Home / সারাদেশ / রহিমপুর অযাচক আশ্রমের যুগল ব্রহ্মচারীর অবৈধ কপিরাইট সনদ বাতিল
অযাচক

রহিমপুর অযাচক আশ্রমের যুগল ব্রহ্মচারীর অবৈধ কপিরাইট সনদ বাতিল

স্বামী স্বরূপানন্দ’র লেখা গ্রন্থাবলী প্রকাশের ক্ষেত্রে রহিমপুর অযাচক আশ্রমের ডা. যুগল ব্রহ্মচারীর (মানবেন্দ্র নাথ সরকার) অবৈধ কপিরাইট সনদ বাতিল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ কপিরাইট কর্তৃপক্ষ কর্তৃক।

‘বাংলাদেশ সম্মিলিত অখণ্ড সংগঠনের’ অঙ্গ সংগঠন ‘ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ আঞ্চলিক সম্মিলিত অখণ্ড সংগঠন’-এর সাধারণ সম্পাদক রত্ন বিজয় সাহার আবেদন ও অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ৬ নভেম্বর তার এ সনদ বাতিল করা হয়।

কপিরাইট কর্তৃপক্ষ জানায় যে, ‘রহিমপুর অযাচক আশ্রমের’ ডা. যুগল ব্রহ্মচারী ওরফে মানবেন্দ্রনাথ সরকার মিথ্যার আশ্রয় গ্রহণ করে ‘বিশ্ব অখণ্ড সংঘের’ কেন্দ্রের অনুমতি ব্যতিরেকে অবৈধ প্রকাশক সেজে অখণ্ডমণ্ডলেশ্বর শ্রী শ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের নিজ হস্তে লিখিত শতাধিক স্বরূপানন্দ গ্রন্থাবলি ‘শ্রীশ্রী সমবেত উপাসনার’ ক্যাসেট, বিভিন্ন ধরনের স্বরূপানন্দ সংগীত, ছবি ইত্যাদি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কপিরাইট আইন লঙ্ঘন করে অত্যন্ত সু-কৌশলে যে সনদ নিয়েছিলেন, তা বাতিল ও অবৈধ ঘোষণা করেছে।

এ ব্যাপারে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায় যে, জনাব রত্ন বিজয় সাহা গত ২৭/১১/২০২২ তারিখে (ডায়রি নম্বর ৭৪৪ ও ৭৪৫) এবং ১৮/১২/২০২২ তারিখে (ডায়েরি নম্বর ৭৯৭) বাংললাদেশ কপিরাইট কতৃপক্ষের কাছে দরখাস্ত করেন। 

দাখিলকৃত দরখাস্তের ভিত্তিতে ‘পথের সন্ধান’ ও ‘অখণ্ড সংহিতা’ শিরোনামের সাহিত্যকর্ম দুটির কপিরাইটের প্রকৃত স্বত্বাধিকারী নির্ধারণের উদ্দেশ্যে গত ৪ এপ্রিল রত্ন বিজয় সাহা ও ডাঃ যুগল ব্রহ্মচারীর প্রতিনিধি কৃষ্ণ চন্দ্র রায়ের শুনানি গ্রহণ করা হয়। পরবর্তীতে ডাঃ যুগল ব্রহ্মচারীর প্রতিনিধি কর্তৃক দাখিলকৃত দরখাস্তের ভিত্তিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত  রেজিস্ট্রার ডাঃ যুগল ব্রহ্মচারীকে তার মতামত ব্যক্ত করার সুযোগ দেন। এরপর ২৬ জুলাই রত্ন বিজয় সাহা এবং ২৭ জুলাই যুগল ব্রহ্মচারী লিখিত বক্তব্য দাখিল করেন।

অভিযোগকারী কর্তৃক দাখিলকৃত বইয়ের সাথে যুগল ব্রহ্মচারী কর্তৃক বাংলাদেশ কপিরাইট অফিস থেকে রেজিস্ট্রেশনকৃত দুইটি বইয়ের হুবহু মিল পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্ট বই দুইটির রচয়িতা শ্রী শ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংস দেব। যিনি গত ১৯৮৪ সালের ২১ এপ্রিল পরলোক গমন করেন।

অভিযোগকারী কর্তৃক দাখিলকৃত ভারত সরকারের কপিরাইট অফিসের নিবন্ধন বহির উদ্ধৃতি অনুসারে, ‘পথের সন্ধান’ শিরোনামের বইটি ১৯৬১ সালে অযাচক আশ্রম, বারাণসী কর্তৃক প্রথম প্রকাশিত হয়। বইটির কপিরাইট রেজিস্ট্রেশন নম্বর খ-৬৮৩২৪/২০১৭ এবং কপিরাইটের স্বত্বাধিকারী অযাচক আশ্রম, কলকাতা। অপর বই ‘অখণ্ড সংহিতা’ ১৯৪৩ সালে অযাচক আশ্রম, বারাণসী কর্তৃক প্রথম প্রকাশিত হয়। বইটির কপিরাইট রেজিস্ট্রেশন নম্বর খ-৬৮৩১৫/২০১৭ এবং কপিরাইটের স্বত্বাধিকারী অযাচক আশ্রম, কলকাতা।

অন্যদিকে বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসে সংরক্ষিত নিবন্ধিত কর্ম নং- ৯১১১ কপার এবং নিবন্ধিত কর্ম নং- ৯১১২ কপার নথি অনুসারে, জনাব যুগল ব্রহ্মচারী তার আবেদনে ‘পথের সন্ধান’ শিরোনামের বইটির প্রথম প্রকাশনার বছর ২০০২ (৫ই ভাদ্র ১৪০৯) এবং প্রকাশক অযাচক আশ্রম, রহিমপুর উল্লেখ করেছেন। অপর বই “অখণ্ড সংহিতা” এর প্রথম প্রকাশনার বছর ২০০১ (১লা বৈশাখ ১৪০৮) এবং প্রকাশক অযাচক আশ্রম, রহিমপুর উল্লেখ করেছেন।

উভয় পক্ষের দেওয়া তথ্য থেকে প্রতীয়মান হয় যে, বই দুইটির প্রথম প্রকাশনার সময় রচয়িতা শ্রী শ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংস দেব জীবিত ও ভারতের নাগরিক ছিলেন। তিনি তার রচিত বই দুইটি অযাচক আশ্রম, বারাণসী থেকে প্রথম প্রকাশ করেন। পরবর্তীতে ২০০৫ সালে জনাব যুগল ব্রহ্মচারী বই দুইটির প্রথম প্রকাশনা সংক্রান্ত তথ্য গোপন করে এবং অসত্য তথ্য উপস্থাপনপূর্বক কপিরাইট রেজিস্ট্রেশনের জন্য বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসে আবেদন করেন। অর্থাৎ জনাব যুগল ব্রহ্মচারী অসত্য তথ্যের ভিত্তিতে বাংলাদেশ কপিরাইট অফিস থেকে বই দুইটির কপিরাইট রেজিস্ট্রেশন করেন। জনাব যুগল ব্রহ্মচারী কর্তৃক উপস্থাপিত অসত্য তথ্যের ভিত্তিতে বাংলাদেশ কপিরাইট অফিস থেকে বই দুইটির কপিরাইট রেজিস্ট্রেশন সনদ প্রদান করা হয়েছে বিধায় সনদ দুইটি বাতিল করা হয়েছে। 

প্রতিবেদক: আশিক বিন রহিম,৮ নভেম্বর ২০২৩