Home / কৃষি ও গবাদি / রাত ১২ টা থেকে কমছে জ্বালানি তেলের দাম
Oil

রাত ১২ টা থেকে কমছে জ্বালানি তেলের দাম

সকল প্রকার জ্বালানি তেলের দাম কমছে। রোববার (২৪ এপ্রিল) রাত ১২টার পর থেকেই কার্যকর হয়েছে নতুন মূল্য। এর রোববার বিকেলে এ ব্যাপারে গ্যাজেট প্রকাশ করেছে বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়।

অকটেন ও পেট্রোল লিটারে দশ টাকা এবং কেরোসিন ও ডিজেল লিটারে তিন টাকা কমানো হয়েছে। রোবার রাত ১২টার পর থেকে নতুন দাম কার্যকর হয়েছে।

এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, রোববার রাত ১২টার পর নতুন এই দাম কার্যকর হবে।
নতুন দাম কার্যকর হওয়ায় এখন থেকে অকটেন পাওয়া যাবে ৮৯ টাকা, আগের মূল্য ছিলো ৯৯ টাকা। পেট্রোল পাওয়া যাবে ৮৬ টাকা, আগের মূল্য ছিলো ৯৬ টাকা এবং ডিজেল ও কেরোসিন পাওয়া যাবে ৬৫ টাকায়, আগের মূল্য ছিলো ৬৮ টাকা।

এদিকে চাঁদপুরের ডিপোগুলোতে স্বাভাবিক নিয়মে তেল সরবরাহ আছে। খুচরা পর্যায়ের যারা তেল মজুদ করেছেন তারা কিছুটা বিপাকে পড়বেন বলে দাবি করছেন একাধিক খুচরা জ্বালানি তেল ব্যবসায়ী।

তবে এদের অকেরই নেই তেল বিক্রির অনুমোদন। তারপরেও ডিপো থেকে অবৈধভাবে তেল সংগ্রহ করে খুচরা বাজারে বিক্রি করে থাকেন।
এছাড়া অধিকাংশ খুচরা ব্যাবসায়ীদের বিরুদ্ধে তেল মিশ্রণের অভিযোগ রয়েছে। কেরোসিনের কালার পরিবর্তন হওয়াল এখন সাধারণত তার সাথে মিশ্রণ কম হয়। কিন্তু ডিজেল এবং পেট্রোল এখনো অনেক খুচরা ব্যবসায়ী মিশ্রণ করে বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে ক্রেতাদের।
চাঁদপুর জেলা ও থানা শহরে খুচরা ব্যবসায়ীদের তেল বিক্রি করতে তেমন দেখা না গেলেও, গ্রামের বাজার, রাস্তার পাশের দোকানগুলিতে বিক্রি হয় জ্বালানি তেল।

চাঁদপুর-ফরিদগঞ্জ-রায়পুর সড়ক, চাঁদপুর-কুমিল্লা মহাসড়ক, চাঁদপুর-চান্দ্রা-মুন্সিরহাট রোডের দু’পাশে রয়েছে অসংখ্য খুচরা জ্বালানি তেল বিক্রির খোলা দোকান।

এসব দোকানগুলিতে কিছু অসাধু গাড়ি চালক ও হেলপারের যোগসাজশে গাড়ী থেকে তেল চুরি করে বিক্রি করে। এর জন্যে গাড়ির মালিকদের বছর শেষে মোটা অংকের লোকসান গুনতে হয়।

