সত্তর ঊর্ধ্ব সিরাজ মিয়া।একটা সময় মেঘনা নদী দাপিয়ে বেড়াতেন নৌকা-জাল নিয়ে। নিজের বসতভিটা যা ছিলো মেঘনার অতলে হারিয়ে গেছে সাত বারের নদী ভাঙ্গনে। বর্তমানে সরকারি জায়গায় বসবাস করছেন। ছেলে-মেয়ে যে যার মতো সংসার নিয়ে ভালোই আছে। এই বয়সে তাই জীবীকা নির্বাহের একমাত্র অবলম্বন পিঠা আর শরবত।
চাঁদপুর জেলার প্রধান বানিজ্যিক এলাকা পুরাণবাজারে নৃত্যদিন দেখা মিলে তার। বর্তমানে শীতে পিঠা আর গরমে শরবত বিক্রি করেই চলছে সিরাজ মিয়ার সংসার। সারাদিনে ৮শ’থেকে ৯শ’ টাকার পিঠা বিক্রি হয়। এতে খরচবাদে লাভ থাকে ৩ থেকে ৪টাকা। এই নিয়েই কোনোমতে ভালো আছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পুরাণবাজার রয়েজ রোডে পিঠা বিক্রির সময় কথা হয় সিরাজ মিয়ার সাথে।
পিঠা বানাতে বানাতে সিরাজ মিয় বলেন, “অনেক বছর ধরে শীতের সময় পিঠার ব্যবসা করি। পুরাণবাজারে আমার আগে কেউ পিঠা বানায়নি। গরমে শরবত বিক্রি করি। প্রতিদিন যা আয় হয় তা দিয়ে বুড়াবুড়ির দিন চলে যায়।’
এসব কথা বলার ফাঁকে ফাঁকেই পিঠা বানানোর কাজ চালিয়ে যেতে থাকেন সিরাজ মিয়া। তিনি বলেন, চিতল পিঠা আর ভাপা পিঠা ৫ টাকা করে বিক্রি করি। পিঠার সাথে সর্ষেবাটা, মরিচ ও শুটকি ভর্তা ফ্রি দেয়া হয়।
পিঠা বানানোর কাজ কার থেকে শিখেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসব আমি নিজে নিজেই শিখছি।
এ দোকানেই একসঙ্গে পিঠা খাওয়া দুই তরুন রাজন ও জুয়েল জানান, শীতের সাথে গরম পিঠার একটি সুসম্পর্ক রয়েছে। তাই শীতের দিনে পিঠা আর খেজুররস না খেলে শীতের আনন্দটাই উপভোগ্য হয়ে উঠে না। আর শহরের বাড়িতে পিঠা বানানোর খুব একটা প্রচলন নেই বললেই চলে। তাই সুযোগ পেলেই বাহিরের দোকান থেকে পিঠা কিনে খাই।
প্রতিবেদক:আশিক বিন রহিম
৮ ফেব্রুয়ারি,২০১৯
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur