিভ অয়েল গরম করে ম্যাসাজ করেন নিন। চুলের আগায় ও গোড়ায় ভালো করে হালকা গরম তেল ম্যাসাজ করে ঘুমিয়ে যান। সারা রাত চুলে তেলের উপস্থিতিতে চুলের রুক্ষ ভাব কেটে যাবে এবং চুল হয়ে উঠবে ঝলমলে উজ্জ্বল।
ভিটামিন-ই চুলের জন্য অনেক ভালো। ২ দিন পর পর যেকোন তেলের সাথে ভিটামিন-ই ক্যাপসুল ভেঙ্গে এর তেলটি মিশিয়ে মাথায় ভালো ভাবে লাগিয়ে ২-৩ ঘণ্টা রাখুন। সারারাত রাখলে ভালো হয়। সকালে ধুয়ে ফেলুন। তবে বেশি গরম পানি দিয়ে কখনো চুল ধুবেন না।

শীতকালে ত্বকের ও চুলের যত্নে কিন্তু আপনাকে খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারেও মনোযোগী হতে হবে। শীতের শাকসবজি ও ফল সুন্দর স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ত্বক ও চুলের জন্য প্রয়োজন। শিম, বরবটি, নানারকম শাক, মটরশুঁটি, ফুলকপি ইত্যাদি প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখুন। হাতের নাগালের সব ফলই প্রতিদিন খাবেন। যেমন-আপেল, আমলকী কিংবা আমড়া সে যা-ই হোক না কেন।

শীতে এইসহজ কিছু পদ্ধতিগুলো অনুসরন করলেই ত্বক এবং চুল উজ্জ্বল, মসৃন রাখা যায়।

নিউজ ডেস্ক : আপডেট ০৬ এএম, ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৫ বৃহস্পতিবার।

ডিএইচ

Share