এদিকে পাম্প মালিকদের দাবি, পর্যবেক্ষণ ও তদারকি না থাকায় কনডেনসেট থেকে উৎপাদিত পেট্রল, ডিজেল, কেরোসিন বিভিন্ন হাত ঘুরে খোলা বাজারে গিয়ে বিক্রি হচ্ছে। রিফাইন করা ছাড়া জ্বালানি তেল কমমূল্যে ক্রয় করে বিভিন্ন ধরনের বোতলে সুসঞ্জিতভাবে বিক্রি হচ্ছে। কোনো কোনো স্থানে সরকার অনুমোদিত পেট্রল পাম্পের পাশেই কমমূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে। ফলে পেট্রল পাম্প ব্যবসায়ীরা চরম আর্থিক ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। তদারকি অথবা পর্যবক্ষেণ ছাড়া এ অবস্থা চলতে থাকলে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত মূল্যে জ্বালানি তেল বিক্রি করা সম্ভব হবে না।
গত মাসে তেল ব্যাবসায়ীরা সরকারের নিকট ৭ দফা দাবি জানিয়েছেন। দাবির মধ্যে রয়েছে, অবিলম্বে বেসরকারি রিফাইনারি থেকে খোলা বাজারে জ্বালানি তেল বিক্রি বন্ধ এবং পেট্রল পাম্প মালিকদের সরাসরি রিফাইনারি থেকে তেল ক্রয়ের অনুমতি, বিস্ফোরক লাইসেন্স ছাড়া পেট্রল পাম্পে অন্য কোনো অপ্রয়োজনীয় লাইসেন্স প্রদান বন্ধ, পেট্রল পাম্পের প্রবেশ দ্বারে কোনো প্রকার টোল নেয়া যাবে না। পেট্রল পাম্পের ভেতরে সাধারণ জনগণের সমাগম হয়, এমন কোনো প্রতিষ্ঠান করার জন্য নির্দেশনা প্রদান থেকে বিরত থাকা, নতুন কোনো পেট্রল পাম্প স্থাপনের ক্ষেত্রে সমিতির সঙ্গে আলোচনা করা, মালিক সমিতির সদস্য হওয়া ছাড়া কোনো পেট্রল পাম্পে জ্বালানি তেল সরবরহ করা যাবে না। পুরাতন এবং ব্যবহার অযোগ্য এলপিজি সিলিন্ডার সরবরাহ বন্ধ ও নতুন সিলিন্ডার সরবরাহ করতে হবে।

আন্তর্জাতিক বাজারের বর্তমান দাম (অপরিশোধিত প্রতি ব্যারেল বা ১৫৯ লিটার) অনুযায়ী প্রতি লিটার ফার্নেস অয়েল বিপিসি কিনছে ৩০ টাকায়, অকটেন ৫৫ টাকায় ও পেট্রল ৫০ টাকায়। ডিজেল আর কেরোসিন কিনছে ৩৮ টাকায়। কিন্তু দেশের বাজারে বিপিসি বিক্রি করছে বর্তমানে প্রতি লিটার অকটেন ৯৯, পেট্রোল ৯৬, কেরোসিন ও ডিজেল ৬৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কম দামে কিনে দেশে বেশি দামে বিক্রি করায় গত অর্থবছরে (২০১৪-১৫) বিপিসি ৫ হাজার কোটি টাকা লাভ করেছে। আর চলতি অর্থবছরে (২০১৫-১৬) ৭ হাজার কোটি টাকা লাভের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এরমধ্যেই অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে মুনাফা হয়েছে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা।
দেশে জ্বালানি তেলের চাহিদা প্রায় ৫৫ লাখ মেট্রিক টন। যার প্রায় পুরোটাই আমদানি করা হয়। এ তেল সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় পরিবহন খাতে, ৪৫ শতাংশ। এছাড়া বিদ্যুৎ খাতে ২৫ শতাংশ, কৃষি খাতে ১৯ শতাংশ, শিল্প খাতে ৪ শতাংশ এবং গৃহস্থালী ও অন্যান্য খাতে ৭ শতাংশ।
আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধির কারণে সর্বশেষ ২০১৩ সালের ৪ জানুয়ারি বাংলাদেশে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়। তখন পেট্রোল-অকটেন লিটার প্রতি ৫ টাকা এবং ডিজেল কেরোসিনের দাম ৭ টাকা করে বাড়ানো হয়েছিল।

ডেস্ক রিপোর্ট :
প্রথম আপডেট ৩:৫০ পিএম, ২য় আপডেট ১১:১৭ পিএম
২৪ এপ্রিল ২০১৬, রোববার, ডিএইচ