Home / সারাদেশ / শীঘ্রই চাঁদপুরসহ সারাদেশে নদী ও খাল দখলদারদের তালিকা প্রকাশ
Dhakatia-River-dhokok
চাঁদপুর ডাকাতিয়া নদী দখলের একটি চিত্র। ফাইল ছবি

শীঘ্রই চাঁদপুরসহ সারাদেশে নদী ও খাল দখলদারদের তালিকা প্রকাশ

নদী রক্ষা কমিশনের প্রকাশিত প্রথম তালিকায় থাকা ৪৯ হাজার ১৬২ দখলদারকে উচ্ছেদে ‘ক্র্যাশ প্রোগ্রাম’ চালাতে প্রশাসনকে চিঠি দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার।

তিনি বলেন, সারা দেশে নদী-খাল দখলকারীদের বিষয়ে তথ্য চেয়ে বিভিন্ন সংস্থা ও জেলা-উপজেলা প্রশাসনে চিঠি দেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে অনেকে তথ্য দিয়েছে। বাকি তথ্য পাওয়ার পর নদী-খাল দখলকারীদের দ্বিতীয় তালিকা প্রকাশ করা হবে। প্রয়োজনে দখলদারদের তৃতীয় তালিকাও তৈরি করা হবে।

রাজধানীতে নদী রক্ষা কমিশনের কার্যালয়ে ২০১৮ সালের প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে শনিবার তিনি এসব কথা বলেন। নদী রক্ষা কমিশন আইনের খসড়া তৈরি করা হচ্ছে বলেও তিনি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এবারই প্রথম প্রতিবেদন তৈরি করেছে সংস্থাটি। প্রতিবেদন মার্চের মধ্যে প্রকাশের কথা থাকলেও আর্থিক ও জনবল সংকটে দেরি হয়।

মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, ইতিমধ্যে সারা দেশের ৪৯ হাজার ১৬২ জন নদী ও খাল দখলদারের তালিকা ওয়েবাসাইটে প্রকাশ করেছি। তালিকা অনুযায়ী দখলদারদের উচ্ছেদে জেলা প্রশাসকদের চিঠি দিয়েছি। আশা করছি, ১ বছরের মধ্যে এসব দখলদার উচ্ছেদ হবে।

উচ্ছেদ অভিযানে বাধা আসার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, অভিযান চালাতে গেলে প্রভাবশালীরা বাধা দেন। অভিযান চালানোর কারণে দু-একজনকে প্রত্যাহারের ঘটনা ঘটেছে। অনেক জেলা প্রশাসক ও ইউএনও একই ধরনের শঙ্কার কথা জানিয়েছেন। আরেকটি সমস্যা হচ্ছে, উচ্ছেদ চালানোর জন্য যে অর্থ প্রয়োজন হয় তা বরাদ্দ নেই। এসব কারণেও অভিযানে শিথিলতা আছে।

তিনি জানান, দেশের প্রকৃত নদীর সংখ্যা নির্ণয়ের কাজ চলছে। কোথাও ৪০৫টি, কোথাও ১ হাজার ৩০০টি রয়েছে। সঠিক সংখ্যা নির্ণয় করা হবে।

দখলদারদের দ্বিতীয় তালিকা তৈরি প্রসঙ্গে কমিশন চেয়ারম্যান বলেন- জেলা প্রশাসক, বিআইডব্লিউটিএ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে তথ্য চেয়েছি।

কিছু কিছু তথ্য পেয়েছি। পুরো তালিকা পাওয়ার পর তা যাচাই-বাছাই করে দ্বিতীয় তালিকা প্রকাশ করব। এতে কয়েক মাস লেগে যেতে পারে।

বিদ্যমান ফৌজদারি কার্যবিধি এবং অন্যান্য আইনে ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ নদী দখলকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে মন্তব্য করে মুজিবুর রহমান বলেন, সিআরপিসির ১৩৩, ১৩৫ ও ১৩৯ ধারা অনুযায়ী নদী দখল ও দূষণ ফৌজদারি অপরাধ। পুলিশের কাজ হচ্ছে এসব ধারা লঙ্ঘনকারীর বিরুদ্ধে ক্রিমিনাল মামলা করা ও ব্যবস্থা নিয়ে ম্যাজিস্ট্রেটকে জানানো।

কিন্তু দুঃখজনক হচ্ছে, নদী রক্ষা করা যাদের দায়িত্ব তাদের চেয়ে জনগণ অনেক বেশি সচেতন। দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা সচেতন হলে দখল ও দূষণের হাত থেকে নদী বাঁচানো যাবে।

নদী রক্ষা কমিশন আইনের খসড়া করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, নদী রক্ষার কাজে যারা অসহযোগিতা করবে তাদের তলব করা বা তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার বিধান রাখার প্রস্তাব করব। এছাড়া নদী রক্ষায় স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল রাখার বিধান থাকবে।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, নদী দখলকারীদের উচ্চ আদালত ব্যাংক ঋণ ও নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করেছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়েছি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- নদী রক্ষা কমিশনের সদস্য (সার্বক্ষণিক) মো. আলাউদ্দিন, পরিচালক জগন্নাথ দাস খোকন প্রমুখ।

বার্তা কক্ষ, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৯