যৌন হয়রানির অভিযোগে প্রথম এক মাস এবং পরবর্তীতে আরো ৫ মাস সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন খাজুরিয়া ওল্ড স্কীম দাখিল মাদ্রাসা সুপার। মাদ্রাসা ব্যবস্থাপনা কমিটি এ ঘটনার বিষয়ে সর্বশেষ ১১ নভেম্বর শনিবার অনুষ্ঠিত সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তৃতীয় বারের মতো নোটিশ দিয়েছেন অভিযুক্ত সুপার মাওলানা আবুল বাশারকে।
জানা যায়, খাজুরিয়া ওল্ড স্কীম দাখিল মাদ্রাসার সুপার মো: আবুল বাসার গত ১৭ সেপ্টেম্বর ওই মাদ্রাসার এক একটি শ্রেণির কোরআন শিক্ষার ক্লাস নেয়ার সময়ে জনৈক ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করেন বলে ওই ছাত্রীর অভিভাবক উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের নির্দেশে মাদ্রাসা সুপারকে গত ২১ সেপ্টেম্বর মাদ্রাসার ব্যববস্থপনা কমিটি প্রথমে এক মাস এবং পরবর্তীতে আারো ৫মাস সাময়িক বরখাস্ত করেন।
ওই ঘটনার বহিস্কৃত মাদ্রাসার সুপার আবুল বাশার উপজেলা নিবার্হী অফিসারের কাছে পূর্ন তদন্তের জন্য আবেদ করেন। এরপর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মশিউর রহমানকে প্রধান করে গঠিত তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটিকে তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দায়িত্ব প্রদান করেন। কমিটি গত ২৬ অক্টোবর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা বরাবর তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন।
সূত্র মতে, তদন্ত প্রতিবেদনে ওই মাদ্রাসা সুপার ছাত্রীর সাথে যেই আচরণ করেছেন তা যৌন হয়রানির পর্যায়ে পড়ে না বলে বলা হয়। তবে ওই মাদ্রাসা সুপার কোন ছাত্রীকে হাত দিয়ে প্রহার বা স্পর্শ কাতর স্থানে আঘাত করতে পারেন না এবং বিষয়টি উভয় পক্ষের মধ্যে সমাধান হয়ে গেছে তার কপিও জমা দিয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
এদিকে মাদ্রাসার সুপার (সাময়িক বরখাস্ত হওয়া) আবুল বাসার গত ৯ নভেম্বর মাদ্রাসার কমিটির বরাবর প্রেরিত চিঠিতে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করার বিষয়টি মহামান্য হাইকোর্টের রায়ের আলোকে হয়নি বলে দাবী করে বলেন, তারপরও মাদ্রাসার প্রধান হিসেবে ওই ঘটনার জন্য দু:খ প্রকাশ করছি। ওই আবেদনে তিনি তার বিরুদ্ধে গঠিত কমিটিও ‘যৌন হয়রানির কোন ঘটনা ঘটেনি বলে’ রিপোর্ট দিয়েছেন বলে দাবী করেন।
এব্যাপারে মাদ্রাসার সাময়িক বরখান্তকৃত সুপার আবুল বাসার মিয়াজী নিজেকে নির্দোষ দাবী করে বলেন, সেদিন যা ঘটেছে, তার জন্য আমি দু:খ প্রকাশ করেছি। ছাত্রীকে প্রহার করা আমার উচিত হয়নি।
ঘটনার তদন্ত কমিটির প্রধান ও উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মশিউর রহমান জানান, তদন্ত কমিটি তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব অনুযায়ী সকলের সাথে কথা বলে রিপোর্ট প্রদান করেছি। তবে তিনি অবশ্যই কোন ছাত্রীকে হাত দিয়ে প্রহার করতে পারেন না। সকক বিষয়ে রির্পোটে বিস্তারিত রয়েছে।
মাদ্রসার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান বুলবুল আহমেদ জানান, মাদ্রাসার ছাত্রীকে যৌন হয়রানীর অভিযোগে উপজেলা মাধ্যমিকি শিক্ষা অফিসারের নির্দেশে প্রথমে ১ মাসের জন্য ও পরবর্তিতে ৫ মাসের জন্য বহিস্কার এবং পরবর্তি অভিযুক্ত সুপারের আবেদনের প্রেক্ষিতে দ্বিতীয় তদন্দ কমিটিও সুপারকে দোষি করে করেন। তারই প্রেক্ষিতে ১১ নভেম্বর শনিবার মাদ্রাসা কমিটির সভা হয়েছে। সেখানে সুপারের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এছাড়া মাদ্রাসা সুপারকে কেন স্থায়ী ভাবে বরখাস্থ করা হবে না এ বিষয়ে আগামী ৭ কর্ম দিবসের মধ্য জবাব দেওয়ার জন্য তৃতীয় বারের মতো চিঠি প্রদান করা হয়েছে।
প্রতিবেদক: শিমুল হাছান, ১২ নভেম্বর ২০২৩
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur