পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) তদন্তে জনপ্রিয় চিত্রনায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার (ইমন) ওরফে সালমান শাহর আত্মহত্যায় শাবনূরকে নিয়ে দ্বন্দ্বের প্রসঙ্গ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন শাবনূর। পিবিআইয়ের তদন্ত তুলে ধরার পরপরই অস্ট্রেলিয়ায় থাকা শাবনূরের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করা হয়। সিডনি থেকে ঢালিউডের জনপ্রিয় এই অভিনয়শিল্পী বলেন, ‘একজন মৃত মানুষের সঙ্গে আমাকে জড়িয়ে কথা বলাটা খুব বিশ্রী মনে হয়েছে।’
শাবনূর বলেন, ‘আমি তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। কিসের জন্য আমার নাম জড়ানো হচ্ছে! সালমান যদি আত্মহত্যাও করে, তাহলে আমার কারণে কেন করবে! আমার নামটা জড়ানোর আগে সবারই একবার ভাবা উচিত।’
পিবিআইয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে ক্ষোভ প্রকাশ করে শাবনূর বলেন, ‘আমাকে জড়িয়ে এমন কথা কেন বলা হচ্ছে, তা আমি জানি না! সালমান ও আমাকে জড়িয়ে এই ধরনের কথা কেউ যদিও বলে থাকে, সেটার আমি ঘোর বিরোধিতা করছি। সালমান শুধুই আমার নায়ক ছিল, সহশিল্পী ছিল, বন্ধু ছিল, এর বাইরে আর কোনো সম্পর্ক ছিল না। আমি আগেও বলেছি, তাকে আমি ভাইয়ের মতো শ্রদ্ধা করতাম। তার সঙ্গে আমার ভাইবোনের সম্পর্ক ছিল। অন্য রকম পরিচ্ছন্ন সম্পর্ক ছিল। এটা নিয়ে এখন কেউ কিছু বললে তা তো আমি মানবই না। একজন মরা মানুষকে নিয়ে এত বছর পর এত বিশ্রী কথা বলার মনমানসিকতা কীভাবে সবার হয়, সেটাও আমি বুঝি না।’
এই অভিনেত্রী বলেন, ‘আমি তখন অবিবাহিত একটা মেয়ে। সালমান তো বিবাহিত। ওর স্ত্রীর সঙ্গেও আমার একটা ভালো সম্পর্ক ছিল। সালমানের স্ত্রী সব সময় আমাদের সঙ্গেই থাকত। প্রেমের সম্পর্কের কিছু একটা যদি হতো, এটা তখন সবাই বুঝতে পারত। এত বছর পর এই ব্যাপারটা নিয়ে আমাকে জড়িয়ে নোংরা উক্তি করার ব্যাপারটি মোটেও ভালো লাগছে না। কিছু মানুষ আমাকে জড়িয়ে গুজব ছড়িয়েছে। এখনো ছড়াচ্ছে।’
সালমান শাহকে নিয়ে শাবনূর এর আগে বলেছিলেন, ‘সালমানের কোনো বোন ছিল না। তাই সে আমাকে তার ছোট বোন হিসেবেই দেখত। আমাকে সে পিচ্চি বলে ডাকত। সালমানের মা-বাবাও আমাকে খুবই আদর করতেন। সালমানের কারণে তারা আমাকে তাদের মেয়ে হিসেবেই দেখতেন। সালমান যেহেতু আমাকে ছোট বোনের মতো দেখত, আমিও তাকে সেভাবেই সম্মান করতাম। তবে আমাদের মধ্যে কিন্তু বন্ধুত্বপূর্ণ একটা সম্পর্কও ছিল। সালমানের বউ সামিরাও কিন্তু আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু। সালমান নাচ একটু কম পারত। সে তুলনায় আমি নাচে বেশি পারদর্শী ছিলাম।’
তিনি আরও বলেছিলেন, ‘সালমান আমাকে প্রায়ই বলত, “আমাকে একটু নাচ দেখিয়ে দে তো।” আমিও আগ্রহ নিয়ে কাজটা করতাম। সালমান অনেক বড় মনের মানুষ। বয়সে বড় সবাইকে সে যথেষ্ট সম্মান করত। কোনো অহংকার তার মধ্যে ছিল না। অনেক বেশি ভালো ছিল। সহশিল্পীদের সবার প্রতি খুব আন্তরিক আর কাজপাগল একটা ছেলে ছিল। আমাদের দুজনের বোঝাপড়াটা ছিল চমৎকার। বলতে পারেন, একে অন্যের চোখের ইশারা বুঝতে পারতাম।’
সালমানের মৃত্যুসংবাদ কীভাবে পান? জানতে চাইলে শাবনূর বলেন, ‘সালমানের মৃত্যুসংবাদটা যখন পাই, তখন আমি বাসায় ছিলাম। হঠাৎ কে যেন ফোন করে জানায়, সালমান শাহ মারা গেছে। আমি উল্টো ধমক দিয়ে বলি, কী বলো এসব! আমার ছোট বোন বাইরে গিয়ে সালমানের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হয়ে আসে। আমি তখন পুরোপুরি হতবাক হয়ে যাই। এরপর এফডিসিতে সালমানকে দেখতে যাই।’
বার্তা কক্ষ ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur