লালসার শিকার মেয়েটি এখন মা : ছেলের বেশ ধরেও রক্ষা পেলনা

চাঁদপুর টাইমস ডেস্ক:

শার্ট-প্যান্ট পরা। মাথার চুল ছেলেদের মতো করেই ছাঁটা। দেখতে অবিকল ছেলে। নাম তার নাজমা আক্তার। বর্তমান বয়স ১৫ বছর। পেটের দায়ে বছর দুই আগে নিজের নাম পরিবর্তন করে নাজমুল ইসলাম নাম দিয়ে ছেলের ছদ্মবেশে রিকশা-ভ্যান চালাতে শুরু করেন তিনি। কিন্তু জীবন সংগ্রামে হেরে গিয়ে এক লম্পটের লালসার শিকার হয়ে তিনি এখন কুমারী মাতা। সোমবার দিনগত রাত ১টার দিকে বাগেরহাটের শরণখোলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তিনি একটি কন্যা সন্তান জন্ম দিয়েছেন।

পুরুষের পেটে সন্তান হয়েছে এই খবর ছড়িয়ে পড়লে তা দেখার জন্য সকাল থেকে হাসপাতালে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছে শত শত মানুষ। হাসপাতালে নারী-পুরুষের ঢল নেমেছে।

এই ঘটনার জন্য দায়ী মৃত শামছু তালুকদারের ছেলে ও উপজেলা সদর রায়েন্দা বাজারের হার্ডওয়ার ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম তালুকদারকে (৩৮) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নাজমা আক্তার ওরফে নাজমুল (১৫) উপজেলার খোন্তাকাটা গ্রামের মৃত আ. খালেকের মেয়ে।

হাসপাতালের বেডে শুয়ে নাজমা জানান, চার বছর বয়সে তার বাবা মারা যান। মা মরিয়ম বেগম বছর পাঁচেক আগে অন্যাত্র বিয়ে করে তাকে ছেড়ে চলে যান। সব হারিয়ে নাজমার আশ্রয় হয় বৃদ্ধ দাদীর কাছে।

এরপর গত এক বছর ধরে জীবিকার তাগিদে তিনি বেছে নেন রিকশা-ভ্যান চালানোর সংগ্রাম। এ কারণে মানুষরূপী পশুদের হাত থেকে বাঁচতে নাজমা পুরুষের ছদ্মবেশ ধারণ করে। নিজের নাম রাখেন নাজমুল। কিন্তু এরপরও তিনি নিজেকে রক্ষা করতে পারেননি। উপজেলা সদর রায়েন্দা বাজারের হার্ডওয়ার ব্যবসায়ী রফিকুলের লালসার শিকার হন নাজমা। আবশেষে তিনি অন্তঃসত্তা হয়ে পড়ে। একথা বহুবার বলা হলেও রফিকুল তাকে গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানান। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রসব বেদনা নিয়ে হাসপাতালে ছুটে আসেন নাজমা। রাত ১টায় ফুঁটফুঁটে একটি কন্যা সন্তান প্রসব করেন তিনি।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. অসীম কুমার সমাদ্দার জানান, নাজমা ও তার মেয়ে সুস্থ আছে। পুরুষ ছেলের সন্তান হয়েছে এমন খবর ছড়িয়ে পড়ায় সকাল থেকে শত শত মানুষ হাসপাতালে ভিড় করছে। এখন ভিড় সামলাতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে।

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রেজাউল করিম জানান, নাজমার স্বীকারোক্তিমতে ওই রাতেই থানায় একটি ধর্ষণ মামলা হয়েছে। মামলার আসামী রফিকুলকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। (নয়া দিগন্ত)

Share