ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ওই বাড়ির মৃত আঃ হাকিমের পুত্র মোঃ জামাল হোসেন (৪০) গত ১৪ এপ্রিল নিখোঁজ হয়েছে মর্মে তার স্ত্রী ফাতেমা বেগম হ্যাপি (৩৫) গত ২৮ এপ্রিল বৃহস্প্রতিবার শাহরাস্তি মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়রী নথিভূক্ত করেন। যার নং-১০৭৬।
ডায়রী করার পর থানা পুলিশ নিখোঁজ ব্যক্তির সন্ধানের জন্য বিভিন্ন থানায় অবহিত করেন। পরে পুলিশের বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হলে ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে।
অপরদিকে ফাতেমা বেগম ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে তার এক নিকটাত্মীয় আমির হোসেনের স্বরণাপন্ন হয়। আমির হোসেন ফাতেমার সাথে কথা বলে কিছুটা অনুমান করতে পেরে শাহরাস্তি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মিজানুর রহমানকে অবগত করেন।
পরে শাহরাস্তি গেইট দোয়াভাঙ্গা এলাকায় আমির হোসেন ফাতেমা বেগমকে কৌশলে ডেকে থানা হতে সাধারণ ডায়রী উত্তোলনের নাম করে অফিসার ইনচার্জ মিজানুর রহমানের পরিচয় গোপন করে তার সাথে থানায় পাঠিয়ে দেন। এরপর অফিসার ইনচার্জ থানায় এনে তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে সে হত্যার কথা স্বীকার করে এবং লাশ কিভাবে মাটি চাপা দেয়া হয়েছে তার বিবরণ দেন।
তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে শাহরাস্তি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মিজানুর রহমান, উপ-পরিদর্শক (এস.আই) মোঃ আবদুল মান্নান, মোঃ নিজাম উদ্দিন, সমীর মজুমদার ও মোঃ কামাল হোসেন সঙ্গীয় ফোর্স ঘটনাস্থলে গিয়ে বাড়ির পশ্চিম পাশের জমি থেকে গর্ত খুঁড়ে গলিত লাশ উত্তোলন করেন।
এ সংবাদ চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে হাজার হাজার নারী-পুরুষ ঘটনাস্থলে ভীড় জমায়।
এদিকে নিহতের ভাই আজাদ হোসেন জানান, আমার ভাই ১ পুত্র ও ২ কন্যা সন্তানের জনক। তিনি পারিবারিক ভাবে সুখেই ছিলেন। আমার ভাবির পরকীয়ার জেরে বিভিন্ন সময় ভাইয়ের সাথে বাকবিতন্ডা হতো। তার পরকীয়ার কারণেই আমার ভাই এ নির্মম হত্যার শিকার হয়েছে।
এ বিষয়ে শাহরাস্তি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মিজানুর রহমান জানান, প্রাথমিক স্বীকারোক্তিতে ফাতেমা জানায় ঘটনার রাতে তার স্বামীর জন্ডিসের ঔষুধের সাথে ৮টি ঘুমের ঔষুধ মিশিয়ে খাইয়ে দেন। স্বামী গভীর ঘুমে থাকাবস্থায় বালিশ চাপা দিয়ে তাকে হত্যা করে হাত-পা বেঁধে ফেলে। পরে পাশের ঘরে ঘুমিয়ে থাকা তার ৯ম শ্রেণিতে পড়–য়া পুত্র জাহিদুল ইসলাম ফাহিমকে (১৩) ডেকে তোলে তার বাবা আত্মহত্যা করেছে বলে জানায়। দিনের বেলায় স্থানীয়দের বিষয়টি বিশ্বাস করাতে পারবে না বলে রাতেই বাড়ির পশ্চিম পাশের জমিতে মাটি চাপা দিবে বলে ছেলেকে রাজি করে।
এরপর মা ও ছেলে দুজনে মিলে তার লাশ মাটি চাপা দেয়। এ ঘটনায় স্ত্রী ফাতেমা বেগম হ্যাপী ও ছেলে থানায় আটক রয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
: আপডেট ২:৪২ এএম, ০১ মে ২০১৬, রোববারডিএইচ