মৌসুমের সুস্বাদু ও রসালো ফল লিচতে সয়লাব চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর বাজার। উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ছেংগারচর বাজারে সুস্বাদু ও দেশব্যাপী খ্যাত দিনাজপুরের লিচুর জমজমাট বাজার জমে উঠেছে। আর বাজার বসার সঙ্গে সঙ্গেই ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাঁকডাকে সরগরম হয়ে উঠেছে উপজেলার ছেংগারচর বাজারসহ বিভিন্ন হাট-বাজার। রসালো ও সুস্বাদু এই লিচু আকৃষ্ট করেছে ভোক্তাদের। তবে এ বছর লিচুর দাম নিয়ে কৃষক-ব্যবসায়ীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। প্রতি পিস লিচু বিক্রি হচ্ছে তিন থেকে চার টাকা। শ’ হিসেবে বাজারে একশ’ লিচুর মূল্য তিন থেকে চারশত টাকা। দাম একটু বেশি হলেও ক্রেতারা ম্যেসুমি ফল হিসেবে কিনতে ভীড় করছেন লিচুর দোকানগুলোতে।
জ্যৈষ্ঠ মাসের মধু ফল হিসেবে পরিচিত দিনাজপুরের লিচু দেশব্যাপী খ্যাত। অনেকে এই দিনাজপুর জেলাকে লিচুর রাজ্য হিসেবে অভিহিত করে। আর এ জেলার লিচুর মধ্যে চায়না থ্রি, বেদেনা, বোম্বাই, মাদ্রাজি, কাঁঠালি উল্লেখযোগ্য।
সপ্তাহখানেক ধরে ছেংগারচর বাজারে দিনাজপুরের বোম্বাই, ও বেদানা জাতের লিচু উঠতে শুরু করেছে। বাজারে লাল রঙেরর থোকা থোকা লিচু নজর কাড়ছে সবার। দিনাজপুরের রসালো এ লিচুর খ্যাতি রয়েছে সারা দেশজুড়েই।
তবে সুমিষ্ট স্বাদের বোম্বাই, চায়না থ্র্রি, কাঁঠালি ও হাড়িয়া জাতের লিচু কিছু কিছু আসতে শুরু করলেও পুরোদমে এখনো তেমন বাজারে আসতে শুরু করেনি। তবে ইতিমধ্যে উপজেলার সবচেয়ে পুরনো ঐতিহ্যবাহী ছেংগারচর বাজারে জমে উঠেছে লিচু বেচা-কেনা। ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাঁকডাকে সরগরম হয়ে উঠেছে বাজারের ফলপট্রি ও বিভিন্ন অলি-গলি।
আজ রোববার (২৬ মে) এই বাজার ঘুরে আমাদের প্রতিবেদক লিচুর জমজমাট কেনা-বেচা সচিত্র প্রতিতবেদন তৈরি করেন। আমদানিও বেশ ভালো। তবে অন্যান্য পণ্যের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এবার দামও বেশ চড়া। খুচরা বাজারে প্রতি একশ’ বোম্বাই লিচু ৩০০ থেকে ৩৩০ ও ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা কিনা তাদের প্রতি শতে ২৮০, ৩০০ টাকা ও ৩২০ টাকায়া। ছেংগারচর বাজারে ১৫ থেকে ২০টি দোকানে বিক্রি করা হচ্ছে এসব রসালো লিচু।
ছেংগারচর বাজারের লিছু বিক্রেতা মোস্তফা কামাল এর কর্মচারী ইকবাল জানান, প্রতি বছল লিচু মৌসুমে এ লিচুর ব্যবসা করি। এ মৌসুমটাতে বাজারে লিছুর প্রচুর চাহিদা থাকে। সবসয় ভালোনার লিচু বিকি করার চেষ্টা করি। এ বছর লিছুর মান অনেক ভালো।এতে করে অনেক লিচু বিক্রি করতে পারি। দাম একটু বেশি মনে হলেও ক্রেতারা সাধ্যের মধ্যে লিচু লিচু কিনছেন। বেচাবিক্রিও ভালো। যারফলে লিচুর মৌসুমে মোটামুটি ভালোই আয় হয়।
পৌর বাজারের থানা রোড ফলপট্টির আরেক লিচু ব্যবসায়ী কবির হোসেন ও ফারুক হোসেন জানান, অন্য বছরের চেয়ে এবার বেশি দামে লিচু কিনতে হচ্ছে। এজন্য ক্রেতাদের কাছেও একটু বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
উপজেলার আদুরভিটি এলাকা থেকে আসা লিচু ব্যবসায়ী মোঃ মোস্তফা জানান, এবার রংপুর, নওগাঁ, দিনাজপুর,পাবনা, নাটোরেও লিচু আবাদ হয়েছে। যার ফলে এবার দাম কিছুটা কম। তবে তিনি জানান, সব জায়গার চেয়ে দিনাজপুরের লিচুর চাহিদা অনেক বেশি। তিনি সামান্য ব্যবসা হলেই অল্প ব্যবসায়ায় বিক্র করছেন মৌসুমী রসালো লিচু।
বাজারে লিচু কিনতে আসা বিমল চন্দ্র দাস ও শহিদুল ইসলাম খোকন নামে দুই ক্রেতা জানান, গতবছরের তুলনায় এবার লিচুর দাম একটু বেশি। তবু মৌসুমি ফল হিসেবে নিজের সাধ্যের মধ্যে একশ’ লিচু ৩০০ টাকায় কিনেছেন। বাজারের লিচুগুলো অনেক মিষ্টি ও রসালো। এজন্য দাম কিছুটা বেশি হলে পরিবারের জন্য কিনে নিয়ে যাচ্ছি।
কৃষকরা বলছেন, গত বছরের তুলনায় এবারে লিচুর দাম অনেক কম। আর ব্যবসায়ী কিংবা আড়তদাররা বলছেন, লিচুর আকার ও গুণগত দিক দিয়ে এবারে লিচুর দাম বেশি। তবে কৃষিবিদদের মতে, প্রচন্ড খরার কারণে এবারে লিচু ছোট হওয়ায় দাম কম, তাছাড়া এবারের লিচুতে মোটাতাজাকরণ ওষুধ তেমনটি ব্যবহার হয়নি বলে দাবি করেন তাদের।
নিজস্ব প্রতিবেদক, ২৬ মে ২০২৪