শাহরাস্তিতে প্রাথমিকের পিয়নের হাতে প্রধান শিক্ষক লাঞ্ছিত

চাঁদপুরের শাহরাস্তির বাদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পিয়ন ইমাম হোসেনের হাতে লাঞ্ছিত ও শারিরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বাদিয়া মাহবুবুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সামছুল হুদা পাটওয়ারী।

এমন ঘটনার প্রতিকার চেয়ে মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এর কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই প্রধান শিক্ষক।

জানা গেছে, ২০১৮ সালে বাদিয়া মাহবুবুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ে একটি ল্যাপটপ চুরির অভিযোগে থানায় মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলার স্বাক্ষী হিসাবে গত ৪ মাস পূর্বে আদালতে স্বাক্ষ্য দেন, বাদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পিয়ন ইমাম হোসেন। এই স্বাক্ষ্য দেওয়ার কারণে তিনি মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) বেলা পৌনে একটার দিকে প্রধান শিক্ষকের কাছে ১২ হাজার টাকা চান।

এ সময় ১২ হাজার টাকা না পেয়ে তিনি তাৎখনিক প্রধান শিক্ষকের কাছে সাড়ে চার হাজার টাকা চান। কিন্তু প্রধান শিক্ষক মো. সামছুল হুদা পাটওয়ারী টাকা না দিলে তাঁর প্রতি ক্ষিপ্ত হন ইমাম হোসেন। এ সময় তিনি প্রধান শিক্ষকের উপর চড়াও হয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উপস্থিতিতে তাকে মারধর ও টানা-হেচঁড়া করতে থাকেন। এসময় তাঁর ডাক-চিৎকারে শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষ থেকে বের হয়ে আসে।

পরবর্তীতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে ইমাম হোসেন প্রধান শিক্ষক মো. সামছুল হুদা পাটওয়ারীকে মারধর করতে করতে ও টেনে-হেঁচড়ে বিদ্যালয় মাঠে নিয়ে যান এবং তাঁকে প্রাণনাশের হুমকিও দেন। এছাড়াও তাঁর এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকরা বাধা দিতে আসলে ইমাম হোসেন তাদেরকেও প্রাণনাশের হুমকি দেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। যার ফলে প্রধান শিক্ষক নিরাপত্তায় হীনতায় ভুগছেন বলে জানান।

এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে প্রধান শিক্ষক মো. সামছুল হুদা পাটওয়ারী এদিন (মঙ্গলবার) শাহরাস্তি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেন। যার অনুলিপি তিনি জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, জেলা শিক্ষা অফিসার, মেয়র, শাহরাস্তি পৌরসভা, অফিসার ইনচার্জ (ওসি), শাহরাস্তি থানা, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, শাহরাস্তিকে দিয়েছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন।

এদিকে মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করে বাদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পিয়ন ইমাম হোসেন জানান, তিনিসহ বিদ্যালয়ের আরো দুইজন শিক্ষক ওই মামলায় স্বাক্ষী দিয়েছেন। এজন্য যে টাকা ব্যয় হয়েছে, তা তিনি প্রধান শিক্ষকের অনুমতিক্রমেই খরচ করেছেন। কিন্তু গত চারমাস যাবৎ তিনি তার খরচের টাকা দিচ্ছেন না। সবশেষ এই রমজান মাসেও তিনি দেই-দিচ্ছি বলে বেশ কয়েকবার তাকে ঘুরিয়েছেন।

তিনি বলেন, সবশেষ মঙ্গলবার আমি স্যারের (প্রধান শিক্ষক) কাছে টাকার জন্য যাই। কিন্তু তিনি আমাকে টাকা না দিয়ে আমার সাথে রূঢ় আচরণ করেন। এসময় তাঁর সাথে কথা কাটাকাটি (তর্ক-বির্তক) হয়। কিন্তু মারধরের কোন ঘটনা ঘটেনি। তিনি আমার নামে মিথ্যা অপবাদ রটাচ্ছেন।

এ বিষয়ে শাহরাস্তি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ হুমায়ন রশিদের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শাহরাস্তি প্রতিনিধি, ১২ এপ্রিল ২০২৩

Share